বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে রাজশাহী জেলা সদরে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীদের শরীর থেকে রক্তঝড়ে। ভাষা শহিদদের স্বরণে প্রথম শহিদ মিনার (স্মৃতিস্তম্ভ) তৈরী হয় ২২এর প্রথম প্রহরে রাজশাহী কলেজের হোস্টেলে এর পক্ষে প্রমান ও যুক্তি রয়েছে।
সাংবাদিক আব্দুস সাত্তারের লেখা “রবীন্দ্র বিশ্বে পতিসর” থেকে যানা যায় ১৮৯৭ সালের ১০ জুন নাটোরে কংগ্রেসের সম্মেলনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলায় বক্তব্য দেবার দাবি জানালে রাষ্ট্র নেতাদের কাছে অগ্রাজ্য হয়ে তিনি হন চিহ্নিত। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন অখন্ড ভারত (সারা ভারত) পাকিস্তান আন্দোলন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা রোধে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা আছে। বিভিন্ন সূত্রের তথ্য থেকে জানা যায়, ভারতবর্ষের কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের পরে রাজশাহী কলেজের স্থান ছিল। সে কারণে ভারত বর্ষ ভেঙে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠন হলে বহু শিক্ষার্থী কলকাতা ও ওপারের বিভিন্ন স্থান থেকে চলে এসে এখানে ভর্তি হন। পরবর্তীতে নানা ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখেন। তার একটি ভাষা আন্দোলন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন বা পাকিস্তান আন্দোলনে ভাষা নিয়ে কোন দ্বন্ধ ছিল না। পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠন হবার হবার মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে সরকারপক্ষ বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞা করে দ্বন্ধের সৃষ্টি করে। এর প্রতিবাদে প্রথম সোচ্চার হয় শিক্ষার্থীরা। যদিও পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠন হওয়ার প্রাক্কালে কিছু সম্মানীয় ব্যক্তি বর্গ লেখনি দিয়ে যুক্তি উত্থাপন করে বাংলা ভাষার পক্ষে মতামত দেন। সে সময় উর্দু চর্চা, উর্দুতে কথা বলা কে পারিবারিক ঐতিহ্য আভিজাত্য মনে করার ফলে অনেকে এ দিকে ঝুঁকে পড়ে। সে সময় এপারের অক্ষর জ্ঞানহীন অল্প শিক্ষিত বা একেবারে শিক্ষিত নয় পাকিস্তান প্রেমী বাংলাভাষীরা না বুঝে বাহাদুরি নিতে এভাবে তৎপর হয়। তাদের কাছে ওপার থেকে আসারা ভারতের দালাল পাকিস্তানের শত্রু কমিউনিস্ট।
ঢাকার পলাশী ব্যারাকে বাংলা ভাষা কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের বাতাস রাজশাহী কলেজে এসে লাগলে এখানকার শিক্ষার্থীরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আন্দোলনের সূতিকাগারে পরিণত করেন। পাকিস্তান তমদ্দুন মজলিস রাজশাহীর সাথে সম্পৃক্ত এই কলেজের শিক্ষার্থীরা ভূমিকা রাখেন। রাজশাহী কলেজে ভাষা শীর্ষক এক সেমিনারে বিশিষ্ঠ শিক্ষাবিদ ড. মকসেদ হিলালীকে দিয়ে উর্দূর পক্ষে কথা বলানোর চেষ্টা করলে তিনি বাংলার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। ঢাকার পরিস্থিতি দেখার জন্য এ কলেজের শিক্ষার্থী ছাত্রনেতা আবদুর রহমানকে ঢাকায় পাঠানো হয়। তিনি ফিরলে ৪ মার্চ রাজশাহী জেলা সদরের আলুপট্টিতে কংগ্রেস জেলা নেতা অ্যাডভোকেট জ্যোতিশ চন্দ্র চক্রবর্তীর বাড়িতে আলোচনায় তিনি হিন্দুদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়াকে চক্রান্ত বলে বাংলা ভাষা আন্দোলনের পক্ষে কথা বলেন। রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী ছাত্রনেতা ছাড়াও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান সহ বেশ কয়েকজন এসময় উপস্থিত ছিলেন। