ঢাকামঙ্গলবার , ৯ মার্চ ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে

Paris
  • মার্চ ৯, ২০২১, ২:২৫ অপরাহ্ণ

বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ থেকে বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি ও প্রধানমন্ত্রীকে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে নগরীর বাটা মোড়ে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মাননীয় হুইপ আবু সাঈদ আল্ মাহমুদ স্বপন এমপি                                                      ছবিঃ বিজয় বাংলা


অনলাইন ডেস্ক: আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে আর কখনও বিএনপি ক্ষমতায় আসবে না। বরং বিএনপি নামের দলটিই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কারণ জনগণ তাদের কখনও সমর্থন করবে না।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটূক্তি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার (৯মার্চ ) বিকালে রাজশাহী মহানগরীর বাটা মোড় এলাকায় মহানগর আওয়ামী লীগ এর আয়োজনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, যাদের জন্ম খুনের মধ্য দিয়ে, যাদের চিন্তা চেতনায় খুনের রাজনীতি তারাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছেন ১৫ আগস্ট সৃষ্টি করেছে, ২১ আগস্ট একই সূত্রে গাঁথা । জিয়াউর রহমান শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনের সাথেই নয়, কারাগারের অভ্যন্তরে জাতীয় চারনেতার হত্যাকাণ্ডের সাথেও জড়িত। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা দেশের যে উন্নয়ন করেছেন, তা দেখে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এ কারণে আওয়ামী লীগের পক্ষে দেশের জনগণ। সম্প্রতি পৌরসভা নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগের পক্ষে রায় দিয়েছেন। আর এসব দেখে বিএনপি নেতারা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রতি বিষোদগার করছেন। তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।

স্বপন বলেন, শেখ হাসিনাকে এর আগে ২১ বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁকে রক্ষা করেছেন। তাই আমরা শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিতে বিচলিত নই। বিএনপি পূর্বের ন্যায় আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের চেষ্টায় ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু জনগণ আমাদের পাশে আছেন। বিএনপির এসব অপতৎপরতার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২ মার্চ) বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে মিজানুর রহমান মিনু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আজ রাত, কাল আর সকাল নাও হতে পারে। পচাত্তর মনে নাই?’ এর প্রতিবাদ জানায় রাজশাহী আওয়ামী লীগ। পর দিন এক বিক্ষোভ-সমাবেশ থেকে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মিনুকে বক্তব্য প্রত্যাহারে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। আল্টিমেটামের ৭২ ঘণ্টা পর মিনু গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়ে নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে সাবেক এই মেয়র ক্ষমা চাননি। ক্ষমা না চাওয়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মিনুসহ চার নেতার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন করা হয়েছে। আর বিকালে অনুষ্ঠিত হলো এই প্রতিবাদ সমাবেশ।

সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়ত জোট সারাদেশে কী করেছে তা দেশের জনগণ জানেন। তারা বাংলা ভাইদের সৃষ্টি করেছে, লালন করেছে।  সারাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। মিনু আপনার দলের নেতাকর্মীরা সে সময় সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে। শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছেন। কিন্তু আপনারা সফল হননি। এসএম কামাল বলেন, যারা বাংলাদেশকে আবারও পাকিস্তানের ধারায় ফিরিয়ে নিতে চায়, তারাই শেখ হাসিনাকে হমকি দিচ্ছেন। তারাই তারেক জিয়ার নেতৃত্বে ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটাতে চেয়েছিলেন। সে ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। একারণেই বিএনপি নেতা মিনু আবারও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন, এটা মিনুর হুমকি নয় এটা বিএনপির।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। লিটন বলেন, বিএনপি সমাবেশ করতে চেয়েছিল। সরকার মনে করেছে কথা বলার অধিকার আছে, সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু আমরা দেখলাম কুকুরের লেজ কখনও সোজা হয় না। ছেড়ে দিলেই কয়েল হয়ে যায়।  রাজনৈতিক শিষ্টাচার থাকলে তারা এভাবে কথা বলতে পারতেন না। বিএনপি নেতা মিনুকে উদ্দেশ্য করে লিটন বলেন, ‘আপনি প্রধানমন্ত্রীকে ‘তুমি’ করে কথা বলেন! ভাগ্য ভাল আপনার জিহ্বাটা ছিঁড়ে ফেলা হয়নি। আমরা সেটা পারি।’

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সমাবেশ পরিচালনা করেন। অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন এমপি, লায়েব উদ্দিন লাবলু, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার, মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন প্রমুখ।