যশোরে বিচার বহির্ভূত হত্যার ঘটনায় জেলার সাবেক পুলিশ সুপার ও বর্তমান রাজশাহী বিভাগের ডিআইজি আনিসুর রহমানসহ ৮ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
রোববার (১৮ আগস্ট) যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জয়পুর গ্রামের নিহত আবু সাঈদের স্ত্রী পারভীন খাতুন বাদী হয়ে আদালতে এ মামলা করেন।
বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহমেদ অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজিকে আদেশ দিয়েছেন।
বাদীর আইনজীবী শহীদ ইকবাল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- যশোরের মণিরামপুর থানার তৎকালীন ওসি মোল্যা খবির আহমেদ, এসআই তাসমীম আহমেদ, এসআই শাহীন, দুর্গাপুর গ্রামের মৃত দুর্গাপদ সিংহের ছেলে সুব্রত সিংহ, জিনার আলীর ছেলে মতিউর রহমান, জয়পুর গ্রামের মৃত নওশের আলী মেম্বারের ছেলে মোন্তাজ আলী, খোর্দগাংড়া গ্রামের মৃতা আব্দুল মান্নানের ছেলে ফিরোজ আহমেদ।
মামলার বাদী অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর উপজেলার জয়পুর বাজারের পল্লী চিকিৎসক বজলুর রহমানের দোকান থেকে আবু সাঈদকে আটক করে পুলিশ। এরপর পুলিশ তাকে মারধর করে গাড়িতে করে থানায় নিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন খোঁজ নিতে থানায় গেলে জানানো হয়, পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাকে আটক করা হয়েছে। এরপর তাকে একটি পেন্ডিং মামলায় আটক দেখানো হয় এবং ওসি আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ আলীর সাথে যোগাযোগ করতে বলে। মমতাজ আলী তখন মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে রাজি না হলে তিনি জানান, আবু সাঈদ বিএনপি করেন এবং তিনি ক্রসফায়ারের এক নম্বর লিস্টে আছেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ওইদিন রাতে আবু সাঈদকে থানার ভেতরে মারধর করা হয়। এরপর গভীর রাতে তাকে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বেগারিতলা নামকস্থানে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে পরিবারকে তার মৃত্যুর বিষয়টি জানানো হয়। এরপর আসামিদের যোগসাজশে আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত করে মৃতদেহ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
অভিযোগে মামলার বাদী দাবি করেছেন, পুলিশ হেফাজতে আবু সাইদের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করতে গেলে মামলা না নিয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে পরিবেশ অনুকূলে আসায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে তিনি আদালতে এই মামলার দায়ের করেছেন।
প্রসঙ্গত, আনিসুর রহমান ২০১৪ সালের ২৪ মার্চ থেকে ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট পর্যন্ত যশোর জেলার পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব পালন করেন।