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ভাষা আন্দোলন কর্মপরিষদের ডাকা ধর্মঘটের দিন রাজশাহী কলেজের মেইন গেটে পিকেটিংকে জোরালো করতে ভাষা সৈনিক এ কলেজের ছাত্রনেতা একরামুল হক ও হাসিনা বেগম রাস্তায় শুয়ে পড়েন। তাদের ডিঙিয়ে সুরাইয়া নামে এক শিক্ষার্থী কলেজ চত্বরে প্রবেশ করতে গিয়ে নাজেহাল হন। অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচিকে সমর্থন দেন। কলেজের ১৭ নম্বর ক্লাস রুমের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে কলেজের পিছন দিয়ে দরগাহপাড়া, পাঠানপাড়া হয়ে ফায়ার সার্ভিস মোড়ের কাছে আসলে মুসলিম লীগ সরকার সমর্থকরা তাদের পাকিস্তানের শত্রু ভারতের দালাল কমিউনিষ্ট বলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে লাঠি অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করলে ভাষা সৈনিক রাজশাহী কলেজের ছাত্রনেতা আব্দুল লতিফ ও প্রতীশ ঘোষ সহ কয়েকজন আহত হন। বাংলা ভাষার দাবিতে এভাবেই প্রথম রক্ত ঝরে রাজশাহীতে। কলেজ চত্বরে প্রতিবাদ সভা করে এদিনের কর্মসূচি শেষ হয়। ১৯৪৮ সালে কলেজ সংসদ নির্বাচনে মুক্তমনের ও প্রগতশীল পক্ষ ২১ টি পদের মধ্যে তিনটি পদ পেয়েও অনঢ় থেকে বাংলা ভাষার পক্ষে অবস্থান নেন। কলেজ সংসদের প্রথম সভায় ভাষা সৈনিক ছাত্রনেতা মুহাম্মদ সুলতান বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করলে ভাষা সৈনিক ও রাজশাহী কলেজের ছাত্রনেতা একরামুল হক ও হাসিনা বেগম সমর্থন দেন কিন্তু অধ্যক্ষ ড: মমতাজ উদ্দিন আহমদ কার্য বিবরনীতে তা লিপিবদ্ধ না করায় মিছিল শেষে ফুলার ভবনের সামনে সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাষা সৈনিক ও ছাত্রনেতা একরামুল হক। এ কারনে তাকে সহ ষোলজনকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নিলে অধ্যক্ষ, সহ অধ্যক্ষের অফিস ও অফিসের বারান্দায় অনশন শুরু হয়। খবর পেয়ে পাকিস্তান আইন পরিষদের সদস্য মুসলিমলীগ জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট মাদারবখশ কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে এসে টেলিফোনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের সাথে কথা বলে তার কাছ থেকে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করান।
(তথ্যসূত্র: ভাষা সৈনিক ড. আবুল কাশেম চৌধুরী, ভাষা সৈনিক অ্যাডভোকেট আব্বাস আলী, ভাষা সৈনিক ডাক্তার আব্দুল লতিফ, ভাষা সৈনিক অধ্যাপক একরামুল হক) ১৯৪৮ সালের মে মাসে রাজশাহী জেলা রাষ্টভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন হবার পর জুন মাসে রাজশাহী কলেজে রাষ্টভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে ধর্মঘটের ডাক দিলে পাকিস্তান আইন পরিষদের সদস্য জেলা মুসলিমলীগ নেতা অ্যাডভোকেট মাদার বখশ প্রকাশ্যে সমর্থন দেন। অন্যান্যরা ধর্মঘট বানচালে তৎপরতা চালালে ভাষা সৈনিক রাজশাহী কলেজের ছাত্র নেতা এম.এ.জি তোয়াব, নুরুল ইসলাম, জননেতা মাদার বখশ কে বলেন কর্মসূচী সফল না করতে পারলে তারা রাজশাহী কলেজ ছেড়ে চলে যাবেন। বিভাগীয় কমিশনার নূরুন্নবী চৌধুরী ও অবাঙালি জেলা ম্যাজিষ্টেট আব্দুল মজিদ ভয় দেখিয়েও কর্মসূচি থামিয়ে রাখতে পারেননি। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমানের নির্দেশে সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাষা সৈনিক রাজশাহী কলেজের ছাত্রনেতা একরামুল হক (তথ্যসূত্র: ভাষা সৈনিক ডাক্তার আব্দুল লতিফ)।
