ঢাকাবুধবার , ৬ অক্টোবর ২০২১
  • অন্যান্য

বাংলাদেশ রেলওয়ে ইতিহাস আব্দুলপুর-পুরনো মালদহ রেল সেকশন (পর্ব-১)

  • অক্টোবর ৬, ২০২১, ৩:০৮ অপরাহ্ণ

ছবিঃ ১৯৪৪ সালের শিয়ালদহ স্টেশন।

♦পর্ব-১♦

বিশেষ প্রতিনিধি : এই লাইনটি নির্মিত হয় ১৯৩০ সালে। ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর রেল সেকশনের আব্দুলপুর থেকে রাজশাহী, আমনুরা, রহনপুর হয়ে ভারতের পুরনো মালদহ জংশন পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ অংশের রেললাইন বাংলাদেশ রেলওয়ে ও ভারত অংশের রেললাইন ভারতীয় রেলের অধীনে পরিচালিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।

আব্দুলপুর থেকে নির্মাণ শুরু হয় ১৯২৭ সালের দিকে। আগেই কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় আব্দুলপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত রেলপথ ১৯২৯ সালের ১৪ মার্চ ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত রেলপথ উন্মোচন করা হয় ১৯৩০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। আব্দুলপুর-নবাবগঞ্জ কোম্পানি নির্মিত এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৫৬ মাইল।

বর্তমানে রহনপুর-সিঙ্গাঁবাদ ট্রানজিট পয়েন্টটি সচল রয়েছে। ১৯৭৮ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ ভারত ও নেপালের মধ্যে এক ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে নেপাল থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ট্রানজিট পয়েন্ট ব্যবহার করা হত। মাঝখানে বন্ধ হয়ে গেলেও ২০১১ সালে নেপালে সার রপ্তানির মধ্য দিয়ে এই ট্রানজিট পয়েন্টটি চালু করা হয়। সিঙ্গাঁবাদ-রহনপুর ট্রানজিট পয়েন্টটি নেপালের র‌্যাক্জল থেকে বাংলাদেশের খুলনা অব্দি কোনো প্রকার ট্রানশিপমেন্ট চার্জ ছাড়াই ব্যবহৃত হয়।

আব্দুলপুর-পুরনো মালদহ রেল সেকশনের আমনুরা থেকে একটি শাখা লাইন চলে গিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে। অপরদিকে মালদহ থেকে একটি মিটারগেজ লাইন ছিল গোদাগাড়ী ঘাট পর্যন্ত, যা নির্মিত হয়েছিল ১৯০৯ সালে। ঠিক তার বিপরীতে (পদ্মার দক্ষিণ পাড়ে) ছিল লালগোলা ঘাট। সেসময় শিয়ালদহ থেকে যাত্রীরা এসে নামত লালগোলা ঘাটে। লালগোলা ঘাট থেকে স্টিমারে করে পদ্মা পার হয়ে চলে আসত গোদাগাড়ী ঘাটে। গোদাগাড়ী থেকে ট্রেনে করে চলে যেত মালদহ। দেশভাগের পর ঘাটটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে রেল রুটটি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। তাই অলাভজনক কারণ দেখিয়ে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার গোদাগাড়ী ঘাট থেকে আমনুরা জংশন পর্যন্ত রেলপথ তুলে ফেলে। কালের সাক্ষী হয়ে এখনও রেলপথটির স্মৃতিচিহ্ন রয়ে গেছে।

আগে রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে হলে আমনুরা রেলওয়ে জংশনে ইঞ্জিন ঘুরিয়ে যাওয়া লাগত। এই সমস্যার সমাধানকল্পে ২০১৭ সালে ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে আমনুরা বাইপাস রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ করা হয়। এতে বর্তমানে রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরাসরি ট্রেনে করে যাওয়া যায়।

লেখা চলবে…….