রাজশাহীর স্বাধীণতাকামীরা একজন রণ কৌশলবিদের জন্য অপেক্ষায় রইলো। সেনাবাহিনী ক্যন্টনমেন্টের বাইরে তেমন একটা না আসলেও ২৫ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ক্লিলিং গ্রুপ অবাঙালি ও বাঙালি কিছু সমর্থদের সাথে নিয়ে ২ এপ্রিল রাতে রাণীবাজার এলাকায় আইনজীবি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ক্রিড়াবিদ সমাজসেবী সাংবাদিক বিরেন্দ্রনাথ সরকার, ফুদকি পাড়ার সমাজসেবী আইয়ুব সরকারের বিডি মেম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলার সুরেস পান্ডে কে হত্যা করে সকলের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তারা মালোপাড়ার ডাঃ দাক্ষীকে ধরার জন্য তার বাড়িতে গেলে তিনি তা বুঝতে পেরে তার স্ত্রীকে কাঁধে নিয়ে সরে পড়েন। এ বাড়িতে থাকা শিল্পী কানু মোহন গোস্বামী বাড়ির চাকর পরিচয়ে নিজেকে রক্ষা করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে জেবের মিয়ার ইট ভাটায় থাকা বাহিনী রাজশাহী জেলা সদরের সাহেব বাজার ও পাশ্ববর্তী এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাংলাদেশের পতকা উড়িয়ে রাজশাহীকে মুক্ত ঘোষণা করেন। ঠিকাদার জেবের মিয়া তাদের খাবার সরবরাহ করেন।
৩ এপ্রিল ভোর হতেই লোকজন গ্রামের দিকে ও সীমান্ত পার হতে থাকে পাকিস্থান সমর্থক অনেকে এই হত্যা কান্ড মেনে নিতে পারেন নি তাদের মধ্যেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এদির নওগাঁ থেকে আসা ইপিআর ৭ নং উইং-এর ক্যপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী তার বাহিনী ও চাঁপাই নবাবগঞ্জের বাহিনী নিয়ে রাজশাহী জেলা সদরে প্রবেশ করলে, আকশনের নেতৃত্ব দেবার সকল ক্ষমতা তাকে দেওয়া হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাহিনীর সাথে আসা ছাত্রনেতা মোহম্মদ আলী কামাল ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর নির্দেশে সার্কিট হাউজ ও জেলা পরিষদ ডাক বাংলোয় থাকা সেনাবাহিনীর অফিসার ও সেনাবাহিনীকে আত্মসর্ম্পন করার জন্য বাংলা ইংরেজী উর্দুতে ঘোষণা দেবার কিছু পরেই সার্কিট হাউজ ও ডাক বাংলোর পতন হয়। কমরেড মনি সিংহের নেতৃত্বে রাজশাহী জেল খানায় বিদ্রোহ হয়। কমরেড মনি সিংহ, কমরেড দেবেন সিকদার, ঙ্গশ^রদীর ফজলুর রহমান ফান্টু প্রমুখকে আলুপট্টি দিয়ে সীমান্ত পার করে দেয়া হয়। চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ অঞ্চলের নেতা মিরাতুল ইসলাম জেল থেকে বের হয়ে তার অঞ্চলে চলে গেলেন। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ল্যাফটেন্ট কর্ণেল সেন ও মেজর ত্রিবেদী ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর সাথে দেখা করলে তিনি তাদের ৬ এপ্রিল অ্যাকশনের সময় সীমান্ত থেকে আটিলারী সার্পোট চাইলেন। শিবগঞ্জ থেকে মিরাতুল ইসলাম রাজশাহী তানোর অঞ্চলে এসে বাহিনী গঠন করলেন। ৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলা সদর স্বাধীনতা কামীদের নিয়ন্ত্রনে থাকা অবস্থায় অবাঙালিরা রাজশাহী উপশহরে পুরোনো ঘটনার জের ধরে হত্যা যজ্ঞ চালাই। ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জেলা সদরে পূর্র্ব উত্তর অঞ্চল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেন মেজর রশিদ, এবি সিদ্দিক ও সুবেদার নায়েক সিরাজউদ্দিন লস্কর কে।
