হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, হলের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা ও ছাত্রকে হত্যাকান্ডের হুমকি দেয়া সহ নানা অভিযোগে হলের পরিবেশ বিনস্ট ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার সার্থে একাধিকবার হালত্যাগের নির্দেশ দিলেও
তা অমান্য করায়,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির কক্ষ সিলগালা করে দিয়েছেন হল কতৃপক্ষ।
২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে হলের নিরাপত্তার স্বার্থে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঐ নেতার কক্ষে সিলগালা করা হয়।
ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম শামীম হোসাইন। তিনি রাবির প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং রাবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।
হল প্রশাসন জানান, নবাব আব্দুল লতিফ হলের ২১২ নম্বর কক্ষে অবৈধভাবে থাকতেন শামিম হোসাইন। এছাড়া, দুই সিটের কক্ষে একাই থাকতেন তিনি। ওই কক্ষে এখন কোনো ছাত্রের আবাসিকতা নেই। তার বিরুদ্ধে হলের ছাত্রদের বিভিন্নরকম অভিযোগ ছিল। এছাড়া, সে হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছিলেন এবং হলের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা ও ছাত্র হত্যাকান্ডের হুমকি দিয়েছিলেন। তাই, হলের নিরাপত্তার স্বার্থে তার কক্ষ সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
তবে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ নেতা শামীম। ছাত্রত্ব না থাকলেও দায়িত্বের কারণে তার হলে থাকা প্রয়োজন বলে জানান তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, ব্যক্তিগত ক্ষোভে এটা করা হয়েছে। রাবি প্রশাসন ও রাবি শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবেন।
কক্ষ সিলগালার বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ. এ. এইচ. এম. মাহবুবুর রহমান বলেন, ওই ছেলের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে। সে অবৈধভাবে হলে অবস্থান করছিল। তার বিরুদ্ধে হলের আবাসিক ছাত্রদের বিভিন্নরকম অভিযোগ ছিল। এছাড়া, গতকাল সে মোবাইলে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছিল এবং হলের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা ও ছাত্র হত্যাকান্ডের হুমকি দিয়েছিল। সেজন্য আমরা হলের নিরাপত্তার স্বার্থে আজ সকাল ১০টার মধ্যে তাকে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলাম। সে নির্দেশ মানেনি। এজন্য আমরা তার জিনিসপত্র বের করে দিয়ে কক্ষ সিলগালা করে দিয়েছি।
এবিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা শামীম হোসেন বলেন, আমার প্রতি হলের প্রাধ্যক্ষের ব্যক্তিগত ক্ষোভের জায়গা থেকেই হয়তোবা এটা করা হয়েছে। এছাড়া ওনার বাড়ি বগুড়া। আমার মনে হয়, বিএনপি- জামায়াতের সঙ্গে ওনার কানেকশন থাকতে পারে। আমি ওনার সঙ্গে কোনো অসৌজন্যমূলক আচরণও করেনি। আমি ওনাকে শুধু বলেছিলাম, ‘স্যার বিভিন্ন রুমে তালা লাগাচ্ছে কারা? চুরির ঘটনাও ঘটছে। এটা কারা করছে?’ উনি বলেছিলেন, ‘রুমে রুমে পাহারা দেওয়ার অতো সময় আমার নাই’। তখন আমি বলেছিলাম, ‘কোনো ব্যবস্থা না নিলেতো হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, স্যার। তখনো বড় কোনো ঘটনাও ঘটে যেতে পারে’।
এখন কি করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সময় চেয়েছিলাম। যেহেতু সময় দিলেননা ওনারা, সেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তারপর একটা সিদ্ধান্ত নিবো।
কক্ষ সিলগালা করার সময় সহকারী প্রক্টর ড. জাকির হোসেন ও ড. আল মামুন এবং হলের আবাসিক শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।