অনলাইন ডেস্ক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সরকারের পদত্যাগের আহ্বানে ‘বিএনপির অগণতান্ত্রিক আচরণ’ বলে মন্তব্য করে বলেছেন, বিএনপির এই আহ্বান হাস্যকর। জনগণ নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, তাই মেয়াদ শেষ হলেই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।
বুধবার রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকার সরকারী বাসভবনে আয়োজিত সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নিরপেক্ষ বলতে শিশু আর পাগল ছাড়া কেউ নেই, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার একথা দেশের জনগণ ভুলে যায়নি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেদের জনবিচ্ছিন্নতা আড়াল করতে বিএনপি এখন সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে। বাস্তবে নির্বাচন ও আন্দোলনে ব্যর্থতার জন্য বিএনপি নেতাদের ‘টপ টু বটম’ দল থেকে পদত্যাগ করা উচিত। ‘সরকার পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করেছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রকৃতপক্ষে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবেই কাজ করছে। বিচার বিভাগের ওপর সরকারের কোন হস্তক্ষেপ নেই। বিএনপি’র কাছে নিরপেক্ষতা হচ্ছে, তাদের পক্ষে রায় গেলে বিচার বিভাগ স্বাধীন, আর বিপক্ষে গেলে বলেই সরকার হস্তক্ষেপ করেছে!
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন জয়ের গ্যারান্টি দিলেই বিএনপির কাছে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ। রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিএনপি অপপ্রচার ও মনগড়া কথা বলে যাচ্ছে অবিরাম, অথচ তারাই পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগ নিয়ে মিথ্যাচার করছে।
গত চার দশক পার হলেও বিএনপির রাজনীতি থেকে সন্ত্রাস নির্ভরতা একটুও কমেনি উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসের রাজনীতি যারা করে আসছে তাদের কাছে জনস্বার্থের চেয়ে ক্ষমতাভোগই অধিকতর কাক্সিক্ষত। ক্ষমতা ফিরে পাবার মোহে বিএনপি এখন অন্ধ।
বিএনপি বিরোধী দল হিসেবে সরকারকে সহযোগিতা না করে ভারত বিরোধিতার ভোঁতা অস্ত্রে শাণ দিচ্ছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা ভারত সফর শেষ করে বিমানবন্দরে এসে বলে গঙ্গার পানি বণ্টনের কথা বলতে ভুলে গেছে, তাদের মুখে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের কথা মানায় না।
গত কয়েক দিনে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্নস্থানে যে তা-বলীলা চালানো হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ নিয়ে বিএনপি নেতারা বলেছেন এর সঙ্গে তাদের নাকি কোন যোগসূত্র নেই! বিএনপি নেতাদের মুখে এমন কথা শুনলে হাসি পায়। তাদের বক্তব্য ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না’ প্রবাদের মতোই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এ সকল সন্ত্রাসী কার্যকলাপের উস্কানি ও প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং জনগণের সম্পদে আগুন ধরিয়ে দেয়ার নির্দেশদাতা হয়ে আবার সমাবেশও করে। বিএনপি’র মায়া কান্না মাছের পুত্র শোকের মতো।
বিএনপিকে সরকারের অন্ধ সমালোচনা না করে করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন এবং জনগণকেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্ধুদ্ধ করুন। এটাই দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে সবার দায়িত্ব।
করোনা টিকা নিয়েছেন ওবায়দুল কাদের ॥ এর আগে বুধবার সকালে করোনার টিকা নিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারে করোনা টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সূত্র: জনকণ্ঠ