৬ এপ্রিল। ক্যাপ্টেন গিয়াসউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ভারতীয় বাহিনীর সহযোগিতা না পেয়ে সন্ধ্যার পর নিজের নেতৃত্বে যোদ্ধাদের নিয়ে জেলা সদরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে ষড়যন্ত্র করার দায়ে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক রশিদুল হাসান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কুদরত এলাহী চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাঠানো হয়। ক্যাপ্টেন রশিদ, অধ্যাপক এবি সিদ্দিক ও সুবেদার নায়েক সিরাজউদ্দিন লস্করকে পূর্ব উত্তরকোন অঞ্চল নিয়েন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বালিয়াপুকুরে নূরুল হুদা সরকারের বাড়িতে কন্ডল রুম স্থাপন করা হয়। মার্চ মাসে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের জন্য রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের পাশে খাদ্য গুদামে চাল সংগ্রহে যাওয়া পাঠানপাড়া, দরগাপাড়া, হোসনিগঞ্জ এলাকার স্বাধীনতাকার্মীরা না ফেয়ায় এলাকার সকলে বুঝে ফেললেন তাদের হত্যা করা হয়েছে।
৭ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আহত ব্রিগেডিয়ার শওকত বালুজকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ভারি অস্ত্র ও মাইন পোতার কারণে স্বাধীনতাকার্মী যোদ্ধারা ক্যান্টমেন্টের কাছে পৌঁছাতে পারলো না। পাকিস্তানি সৈন্যরা অবাঙালিদের অস্ত্র সরবরহ করলো। বিভিন্ন পাড়া মহল্লা বাড়িঘর, গ্রাম অঞ্চল থেকে যোদ্ধাদের জন্য খাবার আসতে থাকে। মুসলিম হাই স্কুল, শাহ মখদুম দরগা, বালিয়া পুকুরসহ বিভিন্ন পাড়া মহললায় খাবার সরবারহ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। চারঘাট অঞ্চলে জ্বালানি সঙ্কট দেখা দিলে ক্যাপ্টেন রশিদ, পুলিশ একাডেমি সি এল আই গাজী আব্দুর রহমান, মোখলেস হোসেন, মনসুর আলী, ডা. ভাষ্কর, ঠিকাদার আব্দুল হামিদের মাধ্যমে চর অঞ্চল থেকে কুড়াল মাঝিকে ডেকে সীমান্তের ওপার থেকে জ্বালানী তেল আনার ব্যাপারে আলোচনা করেন। ওপারের ধনীরামপুরের নিরেন সরকার ও নারায়ন সরকারের সহযোগিতায় শেখপাড়ার শক্তিপদ মন্ডলের সহযোগিতায় মুরশিদাবাদ জেলা প্রশাসক অশক চ্যাটার্জী প্রতিশ্রুতি দিলে শংকর দাশপালের বিশেষ সহযোগিতায় কুড়াল মাঝি জ্বালানী তেল নিয়ে আসতে থাকে।
৮এপ্রিল জেলা পরিষদের ডাক বাংলোয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আবদুল হাদিকে আহ্বায়ক ও ক্যপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে অ্যাকশান পরিচানার দিয়েত্ব দিয়ে সর্ব দলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। সীমান্ত অঞ্চলে জননেতা এএইচএম কামারুজ্জামান হেনা অবস্থান করছেন জানতে পেরে রাজশাহীর প্রশাসন পরিচালনায় তাকে প্রয়োজন এই অনুরোধ জানিয়ে ক্যপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী চিঠি লিখে তা পৌঁছে দিতে
৯ এপ্রিল গণবাহিনীর প্রধান মাহাতাব উদ্দিন ও সফিকুর রহমান রাজাকে দায়িত্ব দেন। তারা সীমান্তের কাছে গেলে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী তাদের সাংসদ ডা. আজিজের সাথে দেখা করতে বলে।ডা. আজিজ তাদের জেলা প্রশাসক অশোক চ্যাটার্জীর কাছে পাঠান। তিনি চিঠিটি পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিবিসির সংবাদিকদের রাজশাহীতে নিয়ে আসার প্রস্তাব দেন। সফিকুর রহমান রাজা ও ছাত্র নেতা আবদুল কুদ্দুস ভারতীয় জনগণের উপহার রাজশাহীতে পৌছে দিয়ে আবার সীমান্ত অঞ্চলে চলে গেলেন।
