রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বদ্ধভূমির গনকবর থেকে উঠে আসা রুপচ্ধসঢ়;াঁদ মন্ডলের কথা জানা যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরে। জোহা হলের কর্মচারী তার ছেলে চ্ধসঢ়;াঁদের মাধ্যমে তার দেখা পাওয়া যায়। তার বাড়ি রাজশাহী জেলা সদর থেকে পূর্ব দক্ষিন কোনে শ্রামপুরের নগর পাড়া গ্রামে। মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগে তাকে কাঁটাখালি ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে বন্দি অবস্থায় ডা. মহসিন তাকে সহ অনান্যদের দু:স্কৃতিকারী বলে প্রচার চালায়। কাশেম মোল্লা তাকে মুক্তিযোদ্ধাদের এজেন্ট অভিযোগ দিয়ে ছেড়ে দেবার পর আবার ডেকে
ইউনিয়ন পরিষদের ছাদে নির্যাতন করার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জুবেরী ভবন রেস্ট হাউসে ধরে নিয়ে গিয়ে হেলাল, ইমান ও অনান্যদের সাথে জোহা হলের তিন তলায় বন্দি রেখে নানা কাজ করিয়ে নিতে থাকে। একদিন দড়িদিয়ে বেঁধে রেল লাইনের ধারে নিয়ে গিয়ে গর্ত করানোর পর ব্রাশফায়ার করে তাকে বেয়নেট চার্জ করে গর্তে ফেলে ঝোপজঙ্গল ও মাটি দিয়ে চাপা দেয়। বেশকিছু পর তিনি অনুভব করেন তিনি বেঁচে আছেন। তার চারপাশে রক্ত মৃতদেহ শুনতে পান পাকিস্তানি সৈন্যদের বুট জুতোর শব্দ। সৃষ্টিকর্তার কাছে শক্তি চেয়ে ঝোপ জঙ্গল মাটি সরিয়ে উপরে উঠে কোন রকমে তার গ্রাম হয়ে চলেযান মুক্ত অঞ্চলে। যতদিন বেঁচেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারন করেন। পাননি কোন মূল্যায়ন এতে তার দু:খ ছিল না। দু:খ যে বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছিল সে বাংলাদেশ তিনি পাননি।
তথ্যসূত্র:
বদ্ধভূমি গণকবর থেকে বেঁচে ফেরা রুপচাঁদ মন্ডল। বীর মুক্তিযোদ্ধা নফেল দেওয়ানের সাথে একদিন সকালে দেখা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্মৃতি জাদুঘরে। জাদুঘরের কিউরেটর বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহমেদ খান তার সাথে আলাপ করিয়ে দেন। নফেল দেওয়ান মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজশাহী নিউ ডিগ্রী কলেজে চাকরি করতেন। তার বাড়ি রাজশাহী জেলা সদরের পূর্ব দক্ষিন কনে শ্যামপুর গ্রামে। তিনি ছিলেন গোপনে একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাদের একটি
অ্যাকশনে পাকিস্তানি সৈন্যরা পালিয়ে গিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আয়েন উদ্দিনের শ্যামপুরের বাড়িতে ক্যাম্প করে তাদের খুঁজতে থাকে। একদিন ভোরে পাকিস্তানি সৈন্যদের সমর্থকরা তাকে ধরে রাস্তায় নির্যাতন করে।তারা নারীদের রাস্তার নিচে রেখে নির্যাতন করতে থাকে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে সহ ইদ্রিস আলী, অনিল মোল্লা, আব্দুর রশিদ ও ইসলামকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হলে নিয়ে গেলে পাকিস্তানি সৈন্যরা আনন্দে তাদের ফুটবল বানিয়ে খেলতে থাকলে সবার শরীর রক্তাক্ত হয়ে যায়। পা
উপরে মাথা নিচু করে ঝুলিয়ে মারতে থাকলে নফেল দেওয়ানের নাকদিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। জ্ঞান ফিরে নিজের রক্ত নিজেই পরিস্কার করেন। পাকিস্তানি সৈন্যরা মেঝেতে ভাত ছিটিয়ে তাকে খেতে দেয়। তার খবর পেয়ে নিউ ডিগ্রী কলেজের অবাঙালি শিক্ষক ইউসুফ জাহেদি তার অবাঙালি বন্ধু ক্যাপ্টেন ইলিয়াসকে তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। পাকিস্তানি সৈন্যরা নফেল দেওয়ানের স্ত্রীর ভাই আসকাকেও ধরে এনে মিস্ত্রির কাজ করায়। একদিন এক অবাঙালি সুবেদার নফেল দেওয়ানের সবকিছু লিখে নিয়ে বক সিগারেট দিয়ে বলে “সুভে মে ছোড় দেগা” অবাঙালি শিক্ষক
নফেল দেওয়ানকে কলেজের আইডি কার্ড করে দেন। এই অবাঙালি শিক্ষকের সহযোগিতায় নফেল দেওয়ান রাতে মুক্তিযোদ্ধা দিনে কলেজের কর্মচারী। ইউসুফ জাহেদি পাকিস্তানে চলেগেলেও নফেল দেওয়ান যতদিন বেঁচে ছিলেন তার জন্য সবসময় দোয়া করেছেন, তাকে কখনো ভুলে যাননি। তার প্রশ্ন এটাকি তাদের স্বপ্নেদেখা বাংলাদেশ এরকম তো কথা ছিল না।
তথ্যসূত্র: বীরমুক্তিযোদ্ধা নফেল দেওয়ান
লেখক: তথ্য সংগ্রাহক রাজশাহী