আগষ্ট মাসে প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান রাজশাহীতে আসবেন একথা জেনে বাংলা কে রাষ্ট্রভাষা, শিক্ষা সামগ্রীর মূল্য কমানো, জিনিসপত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রন, চাকুরী বৈষম্য রোধ সহ বিভিন্ন দাবী নিয়ে তার সাথে দেখা করতে চাইলে জেলা ম্যাজিষ্টেট অনুমতি না দিলে ছাত্র নেতারা তখনকার মহিলা মাদ্রাসা বর্তমান হেতেম খাঁ বহুমুুখি গার্লস স্কুলে গোপন সভা করেন। কয়েকটি স্থানেও এই সভা হয়। বিশেষ ভূমিকা রাখেন ভাষা সৈনিক রাজশাহী কলেজের ছাত্রনেতা একরামুল হক। বিভাগীয় কমিশনার নুরুন্নবী চৌধুরী ও ম্যাজিষ্টেট আব্দুল মজিদ কলেজ অধ্যক্ষের সাথে পরামর্শ করে তাদের জেলা সদর থেকে সরিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর তাদের ফিরতে দেয়া হয়।
নভেম্বর মাসে লিয়াকত আলী খান পূর্ব অঞ্চল সফর এসে রাজশাহীতে এলে বিক্ষোভ করার দায়ে ভাষা সৈনিক ছাত্রনেতা আব্দুল কাশেম চৌধুরী, মুহাম্মদ সুলতান, গোলাম রহমান সহ কয়েক জন কে বহিস্কার করা হয় (তথ্যসূত্র: গবেষক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. তফিকুল ইসলাম রাজা) ১৯৪৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলীর কাছে উত্তাপন করতে না পারা দাবী গুলো নিয়ে রাজশাহী কলেজ মিলানায়তনের পাশে লিচু তলায় ভাষা সৈনিক রাজশাহী কলেজের ছাত্রনেতা মুহাম্মদ সুলতানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম ও অন্যান্যরা। জেলা ম্যাজিষ্টেটের কাছে মিছিল নিয়ে যাবার সময় মুসলিমলীগ সরকার সমর্থকরা তাদের ভারতের দালাল পাকিস্তানের শত্রু কমিউনিষ্ট বলে আক্রমন করলে ভাষা সৈনিক রাজশাহী কলেজের ছাত্রনেতা আব্দুর রহমান মাথায় আঘাত পেয়ে আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। আবারো রক্ত ঝড়ে রাজশাহীতে। এই পরিস্থিতিতে ঢাকা থেকে দুইজন ছাত্র নেতা রাজশাহী জেলা সদরে এসে আলোচনা করে যান। ১৯৪৯ সালের ৮ জানুয়ারি ছাত্র নেতাদের বহিস্কারের প্রতিবাদে জুলুম প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়। (তথ্যসূত্র: ভাষা সৈনিক অধ্যাপক একরামুল হক, ভাষা সৈনিক অ্যাডভোকেট আব্বাস আলী, ভাষা সৈনিক ডাক্তার আব্দুল লতিফ, গবেষক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. তফিকুল ইসলাম রাজা)।১৯৫০ সালে ভাষা সৈনিক রাজশাহী কলেজের ছাত্রনেতা সাইদউদ্দিন আহমেদ ‘দিশারী সাহিত্য মজলিস’ নামের সাহিত্য সংগঠটির দায়িত্ব নেন। শিক্ষার্থী ছাড়াও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এই পত্রিকায় লেখার মাধ্যমে ভাষা আন্দোলন কে বেগবান করেন। ভাষা সৈনিক হাবিবুর রহমান শেলী কে পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব দেয়া হয় (তথ্যসূত্র: ভাষা সৈনিক সাংবাদিক সাইদউদ্দিন আহমেদ)।
১৯৫১ সালে আন্দোলন কিছুটা ধীর গতি হলেও রাজশাহী কলেজের ভাষা সৈনিক ছাত্রনেতা শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে থাকেন।১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আন্দোলন তীব্র করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।তমদ্দুন মজলিস কর্মসূচি ঘোষণা করলে ৩০ জানুয়ারি রাজশাহী কলেজের ভাষা সৈনিক তমদ্দুন মজলিস জেলা সম্পাদক আনসার আলী কলেজ মুসলিম হোস্টেলের ‘এ’ব্লক এ কলেজের ছাত্রনেতা আবুল কালাম চৌধুরী, হাবিবুর রহমান, ওয়াহিদুল হক দুলুর সাথে আলোচনায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের বক্তব্যের প্রতিবাদে ৪ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট ও মিছিলের সিদ্ধান্ত নিলে, টিনের চোঙ্গায় প্রচার চালাতেই কলেজ হোস্টেল থেকে মিছিল বের হয়। ভুবনমোহন পার্কের সভায় বক্তব্য রাখেন ভাষা সৈনিক এই কলেজের ছাত্র নেতা আনোয়ারুল আজিম (৭১ এ শহীদ), মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ইয়াসিন আলী প্রমুখ। একাত্বতা ঘোষণা করেন মেডিকেল স্কুলের ভাষা সৈনিক ছাত্রনেতা মহসেনা বেগম, মেজবাহুল হক বাচ্চু প্রমুখ। ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি সহ মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে ভুবনমোহন পার্কের জনসভার প্রচারে মিয়াপাড়া তমোঘ্ন প্রেস থেকে লিফলেট ছাপিয়ে বিলি করা হয়। এদিনের জনসভায় ভাষা সৈনিক রাজশাহী কলেজের ছাত্র নেতা তমদ্দুনমজলিসের জেলা সম্পাদক আনসার আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মুসলিম লীগ নেতা ক্যাপ্টেন শামসুল হক, মোসাদ্দারুল হক (সাংবাদিক) প্রমুখ।(তথ্যসূত্র: ভাষা সৈনিক বিচারপতি মোহাম্মদ আনসার আলী) ভাষা আন্দোলনে ২১ ফেব্রুয়ারি কি ঘটে ছিল তা বলা প্রয়োজন। ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান ব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিলে প্রশাসন ২০ ফেব্রুয়ারি কড়া নজরদারির সাথে ১৪৪ ধারা জারি করে। ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের পাশে পুকুরের ধারে ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার পক্ষে সিদ্ধান্ত দেন এই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র নেতা মোহাম্মদ সুলতান ও হাবিবুর রহমান শেলী। ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা ভবনের সামনে ১৪৪ ধারা ভাঙার পক্ষে বিপক্ষে কথা বলার সময় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শামসুল হক ১৪৪ ধারা ভঙ্গের বিপক্ষে মত দিলে হৈইচৈই শুরু হলে উপাচার্য মোয়াজ্জেম হোসেন হস্তক্ষেপ করেন। ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিনের পরামর্শে গ্রুপ গ্রুপ হয়ে মিছিলের সিদ্ধান্ত নিলে, রাজশাহী কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মুহাম্মদ সুলতান ছাত্র ছাত্রীদের নামের তালিকা করতে থাকার সময় এই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র হাবিবুর রহমান শেলী তার নাম লিখিয়ে দশজন সঙ্গী নিয়ে “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই” স্লোগান দিয়ে ১৪৪ ধারা ভেঙে দিলে অন্যান্যরাও বেরিয়ে আসেন। হাবিবুর রহমান শেলী সহ অন্যান্যরা গ্রেফতার হন। (তথ্যসূত্র: দৈনিক ভোরের কাগজের বিশেষ সংখ্যা ‘অবসর’ এ ভাষাসৈনিক বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান শেলী’র স্মৃতিচারন ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯১৮)।
২১ এর দুপুর তিনটা দশমিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে শহিদ ও আহতদের খবর সন্ধ্যার পর যেভাবে হোক রাজশাহীতে আসার সাথে সাথে রাতে রাজশাহী কলেজ মুসলিম হোস্টেলের"এ" ব্লকের সভায় এ কলেজের ভাষা সৈনিক ছাত্রনেতা গোলাম আরিফ টিপু ও হাবিবুর রহমান কে যুগ্ম সম্পাদক ও মেডিকেল স্কুলের ভাষা সৈনিক ছাত্রনেতা এস এম এ গাফার কে সভাপতি করে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। টিনেরচোঙ্গা দিয়ে হোস্টেল ও রাস্তায় ঢাকার খরব জানানোর সাথে সাথে পরিবেশ থমথমে হয়ে যায়, সবাই হোস্টেল সমবেত হতে থাকে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলেজ হোস্টেলে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির জন্য সারা রাত ইট কাঁদা দিয়ে কাজ চলে। ভাষাসৈনিক এই কলেজের ছাত্রনেতা সাইদ উদ্দিন আহমেদ সাদা কাগজে রঙ দিয়ে লিখেন কবি গুরুর লেখা, "উদয়ের পথে শুনি কার বানী ভয় নাই ওরে ভয় নাই..."