ঢাকারবিবার , ২১ মার্চ ২০২১
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে ভারতের মিজোরাম সীমান্তে বর্ডার হাট চালু হচ্ছে

Paris
  • মার্চ ২১, ২০২১, ৫:১৪ অপরাহ্ণ

বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করলেন রাজ্যের শিল্পবিষয়ক মন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি বর্ডার হাট চালু করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরাম। একই সঙ্গে কানেক্টিভিটি বাড়াতে মিজোরাম সাজেকের সড়ক পথ ও রাঙামাটিতে নৌ-পথের ব্যবহার বাড়াতে আগ্রহী। বাংলাদেশের বান্দরবান ও রাঙামাটির সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে মিজোরামের। এ কারণে বাংলাদেশের সাজেকের কাছাকাছি একটি বর্ডার হাট চালু করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

রবিবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে সফররত ভারতের মিজোরাম রাজ্যের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বাণিজ্য বিষয়কমন্ত্রী ড. আর লালথাংলিয়ানা সৌজন্য সাক্ষাত শেষে এসব কথা বলেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কয়েকটি সীমান্ত বা বর্ডার হাট চালু রয়েছে। সেখানে নির্দিষ্ট দিনে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের পসরা সাজান। সীমান্তের উভয় দেশের মানুষ সেখানে কেনাকাটা করতে পারেন।

টিপু মুনশি বলেন, চলমান বর্ডারহাটগুলো উভয় দেশের মানুষের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। এ বর্ডার হাটের সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে আরও কয়েকটি বর্ডার হাট উদ্বোধন করা হবে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে আমাকে মিজোরামের একজন প্রতিমন্ত্রী ফোন করেছে। ওরাও চায় যে মিজোরামের বর্ডারে এবং আমাদের বর্ডারে যেন একটা হাট বসে। চলতি মাসেই মিজোরামের প্রতিনিধি দল এনিয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশে আসবে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, মিজোরাম একটি ব্রিজের কথা বলছে, সেটা করলে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হবে। তারা কয়েকটি জায়গা দেখিয়েছে রাঙামাটির কথা বলেছে, সেখানে গভীর নদী আছে, কিন্তু ভালো পথ নেই। সাজেকের যে বর্ডারের কথা বলেছে সেখানে ছোট খাল আছে, সেখানে একটি ব্রিজ করলে চিটাগাং পোর্ট তারা ব্যবহার করতে পারবে, এটা তাদের স্বপ্ন। প্রধানমন্ত্রীও চায় ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো থাকুক। সাজেকের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগটা ভালো, সেখানে করা যায় কিনা সেটা দেখতে আমি যাবো।

আমরা সম্পর্কটা মিজোরামের সঙ্গে চূড়ান্তভাবে বাড়াতে চাই। মিজোরাম নিজস্বভাবেই বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মিজোরাম থেকে বাঁশ, সেগুন কাঠ, চিঠি, ফল, সিমেন্ট, পাথর আসে। আমাদের থেকে ট্রয়লেট্রিকস, গার্মেন্টস, ফলের রস, মাংস, মাছ, ইলেক্ট্রনিকস, কুকিং অয়েল যাচ্ছে। বর্ডারের কানেকশন বাড়াতে পারলে বাণিজ্য আরো সম্প্রসারিত হবে।

মিজোরামের সঙ্গে কি বাংলাদেশের সড়ক, রেল বা নদীপথে যোগাযোগ স্থাপনে কোনো বন্দর করা হবে কি না জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, সাজেকের পথ দিয়ে রোড কানেকটিভিটি হতে পারে। অথবা নদীপথে ১৮ থেকে ১৯ কিলোমিটার আসলে রাঙামাটি আসতে পারবে। তাহলে নদীপথ বা সড়ক পথে সেটি হতে পারে। তবে রেল পথের সম্ভাবনা এ মুহুর্তে নেই। নদী পথ রয়েছে এ পথে সরাসরি সিল্কসিটি এলাকায় পৌঁছানো যাবে। এখন সড়ক বা নদী পথ কোনো কিছু নেই বলে চোরাইপথে কিছু কাঠ আসে। মে মাসে ঘুরে এসে আমরা ব্যবসার বিষয়টি করতে চাই।

মিজোরামের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলাম। এর আগে আমরা কয়েকটি ফ্যাক্টরি ভিজিট করেছি। প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি ভিজিট করেছি, যা খুবই দারুন। আমরা চাই মিজোরামে কিছু ফ্যাক্টরি করতে। গার্মেন্টস প্রোডাক্ট দিয়ে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে প্রসংশিত। তাদের আয়ের একটি বড় অংশ আসছে এখান থেকে। গার্মেন্টসের মাধ্যমে নারীদের কর্মক্ষেত্র তৈরিতে বিশাল জায়গা তৈরি করেছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, মিজোরাম ভারতের মধ্যে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ রাজ্য। শিক্ষায় কেরালার পর মিজোরাম এগিয়ে রয়েছে, আমরা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছি। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তাতে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। করোনায় আমাদের মাত্র ১১ জন মারা গেছেন, আমরা করোনা প্রতিরোধে সফলতা দেখিয়েছি। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন- সাজেক থেকে কাছাকাছি যে বর্ডার রয়েছে সেখানে বর্ডার হাট করার বিষয়ে দেখতে আগামী মাসে তিনি মিজোরামে আসবেন। আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশের ৩১৮ কিলোমিটার বর্ডার সীমানা রয়েছে। বাংলাদেশ আমাদের খুবই কাছের।

আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য প্রসারে খুবই আগ্রহী। মিজোরামের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ট্যারিফ নন ট্যারিফ বেরিয়ার নিয়ে কোনো সমস্যা হবে কি না জানতে চাইলে মিজোরামের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মিজোরামের বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সরাসরি ক্ষমতা রয়েছে।

আমরা কিছু চুক্তি করেছি, যেগুলো ইতোমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে আছে। সুতরাং নতুন করে সেগুলো করলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমস্যা হওয়ার কথা না। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে ইতোমধ্যে ব্যবসা করছি।

সূত্র: জনকণ্ঠ