১০ এপ্রিল বিদেশী বেতার জানায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরাট অংশ নগরবাড়ি ঘাটে আসছে। ক্যপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর নির্দেশে ক্যাপ্টেন আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক এবি সিদ্দিক, সুবেদার নায়েক সিরাজউদ্দিন লস্কর আলুপট্টি মোড় থেকে মীর্জা জাকারিয়ার সহযোগিতায় পাওয়া একটি বাসে ইপিআর ও ছাত্র গাইডার নিয়ে পাবনায় পৌঁছালে। লোকজন তক্ক করতে থাকে। এসময় তারা সেখান থেকে সরে পাবনার মুলাডুলি রেলগেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। বিশ্বাসঘাতকতায় প্রতিরোধ শক্তি দূর্বল হয়ে পড়ে। ক্যাপ্টেন আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক এবি সিদ্দিক রাজশাহীতে এসে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে অ্যাকশন স্থলে ফিরলেন। রাজশাহীর পুঠিয়ার বিড়ালদহের লোহার পুল ও আশেপাশে গ্রামবাসী, ইউওটিসি, আনসার, মুজাহিদ, স্বেচ্ছাসেবক, ছাত্র তরুণ, যুবক সম্বয়নে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলা হলো।
১২ এপ্রিল পাকিস্তানি সৈন্যরা জয় বাংলা স্লোগান ও বাংলাদেশের পাতাকা তুলে ধোকা দিয়ে ২০০ গাড়ি নিয়ে এগিয়ে আসতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা চরম প্রতিরোধে পরাজয়ে পালাতে থাকে। তাদের পরাজয়ের মহুর্তে অস্ত্র সঙ্কট দেখা দিল। রাজশাহী থেকে অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার মহুর্তে বিরালদহের পতন হয়। এসময় পাকিস্তানি সৈন্যরা ধর্ষণ, হত্যা ও অগ্নিসংযোগ চালায়।
১৩ এপ্রিল ক্যাপ্টেন আব্দুর রশিদ সরে গিয়ে চরঞ্চলে অবস্থান নেন। অধ্যাপক এবি সিদ্দিক চার সঙ্গীসহ চারঘাটে প্রতিরোধ গরে তুলে সঙ্গীদের সাথে শহিদ হন। ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা অঞ্চলে বিবিসির সাংবাদিকদের স্বাক্ষাতকার দেন। পাকিস্তানি সৈন্যরা চারঘাটের চরে পুলিশ অ্যাকাডেমির নিচে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে হত্যা করতে থাকে। তারা পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে তাদের পুড়িয়ে দেয়। বিবিসির সাংবাদিকরা সীমান্ত অঞ্চলে ফিরে যাওয়ার সময় দূর থেকে তাদের দূরবিনে এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। সন্ধ্যায় পাকিস্তানি সেনারা রাজশাহী জেলা সদরে এলে যোদ্ধাদের প্রতিরোধ ভেঙ্গে যায়। ক্যান্টেনমেন্টে অবরুদ্ধ থাকা পাকিস্তানি সৈন্যরা বেড়িয়ে আসে। অবাঙালি ও পাকিস্তান পন্থি বাঙালিরা ত্রাস সৃষ্টি করে। পাকিস্তানি সৈন্যরা রাজশাহী জেলা সদরের কাজলা, তালাইমারী, দেবীসিংপাড়া, রাণীনগর, সাধুর মোড়, রামচন্দ্রপুরসহ আশেপাশে হত্য যোগ্য ও বাড়ি ঘরে অগ্নি সংযোগ করে। জানা যায় তারা প্রায় একশোর উপরে লোকজনকে হত্যা করে।
১৪ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বাড়িতে আক্রমন করে তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। সাহেব বাজারে গোয়েন্দা সংস্থার অফিসে অক্রমন করে হত্যা যোগ্য চালানো হয়। গানপাউডার দিয়ে তারা সাহেব বাজারে আগুন দিয়ে সাম্পদায়িকতা উষ্কে দেয়। লুটপাট করার সুযোগ দিয়ে অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল করে দেয়। তারা রাজশাহী টিবি হাসপাতালের স্টার্ফ কোয়াটারে হত্যাযঙ্গ চালায়।
১৫ এপ্রিল পাকিস্তানি সৈন্যরা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অক্রমন করে কয়েকজনকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। সুবেদার নায়েক সিরাজউদ্দিন লস্কর ঝুঁকি নিয়ে রাজশাহীর পশ্চিমাঞ্চলে নওগাঁ ইপিআর ৭ নম্বর উইং থেকে আসা মেজর নাজমুল হক ও ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর সাথে কথা বলে রাজশাহী পুলিশ লাইনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এখান থেকে বের হয়ে তাদের দুইজনকে নিরাপদ স্থানে সড়ে যেতে বলে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রাস্তায় প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী গোদাগাড়ীর দিকে এবং মেজর নাজমুল হক নওগাঁর দিকে অ্যাডভান্স করলেন।