। সার্বজনীন সহযোগিতায় তৈরি করা স্মৃতিস্তম্ভে লাগিয়ে দেয়া হয় কবি গুরুর এই চরণটি। শালুমিয়া নামে একজনেরও সহযোগিতার কথা শুনা যায়। ভাষা সৈনিক এই কলেজের ছাত্রনেতা মহাসিন প্রমানিকের মা তার আরেক সন্তান স্কুল ছাত্র ও তার এক বন্ধুর মাধ্যমে টিফিন ক্যারিয়ারে খাবার পাঠান। অন্যান্য বাড়ি থেকেও খাবার পাঠানোর খরব শোনা যায়। ২২ ফেব্রুয়ারি ভোর বেলা এখানে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাজশাহী কলেজ মাঠে শিক্ষার্থীরা জমায়েত হয়ে পিকেটিংয়ে বেড়ালে পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভটি ভেঙে দেয়। শিক্ষার্থীরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে ট্রেনে বক্তৃতা দিয়ে টিনের কোটায় অর্থ সংগ্রহ করে তহবিল গঠন করেন। ভূবন মোহন পার্ক পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকায় বিকেল চারটায়, রাজশাহী কলেজর টেনিস লনের সামনে প্রতিবাদ সভা হয় । রাজশাহীর ভাষা আন্দোলন কোন বিশেষ ব্যাক্তির নেতৃত্বে হয়নি, এই আন্দোলন পরিচালিত হয় সার্বজনীন ঐক্যে। (তথ্যসূত্র: অ্যাডভোকেট ভাষা সৈনিক মোহাসিন প্রামানিক, ভাষা সৈনিক অ্যাডভোকেট আহমদ উল্লাহ চৌধুরী, ভাষা সৈনিক সাংবাদিক সাইদ উদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন প্রামানিক) ২১ ফেব্রুয়ারি ও ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় যারা শহিদ হন তাদের বিবরণ কিছুটা হলেও তুলে ধরা উচিত , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শেষবর্ষের শিক্ষার্থী আবুল বরকতের জন্মস্থান ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দিথানার ভরতপুরে। মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী রফিক উদ্দিনের জন্মস্থান মানিকগঞ্জের পাড়িলে। এদিন শহিদ হন ময়মনসিংহের পাচরায়ের আব্দুল জাব্বার, শিল্প ব্যাংকের কর্মচারী ফেনির লক্ষণপুরের আব্দুস সালাম। ২২ ফেব্রুয়ারী শহিদ হন তারা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষবর্ষের শিক্ষার্থী ও হাইকোটের কর্মচারী শফিউর রহমান, শিশু অহিউল্লাহ ও তরুন আউয়াল। (তথ্যসূত্র: বীরমুক্তিযোদ্ধা এম আর আক্তার মুকুল) ২৩ ফেব্রুয়ারী প্রতিবাদ সভায় রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বক্তব্য আন্দোলনের ধারাকে পাল্টে দেয়। যারা আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন তারাও পক্ষে হয়ে গেলেন। বামনেতা আতাউর রহমান আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সকলেকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে পর্রামশ দেন।২৯ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ত্বদের গ্রেফতার করে পনেরো দিন পরে মুক্তি দেয়া হয়। ( তথ্যসূত্র: ভাষা সৈনিক অধ্যাপক একরামুলহক, ভাষা সৈনিক ডাক্তার এস এম এ গাফফার) ভাষা সৈনিক জননেতা মাদার বকশের আহবানে ১ জুলাই রাজশাহীতে রাষ্ট্রভাষা সম্মেলনে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী উদযাপনে ভুবনমোহন পার্কে শহিদ মিনার তৈরি ও কর্মসূচি সফল করতে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীদের ভুমিকা ছিল। ২৪ এপ্রিল এই কলেজের শিক্ষার্থী ও তাদের সমর্থক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বদের গ্রেফতার করে কিছু দিন পরে ছেড়ে দেয়া হয়। প্রতিটি ২১ ফেব্রুয়ারী এই কলেজের শিক্ষার্থীদের উজ্জীবিত করতে থাকে। জানা যায় মুক্ত মনের প্রগ্রতিশীল অবাঙালি শিক্ষক শিক্ষার্থীরা বাংলা ভাষার পক্ষে সমর্থন দেন। ১৯৫৬ সালের ৭ মে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার অনুমোদন দিলেও তা কাগজ কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। ২১ হয়ে উঠে একেকটি আন্দোলনের প্রতীক। (তথ্যসূত্র ভাষা সৈনিক বিচারপতি মোহাম্মদ আনসার আলী, গবেষক শিক্ষাবিদ ড. তসিফুল ইসলাম রাজা)
