ঢাকাসোমবার , ১৫ মার্চ ২০২১
  • অন্যান্য

মাদক সেবনের দায়ে গোদাগাড়ীতে ৭ জনের কারাদণ্ড

  • মার্চ ১৫, ২০২১, ৫:১৪ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর গোদগাড়ী উপজেলায় মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত ৫ আসামীকে ছিনতায়ের অভিযোগ উঠেছে। আর এই ঘটনায় গোদাগাড়ীতে চাঞ্চল্যসৃষ্টি হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের ছিনিয়ে নেওয়ায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৫ নেতাকর্মী জড়িত বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (১৫মার্চ) বিকেল ৬ টার দিকে পৌর এলাকার বুজরুজ রাজারামপুর হলেড় মোড় এলাকায় একটি বাগান হতে মাদক সেবনরত অবস্থায়, রামজান, সাদ্দাম, সুমনসহ মোট ৫ জনকে হাতে নাতে আটক করে রাজশাহী জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা। পরে তাদের কে আটক করে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোছা: নাজমুন নাহারের নিকট নিয়ে যায়। এই সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাদের মাদক সেবনের জন্য ১ মাসের কারাদন্ড প্রদান করে।

এর আগে আটককৃতদের ছাড়াতে জোর তদবির করে উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনি সম্পাদক গোলাম কাউসার মাসুম, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হামিদ রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিল ও তাদের সঙ্গের সানাউল্লাহ ও ইশাহাক।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাদের তদবিরে কর্ণাপত না করায় এক পর্যায়ে সেখানে চিৎকার- চেঁচামেচি করে সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন সংখ্যায় কম থাকায় তারা ৫ জন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জানে আলমের তৎপরতায় গোদাগাঢ়ী মডেল থানার ওসি খলিলুর রহমান পাটোয়ারীর সহযোগিতায় পালিয়ে যাওয়া ৫ আসামীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
তবে এই ঘটনায় পালিয়ে যেতে সহযোগিতা প্রদানকারী গোলাম কাউসার মাসুম ও আরেকজনকে উপজেলা সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আটক করে রাখে বলে জানাগেছে।

গোদাগাড়ী পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হামিদ রানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন । আমি ঘটনা স্থলে ছিলাম না। যা শুনেছেন তা সম্পন্ন মিথ্যা , কিছুদিন আগে আমার বাবা স্ট্রোক করে মারা গেছে এই ঘটনায় আমি নিজেই মর্মাহিত। আমি চাকরী করি তাই নিজের মত থাকি বলে দাবি করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিতের জন্য একাধিকবার সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহারের মোবাইল ফোনে কল ও এসএমএস দিয়ে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জানে আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পালিয়ে যাওয়া ৫ আসামীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এই মূহুর্তে খুব ব্যস্ত আছি পরবর্তি কি করনীয় হচ্ছে তা জানিয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

ঘটনার বিষয়ে রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ গোয়েন্দা শাখার গোদাগাড়ীর অভিযানে দায়িত্বে থাকা সহকারি পরিদর্শক আশরাফুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে পরে কথা বলছি বলে দ্রুত ফোনটি কেটে দেন।
গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি খলিলুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, এমনি ঘটনা শুনেছি তবে বিস্তারিত জানতে গোদাগাড়ী সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রোট নাজমুন নাহারের সাথে যোগাযোগ করে জেনে নিলেই ভালো হবে বলে জানান।

এদিকে ঘটনার বিষয়ে মাদকসহ আটক রমজানের ভাই শরিফের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটি বাগানে আমার ভাইসহ কয়েকজন বসে ছিলো। হঠাৎ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের লোকজন গিয়ে ৫ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিতে চাইলে তাদের পকেটে এক পুরিয়া গাঁজা ঢুকিয়ে দিয়ে ধরে নিয়ে চলে যায় বলে দাবি করে।
সর্বশেষ এই ঘটনায় রাত ৯ টায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এই বিষয়ে করনীয় সম্পর্ক প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছিলো বলে জানা গেছে।