১৬ এপ্রিল ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী গোদাগাড়ী থেকে নূর ইসলাম নামে একজনের সাথে মুর্শিদাবাদে জেলা প্রশাসক অশোক চ্যাটার্জী ও সিমান্ত রক্ষীবাহিনীর অফিসারদের সাথে আলোচনর জন্য সীমান্তের ওপারে যাওয়ার সময় তিনি চলে যাচ্ছেন শুনে সিরাজউদ্দিন লস্কর ঝুঁকির মধ্যে ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষ করে ডিঙ্গি নৌকায় সঙ্গিদের নিয়ে ওপারে যাওয়ার সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী নৌকা থামিয়ে জননেতা এএইচএম কামারুজ্জামান হেনার পেন্সিল দিয়ে লেখা চিঠি ‘ লস্কর সাহেব আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি এদের সাথে চলে আসুন’ চিঠিটি পেয়ে তিনি তাদের সাথে শেখ পাড়ায় গেলে ক্যাপ্টেন রশিদ তাকে সরদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে পারিবারিক মালামাল নিয়ে যেতে বললে তিনি রাজি হয়ে গেলেন। কোন ফলাফল না পেয়ে ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী গোদাগাড়ীতে ফিরে প্রতিরোধ গড়ে তুলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলে গেলেন। পাকিস্তানি সৈন্যরা গোদাগাড়ী হয়ে চাঁপাইনবগঞ্জের দিকে যেতে থাকে।
২০ এপ্রিল পাকিস্তানি সৈন্যরা চাঁপাইনবগঞ্জ দখল করে নিলে ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী অস্ত্র ও যোদ্ধাদের নিয়ে সীমান্ত পার হয়ে লালগোলায় গেলে ভারতীয় বাহিনী কিছু অস্ত্র রেখে সব অস্ত্র তাদের নিয়েন্ত্রণে নিয়ে নেয়। পাকিস্তানি সৈন্যরা শহিদ মিনারগুলো ধ্বংস করে দিয়ে সকলকে অফিসে যোগ দিতে বলায় অনেকেই তাদের কথা শুনে নির্যাতিত, শহিদ হলেন। সীমান্ত পার না হয়ে অনেকে এপারে সংঘটিত হতে থাকে। নিষিদ্ধ কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল) ও অন্যানরা নিজস্ব ধারায় ভূমিকা রাখে। ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সীমান্তের ওপারে অপেক্ষা করতে থাকলেন।
২৩ এপ্রিল কর্নেল এমএজি উসমানী তাকে বালুর ঘাটে ডেকে কমান্ডারের দায়িত্ব দিয়ে বললেন ভারতীয় বাহিনী সহযোগিতা দেবে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ট্রেনিং অ্যাক্শান ও অপারেশন চলতে থাকে। প্রথমে কামারপাড়ায় পরে চাপাইনবাবঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, নওগাঁ, সিরাজঞ্জ, বগুড়া, দিনাজপুরের কিছু অংশ নিয়ে সাত নম্বর সেক্টর গঠন করে নওগাঁ ইপিআর ৭ নম্বর উইং এর কমান্ডার মেজর নাজমুল হককে সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব দিয়ে শিলিগুড়ির পানিঘাটায় হেড কোয়াটার স্থাপন করা হয়। ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে চার নম্বর সাব সেক্টর কমান্ডার, ক্যাপ্টেন রশিদকে কাজীপাড়া ক্যাম্পের দায়িত্বে নিয়োজীত করে ভারতীয় বাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ট্রেনিং শুরু হয়। নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো।
(সংক্ষিপ্ত)
তথ্যসূত্র: বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসর) গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী (বীর বিক্রম) মুক্তিযুদ্ধকলীন ৭ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর সাব সেক্টরের কমান্ডার। বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার মেজর সিরাজউদ্দিন লস্কর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাবউদ্দিন।
লেখক মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহক।