ঢাকারবিবার , ২১ মার্চ ২০২১
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অবৈধ যান চলতে দেয়ার দাবিতে নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ

Paris
  • মার্চ ২১, ২০২১, ৬:২২ অপরাহ্ণ

অনলাইন ডেস্ক: রাজশাহী শহরে ভুটভুটি, নসিমন, করিমনের মত অবৈধ যানবাহন চলতে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন চালক ও নির্মাণ শ্রমিকেরা। রোববার (২১ মার্চ) সকালে নগর ভবনের সামনে তারা বিক্ষোভ করেন। বাধ্য হয়ে অনুমোদনহীন এসব গাড়িই চলতে দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে।

যেসব শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছিলেন তাদের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। শ্রমিকেরা প্রায় সবাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। তারা রাজশাহী মহানগরে চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। প্রতিদিন সকালে তারা অল্প ভাড়ায় অবৈধ যানবাহনগুলোতে চড়েই গ্রাম থেকে শহরে আসেন। সন্ধ্যায় একই বাহনে তারা বাড়ি ফেরেন। প্রতিদিনই এসব যানবাহনের ওপর ঠাসাঠাসি করে শ্রমিকদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

আগে কিছু না বললেও ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরে এসব যানবাহনের ব্যাপারে কড়াকড়ি করছে পুলিশ। দুইদিনে জব্দ করা হয়েছে অন্তত ১২টি ভুটভুটি টেম্পু ও নসিমন। এর প্রতিবাদেই শ্রমিক ও চালকেরা রোববার কাজে যোগ না দিয়ে নগর ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় অবশ্য সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নগর ভবনে ছিলেন না।

বিক্ষোভ চলাকালে গোদাগাড়ীর ঈশ্বরীপুর গ্রামের ভুটভুটি চালক আজিজুল ইসলাম জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তিনি শ্রমিকদের নিয়ে যখন ফিরছিলেন তখন নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে তার গাড়িটি পুলিশ জব্দ করে। তাকে আড়াই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। চারদিন পর গাড়িটি দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এভাবে দুইদিনে ১২টি গাড়ি জব্দ করেছে ট্রাফিক পুলিশ।

সিটি করপোরেশনের একটি সাইটের হেডমিস্ত্রি লালন উদ্দিনও ছিলেন শ্রমিকদের সাথে। তিনি বলেন, পুলিশ গাড়ি ধরার কারণে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিতে পারছেন না। সে কারণে তারা বিক্ষোভ করছেন। নগর উন্নয়নের কাজে যেসব গাড়ি শ্রমিকদের আনবে তাদের গাড়িগুলো না ধরার দাবি জানাচ্ছেন তারা। এই কর্মসূচির জন্য রোববার কোন শ্রমিক কাজে যোগ দেননি।

পুলিশের ধরপাকড়ের কারণে গ্রাম থেকে ভুটভুটির চালকেরাও তাদের গাড়ি নিয়ে শহরে আসতে চাইছেন না। এ কারণে শ্রমিক ও গাড়ির চালকেরা একসঙ্গে তাদের দাবি নিয়ে নগর ভবনের সামনে আসেন। গাড়িগুলোর ওপর অতিরিক্ত যাত্রী তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে গোদাগাড়ীর জুগিডাইং গ্রামের চালক আজম হোসেন বলেন, ‘লেবারদের হাফ ভাড়ায় শহরে আনি। বেশি লোক না তুললে লস হয়ে যাবে। সিটি করপোরেশন যদি শহরে গাড়ি ঢোকার অনুমতি দেয় তাহলে কম করে লোক তোলা হবে। সেক্ষেত্রে ভাড়াটাও এখন থেকে বেশি ধরতে হবে।’

শ্রমিকদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে সেখানে যান নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল মোমিন। তিনি শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেন যে শহরে তাদের ঢোকার ব্যবস্থা করা হবে। তারপর শ্রমিকরা ফিরে যান। কাউন্সিলর আবদুল মোমিন বলেন, শ্রমিকরা না আসতে পারলে তো উন্নয়ন কাজও বাধাগ্রস্ত হবে। তাই প্রাথমিকভাবে তাদের বলেছি- যারা সিটি করপোরেশনের কাজের শ্রমিক আনবেন সেসব চালকদের একটা কাগজ দেয়া হবে। এই কাগজ হস্তান্তর করা যাবে না, গাড়িতে অতিরিক্ত মানুষও তোলা যাবে না। তাহলে পুলিশ ধরবে না। মেয়র ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি আসার পর পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে সব চূড়ান্ত হবে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, অবৈধ যান চলাচল করতে দেয়ার সুযোগ নেই। তারপরও জনস্বার্থে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যদি পুলিশকে কোন অনুরোধ করা হয় তাহলে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই বিষয়টি দেখা হবে। তবে সেটি আসলেই সম্ভব কি না তা এখনই নিশ্চিত না।