ভাষার জন্য এদেশ ছাড়া অন্য কোথাও আন্দোলন হয়নি একথা কতটুকু সত্য ? ১৯৬১ সালে ভারতের আসাম রাজ্যের শিলাচর, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি ও বরাকে ভাষার দাবীতে রক্ত ঝরে নারীসহ এগারোজন শহিদ হন।(তথ্যসুত্র: অমিতাভ ভট্টশালী, বিবিসি বাংলা, কোলকাতা) ১৯৬৯ সালে রাজশাহী কলেজ ছাত্রসংসদ শহিদ মিনার তৈরির সিদ্ধান্ত নিলে ইঞ্জিনিয়ার ইউনুস ঢাকা থেকে নকশা করে আনেন। কলেজ মিলনায়তনের পাশে বিভিন্ন আন্দোলনে প্রবেশ সফলতা ছয়দফা এগারো দফা ছাত্রলীগের লক্ষ্য শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি ও একদফা স্বাধীনতার প্রতীক এই কলেজের শিক্ষার্থীরা অন্তরে ধারণ করেন। ১৯৭১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছিল অন্য আমেজের এই দিনের প্রথম প্রহরে এই শহিদ মিনারের প্রতীক একদফা স্বাধীনতাকে ধারণ করে এই কলেজের শিক্ষার্থীরা আওয়াজ তুলেন " বাঁশের লাঠি তৈরি করো বাংলাদেশ স্বাধীন করো, তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা" মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে পাকিস্তানি সৈন্যরা রাজশাহী জেলা সদর দখল করে ১৯ এপ্রিল এই শহিদ মিনারটি ধংশ করে দেয়। পরবর্তীতে এখানে নতুন করে শহিদ মিনার তৈরি হয়। (তথ্যসুত্র: বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুব হাসান সিরাজী) ২১ ফেব্রুয়ারি যেভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃত পেলো তা হল কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার বহুভাষীদের সংগঠন মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার অব দি সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা কানাডা প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্দা রফিকুল ইসলাম দিনটির গুরুত্ব তুলে ধরে ১৯৯৮ সালের ১৯ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে আবেদন করেন, কিন্তু সেটি নাকোচ হয়ে গেলে এক বছর পর আরেক প্রবাসী আব্দুস সালাম তাকে সমর্থন করে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন। তারা ১৯৯৯ সালের ৩ মার্চ দশ জন ভিন্ন ভাষীর স্বাক্ষর যুক্ত আবেদন আবারো সেখানে পাঠালে। আবার এটি নাকোচ হলে সংগঠনটি ৮ সেপ্টেম্বর বিষয়টি তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী এ.এস.এইচ কে সাদেকের দৃষ্টিগোচরে আনেন। ১০ সেপ্টেম্বর ছিল প্রস্তাব উত্থাপনের শেষ দিন। শিক্ষামন্ত্রী এ.এস.এইচ.কে সাদেক সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে ৯ সেপ্টেম্বর প্রস্তাবটি ইউনেস্কোর সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দিলে ইউনেস্কো কর্তৃপক্ষ প্রস্তাবটি সেদিনই গ্রহণ করেন। সেখান থেকে ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর ১৮৮টি দেশের সম্মেলনে অংশগ্রহন করার জন্য বাংলাদেশকে আমন্ত্রন জানানো হলে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী এ.এস.এইচ. কে সাদেকের নেতৃত্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালযের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর সাইদুর রহমান সহ ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল সেখানে যান। এ দুদিন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি দলের সাথে দিনটির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন। দুইভাবে প্রস্তাব আসে প্রথমতঃ কয়েকটি দেশ একসাথে প্রস্তাব উত্থাপন করলে অন্যদেশ সমর্থন দিবে। দ্বিতীয়তঃ একটি দেশ সমর্থন দিলে অন্যদেশ সমর্থন দেবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একইভাবে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। বিষয়টি খুব সহজ মনে হলেও সহজ বিষয় ছিল না। