কক্সবাজারের মহেশখালীর গোরকঘাটা বাজারে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন তৎকালীন জেলা পরিষদ সদস্য ও তরুণ রাজনীতিবি খাইরুল আমিন সিকদার (২৮)। ৩২ বছর পর ওই হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ১ ডিসেম্বর দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন মহেশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার আজম, তাঁর দুই ভাই বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা জহির উদ্দিন ও নাসির উদ্দিন, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল আলম এবং সাধন নামে এক যুবক। রায় ঘোষণার সময় সাধন ছাড়া বাকি ৫ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সুলতানুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন’কে জানান, গেল ১০ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ২৪ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন। তবে এ মামলায় সপ্তমবারের মতো রায় ঘোষণার তারিখ পেছনোও হয়।
১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পূর্ব নির্ধারিত দিন অনুযায়ী আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২৬ জন আসামীর মধ্যে ৬ জনকে যাবজ্জীবন ও বাকি ২০ জনকে খালাস প্রদান করেন। এ মামলা চলার সময়ে দুইজন আসামি মারা গেছেন।
এদিকে মামলার দুই আসামি জহির উদ্দিন ও মো. ইব্রাহিম হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আদালতের পর্যাবেক্ষণের বরাতে এপিপি বলেন, আদালত মনে করছেন এটি একটি রাজনৈতিক বিরোধে ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ড। যা আদালতে সন্দেহাতিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালের ৯ এপ্রিল বিকেল পাঁচটার দিকে মহেশখালীর গোরকঘাটা বাজারে দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হন তৎকালীন জেলা পরিষদ সদস্য ও তরুণ রাজনীতিক খাইরুল আমিন সিকদার। তিনি গোরকঘাটার হামজা মিয়া সিকদারের ছেলে। ওই দিন নিহত খাইরুল আমিনের বড় ভাই মাহমুদুল করিম বাদী হয়ে মহেশখালী থানায় মহেশখালীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুর বক্স, পুটিবিলার শামশুল আলম, নাসির উদ্দিন, হামিদুল হকসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলা নং-থানা ০৪/৯০, এসটি ১৫৫/২০০২ ও জিআর মামলা ৪২/১৯৯০।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঘটনার তদন্ত করে এজাহারভুক্ত ২৫ জনসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন ওই বছরের ২২ নভেম্বর।
২০০৩ সালের ২৭ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত।