কোনও দিন শিবের মাথায় জল ঢালেননি, উপোস করা দূরের কথা। অভিনয়ের খাতিরে ছোট পর্দার জন্য শিবরাত্রি পালন করলেন হিয়া মুখোপাধ্যায়। স্টার জলসায় ‘গীতা এলএলবি’ রূপে তাঁর দাপট দেখার মতো। প্রতি সপ্তাহের রেটিং চার্টে হিয়া প্রথম পাঁচের মধ্যে থাকবেনই। ধারাবাহিকে তিনি আইনজীবী। উদ্যাপন উপলক্ষে ছোট পর্দায় বিশেষ পর্বের আয়োজন। সদ্য টালিগঞ্জের করুণাময়ী কালীমন্দিরে দৃশ্যের শুটিং হল। ক্যামেরাবন্দি হল, মন্দিরে গিয়ে স্বামীর মঙ্গলকামনায় ‘গীতা’র পুজো দেওয়া।
সাধারণত মেয়েরা একটু বড় হলেই শিবরাত্রি পালন করে। হিয়ার কোনও দিন মনে হয়নি, তিনিও এ ভাবে উদ্যাপন করবেন? প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। হিয়ার কথায়, “অবশ্যই ঈশ্বরে বিশ্বাস রয়েছে। তবে আড়ম্বর, উদ্যাপনে বিশ্বাসী নই। ফলে, কোনও দিন উপোস করিনি। শিবের মাথায় গিয়ে চল ঢালিনি।” কিন্তু কপালফেরে ধারাবাহিকের কারণে তিনি শুটিংয়ের দিন নিরামিষ খেয়েছেন! “পর্দার খাতিরে এ বছর আমার প্রথম শিবরাত্রি পালন। পাঁচ বার শিবের মাথায় জল ঢেলেছি। বাকিরা মজা করে বলেছেন, ‘এ বার শিবের ঠান্ডা লেগে না যায়!’ আমার জবাব, শিবরাত্রিতে সারা দিনরাত মহাদেবের মাথায় ভক্তরা জল ঢালবেন। তাতে যদি ঠান্ডা না লাগে, তা হলে এ দিনও কিছু হবে না। তার পরেই শুটিংয়ে মারামারিও করলাম— পর্দায় আমার যা করণীয়”, হাসতে হাসতে বললেন তিনি।
সব ঈশ্বরের মূর্তিপুজো হয়। কেবল শিবের লিঙ্গপুজো!… কথা তুলতেই হিয়া বললেন, “আমি অনেক দিন পর্যন্ত জানতাম, এটাই মূর্তি। ঈশ্বরের বিশেষ কোনও অবয়ব।” প্রকৃত সত্য জানার পর? এ বার হাসিতে ভেঙে পড়ে তাঁর জবাব, “প্রকৃত সত্যি জানার পরেও ঈশ্বরকেই মেনেছি।”
পুরাণ মতে, শিব ত্যাগের প্রতীক। পার্থিব চাহিদা, ভোগবিলাস থেকে দূরে শ্মশানে তাঁর বাস। চিতাভস্ম, সাপ তাঁর আভূষণ। আত্মভোলা। এমন পুরুষ একুশ শতকে কতটা মানানসই? তিনি কি পারবেন জটিল জীবনযুদ্ধে জিততে?
এ প্রসঙ্গে হিয়ার সম্পূর্ণ ভিন্ন মত। তাঁর কথায়, “শিবের মতো বর পাওয়ার জন্য শিবরাত্রি— এই ধারণা বোধহয় ঠিক নয়। সকলের মঙ্গল চেয়েই কিন্তু এই উদ্যাপন করা যায়।” স্বীকার করেছেন, এখনকার দিনে কোনও পুরুষ শিবের মতো হলে তিনি হয়তো টিকে থাকার লড়াইয়ে পিছিয়ে যেতেও পারেন। কিন্তু ওই ধরনের পুরুষের আকর্ষণও যে অমোঘ, সে কথাও জানাতে ভোলেননি হিয়া। তাঁর দাবি, “মহাদেবের চারিত্রিক গুণাবলির এক শতাংশও যদি এখনকার কোনও পুরুষের মধ্যে থাকে তা হলে ভাল কিছু ঘটবে।” আনন্দবাজার