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে যুক্তির লড়াই করতে হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর প্রিমিলিনারী সেশনে দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী এ.এস.এইচ.কে সাদেক বক্তব্য রাখেন। ইউনেস্কোর দুটি প্রশ্নের উত্তর বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল যথাযথভাবে উত্থাপন করলে ইতালি, ইরান, হন্ডুরাস, জাম্বিয়া, মিশর, চিলি, ক্যামেরুন, বেলারুশ, বাহামা,ভারত , আইভরি কোষ্ট, ইথিওপিয়া, মালয়য়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ওমান, পাপুয়া নিউগিনি, রাশিয়া, প্যারাগুয়ে, শ্রীলঙ্কা, সুরিনাম, সৌদি আরব, পাকিস্তান সহ পঁচিশটি দেশ প্রস্তাবটি সমর্থন করে। প্রস্তাবটি গ্রহন করার পর ইউনেস্কো সচিবালয়ে পাঠানো হলে নিয়ম অনুযায়ী বিষয়টি যাচাই পরিক্ষা নিরিক্ষার জন্য নানা প্রশ্নের জবাব দিতে হয়। বলা হয় প্রস্তাবটি কমিশন ২ এ যাবে। সেখান থেকে অ্যাডভাইজারি কমিটি অব মাল্টি ল্যাঙ্গুয়েজ এডুকেশন কমিটির অনুমোদন পেলে প্রস্তাব টি নির্বাহী কমিটিতে পাঠানো হবে যা দীর্ঘ সময়ের ব্যপার। এছাড়াও ইউনেস্কো সচিবালয়ে এক লক্ষ ডলার প্রদানের কথা বলা হলে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল জোরালো যুক্তি উত্থাপন করে কথা বলেন। প্যারিসে তৎকালীন রাষ্ট্রদূত মোয়াজ্জেম আলী ও ইউনেস্কোতে কর্মরত মিষ্টার টনি হক সব বাধা কাটিয়ে তাৎক্ষণিক ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর বিকেলে ২১ ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির খবরটি ঢাকায় পৌছে। (তথ্যসুত্র: বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর সাইদুর রহমান খান বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য, ড. মুহাম্মদ হান্নানের লেখা ‘এ.এস.এইচ.কে. সাদেক স্মারক গ্রন্থ’, শাহীনূর রহমান , সারাবাংলা ডটনেট)ভাষা শহিদের শ্বরণে কোথায় প্রথম শহিদ মিনার তৈরি হয়েছে এ নিয়ে মাঝে মাঝে বির্তক উঠে কিন্তু বিষয় টি পরিষ্কার সেদিন ঢাকায় শহিদ মিনার তৈরির পরিবেশ ছিল না । অন্য কোথাও শহিদ মিনার তৈরির কথা স্পষ্ট নয়। ভাষা সৈনিক গবেষক বিশিষ্ট ব্যাক্তি দের তথ্যে রাজশাহী কলেজ মুসলিম হোস্টেলে তৈরিকরা স্মৃতি স্তম্ভ টি দেশের প্রথম শহিদ মিনার। ২০০৫ সালে ভারতের আসাম রাজ্যের বরাকবাসীর দাবিতে আসাম সরকার ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর শিলাচর রেল ষ্টেশনের নাম ‘ভাষা শহিদ রেলস্টেশন ’ করেন। তথ্য সুত্র: অমিতাভ ভট্টশালী,বিবিসি বাংলা কলকাতা।
একুশ এর তাৎপর্য এখন ভিন্নতর। একুম এখন শুধু আমাদের নয়, বিশ্বীয় সার্বজনীন। এ দৃষ্টিকোন থেকে সকল জাতি সত্বার মাতৃভাষাকে সম্মান দেওয়া উচিত। অতীতে এ দিনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি শ্রেনী নানা ধরনের অপ-তৎপরতা চালাতো। একুশ সামনে এগিয়ে যেতে শপথ নেবার দিন। ৫২ এর একুশের পথ ধরে আসে ৬৬, ৬৯, ৭০, ৭১, ২০২৪।
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে রাজশাহীতে মিছিল, ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারী ভাষার দাবিতে ঢাকার শহিদদের স্মরণে রাজশাহী কলেজ মুসলিম হোস্টেলে নির্মিত দেশের প্রথম শহিদ মিনার (স্মৃতিস্তম্ভ)।
লেখক, তথ্য সংগ্রাহক সমাজ ও সাংস্কৃতিক কর্মী রাজশাহী।