রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫
Logo
Shamsur Rahman Kandu
১৯৭১

ভাগ্যক্রমে বেচেঁ যাওয়া শামসুর রহমান কান্দু

Bijoy Bangla

ওয়ালিউর রহমান বাবু

প্রকাশের সময়: ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৩:১৪পিএম

ভাগ্যক্রমে বেচেঁ যাওয়া শামসুর রহমান কান্দু
১৯৭১ ভাগ্যক্রমে বেচেঁ যাওয়া শামসুর রহমান কান্দু।

রাজশাহী মহানগরীর কাজলা কেডি মোড়ের  শামসুর রহমান কান্দু তখন সামর্থ্যবান  শক্তিমান পুরষ। ছিলেন রাজশাহীর তৎকালীন পৌরসভার ওয়ার্ড কমিশনার।সবার মত এই সমাজ কর্মী বাংলদেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন এটাই হয়ে ছিল তার জন্য কাল । রাজনৈতিক সংগঠন  ন্যাপের   সাথে যুক্ত ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের মাঝা মাঝি আগষ্ট মাসের শেষ দিকে খুব ভোরে পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের সমর্থকদের ইন্দনে তার বাড়ি ঘেরাও করে পরিচিত একজন কে দিয়ে তাকে ডাকে । অভিযোগ দিয়ে বলে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছেন। তিনি অস্বীকার করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে তার  স্ত্রী রাহাত আরা রহমান কাজল ব্যাপারটি অস্বীকার করে বলেন বাড়ির ভিতর সার্চ করতে । পাকিস্তানি সৈন্যরা পুরো বাড়ি ঘেরাও রেখে র্সাচ করে কিছু না  পেয়ে     তাকে  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হলে ধরে দিয়ে গিয়ে তার মুখ ও শরীরের উপর বুট জুতো দিয়ে নির্যাতন করে ।  তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে মাথা নিচে পা উপরে করে ঝুলিয়ে দিলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান।একদিন পর তার জ্ঞান ফিরে আসে ।

বন্দি অবস্থায় তাকে তেমন খাবার দেয়া হয়নি। পানি চাইলে বাতরুমের  বদনায় পানি দেয় । হয়ে পড়েন চরম অসুস্থ।  কৌশলে তাকে সেবা দেবার জন্য তার পরিচিত হাসু নামে একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রীর কাজ নিয়ে হোমিওপ্যাথি ডাক্তার মজির উদ্দিনের দেয়া ঔষধ পৌছে  দিতে থাকেন। শামসুর  রহমান কান্দুর স্ত্রী তাকে মুক্ত করতে বহুজনের কাছে গিয়ে ব্যার্থ হন । শান্তি কমিটির চেয়ার ম্যান আয়েন উদ্দিনও এড়িয়ে যায়। শামসুর  রহমান কান্দুর স্ত্রী রাহাত আরা রহমান কাজল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপার্চায ড. বারীর সাথে দেখা করলে তিনি তার মুক্তি ও জীবন রক্ষায় চেষ্ঠার আশ্বাস দিয়ে তার কাজে ঢাকায় গিয়ে সেনাবাহিনির উচ্চ মহলে বিষয়টি জানালে তাদের নিদের্শে জোহা হল বন্দি শালার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা তাকে গোস্ত রুটি খাইয়ে আপ্যায়ন করে ছেড়ে দেয়। নির্যাতনে পা ভেঙ্গে যাওয়ায় তিনি হাটতে না পারলে অন্যান্যরা তাকে ঘাড়ে করে কাজলা মোড়ে এনে আনসার মুহুরির বাড়ির বারান্দায় বসিয়ে দিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে  স্বজন ওঅন্যনরা তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন । বর্তমানে তিনি স্মৃতি শক্তি  হারিয়ে  ফেলেছেন ।এত  বছর পরে ও তার পা ঠিক হয়নি । দড়ি দিয়ে পা বেঁধে সব সময় বিছানায় শুয়ে  থাকতে হয় । তার স্ত্রী রাহাত আরা রহমান কাজল জানান এত বছরেও যাদের দায়িত্ব ছিল তারা কেউ তাদের তেমন খবর নেয়নি। সব কিছু জেনে ও  তারা এড়িয়ে যায় যা খুবই দুঃখ জনক ।তার কথা তারা কোন সাহায্য চান না, সহানুভূতির আশা করেন না । কিন্তু স্বাধীনতার জন্য যে মানুষটি নির্যাতিত হলেন তার সাথে এ আচারণ খবই কষ্টের ।

বিশেষ দিন গুলিতে  কেউ কেউ আসেন নানা কথা বলেন এ ছাড়া তাদের আর করার কি আছে । বার বার একি কথা বলতে তার ভালো লাগেনা । তবে দেশের স্বাধীনতার জন্য তার অবদানে  তিনি ও  তার  পরিবার গর্বিত । যারা দেশের জন্য সত্যিকার ভাবে কাজ করেছের নির্যাতিত হয়েছেন , আজও কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছেন তাদের মূল্যায়ন কবেহবে এ প্রশ্ন তার। তথ্য সূত্রঃ শামসুর রহমান কান্দুর স্ত্রী রাহাত আরা রহমান কাজল।


লেক্ষক উপদেষ্টা, নিরাপদ সড়ক চাই, রাজশাহী জেলা শাখা. সমাজ ও সাস্কৃতিক কর্মি