দিনটি ছিল ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল। তখন পকিস্তান সৃষ্টির দুই বছরও পূর্ণ হয়নি। এদিন বাম রাজবন্দিদের রক্তে রঞ্জিত হয় রাজশাহী জেলখানার খাপড়া ওয়ার্ড । তথ্য সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৯ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিন্তানের প্রাদেশিক পরিষদে রাজবন্দিদের দেশদ্রহী চিহ্নত করে বিল পাস হলে রাজবন্দি সহ রাজনৈতিক অঙ্গনে অসন্তষ সৃষ্টি হয়। এসময় রাজবন্দিদের উপর অমানষিক নির্যাতন চালিয়ে তাদের দিয়ে তেলেরঘানি টানানো ও জাঁতা ঘোরানা এরকম কাজ করিয়ে নেওয়া হতো। রাজবন্দিদের নির্মামভাবে শুধু পহর নয়, নিম্নমানের খাবার খেতে দেওয়ায় অসন্তষ বাড়তে থাকে। রাজবন্দিদের ডিভিশন ভালো খাবার সরবরহ ও অন্যয় আচারণের প্রতিবাদে অনশন শুরু হলে জেল কর্তৃপক্ষ জোর করে বন্দিদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর জেল সুপার মিস্টার বিল কয়েকজন অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনার কৌশলে রাজবন্দিদের কাছে গিয়ে একজনকে মারতে উদ্দতা হলে পরিস্থিতি আরো উত্তেজনাকর হয়ে উঠে। পাগলা ঘন্টা বাজিয়ে খাপড়া ওয়ার্ডের জানালা দিয়ে গুলি চালালে রেল শ্রমিক রাজশাহীর বিজয় সেন, রংপুরের সুধীর ধর, কুষ্টিয়ার মোহনী মিলের শ্রমিক নেতা হানিফ শেখ, ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের অর্নাসের পরীক্ষার্থী সুখেন্দু ভট্টাচার্য, লাল ঝান্ডা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা দেলেওয়ার হোসেন, খুলনা দৌলতপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্র ফেডারেশনের নেতা আনোয়ার হোসেন শহিদ এবং ৩২ জন আহত হবার ঘটনা শোষন মুক্ত সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনকে আরো তীব্র করতে থাকে।
তথ্য সূত্র: বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান আলী বরজাহান, ডা. মমতাজ সংখমিতা (আহত বাম নেতা সৈয়দ মনসুর হাবিবুল্লার কন্য, পশ্চিমবাংলা ভারত), প্রফেসর ড. মর্তুজা খালেদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শিক্ষক নেতা শফিকুর রহমান বাদশা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কমরেড এনামুল হক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, নারী নেত্রী কল্পনা রায়, কবি আবু তালেব মোল্লা, তরুণ চিন্তাবিদ লেখক কবি নাদিম সিনহা।
লেখক মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক, সমাজ ও সাংস্কৃতিক কর্মী।