ঢাকারবিবার , ২১ মে ২০২৩
  • অন্যান্য

Natore

সমকামীতার কথা বলে ডেকে নিয়ে হত্যা॥ লাশ উদ্ধার

Paris
  • ফরহাদুজ্জামান, নাটোর প্রতিনিধি

    মে ২১, ২০২৩, ৩:১৭ অপরাহ্ণ
সমকামীতার কথা বলে ডেকে নিয়ে হত্যা

গত বছরের ১১ নভেম্বর নিখোঁজ হন রুবেল উদ্দিন। ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর নাটোর সদর থানায় অপহরণের পর মুক্তি পণ দাবির অভিযোগে মামলা করেন রুবেলের বাবা। নিখোঁজের ৬ মাস ৯ দিন পর অবশেষে আজ শনিবার রাতে রুবেলের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। নাটোর জেলার সদর উপজেলার ছাতনি ইউনিয়নের রুয়ের ভাগ এলাকার মোঃ আব্দুল জলিল প্রাঃ এর পারিবারিক কবর স্থানের পাশ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কবর স্থানের পাশে রুবেলের মরদেহ মাটিতে গর্তকরে পুঁতে রাখা হয়েছিল। নিহত রুবেল উদ্দিন নাটোর সদর উপজেলার আমহাটি গ্রামের মো. রমিজ উদ্দিনের ছেলে। এর আগে সমকামিতার ফাদেঁ ফেলে মুক্তিপণ আদায় না পেলে হত্যার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা ডিএম পির দক্ষিণখান থানা পুলিশ। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নাটোরের ডিবি পুলিশ ও দক্ষিণখান থানাপুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে এই মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়।মরদেহ উদ্ধারের সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জোবায়ের হাবিব উপস্থিত ছিলেন। এসময় ঘটনা স্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এটিএম মাইনুল ইসলাম (প্রশাসন ও অর্থ), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম (অপস অ্যান্ড ক্রাইম), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা শারমিন নেলি (সদর সার্কেল) ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. আব্দুল মতিন ওথানা–পুলিশেরস দস্যরা উপস্থিত ছিলেন। গ্রেফতার কৃতরা হলেন, বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর গ্রামের হৃদয়-৩০ এবং নাটোর সদর উপজেলার রুয়েরভাগ গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে তারেক হাসান -৩৪।
নাটোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন মাহমুদা নেলী বলেন, রুবেল অপহরণ মামলায সন্দেহ ভাজন দুজন দক্ষিণখান থানায় গ্রেফতার রয়েছেন সংবাদ পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি টিম দক্ষিণখান থানায় যান সেখানে জিজ্ঞাসা বাদে তারেক ও হৃদয় রুবেল হ্ত্যা কান্ডের কথা স্বীকার করে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নাটোর ও দক্ষিণখান থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে রুইয়েরভাগ গ্রাম থেকে রুবেলর মাটিতে পুতে রাখা কঙ্কাল উদ্ধার করে।

দক্ষিণখান থানার এস আই রেজিয়া খাতুন জানান, ঢাকার দক্ষিণ খানের আশকোনার মেডিকেল রোড থেকে আমির হোসেন ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন।পরে আমির হোসেনের মোবাইল নম্বর থেকে তাঁর বোনের নম্বরে অপহরণকারীরা ফোন করে মুক্তি পণ হিসেবে ১০লাখ টাকা দাবি করে।এ ঘটনায় তাঁর বড় ভাই বিল্লাল প্রথমে একটি জিডি এবং পরে গত ১৩ এপ্রিল দক্ষিণখান থানা য়একটি মামলা করেন। ওই মামলায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া মাইজদীএলাকা থেকেগত মঙ্গলবার সমকামিতার ফাঁদে ফেলে মুক্তি পণ আদায় চক্রের মূল দুই হোতা তারেক আহমেদ ওরফে তারেক হাসান (৩০) ও মো. হৃদয় আলী কে (৩৪) একটি মসজিদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।এছাড়া ও ঢাকার আশপাশ থেকে আশরফুল ইসলাম (২৩), রাসেল সরদার (২৫) ও তৌহিদুল ইসলাম বাবু (৩০) নামের আরও তিন জন কে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার তারেক ও হৃদয়ের দেওয়া তথ্য গাজী পুরের শ্রী পুরের দারোগার চালা এলাকার একটি পরিত্যক্ত সেপটি ট্যাংক থেকে গত বুধবার সন্ধ্যায় আমিরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরে গত বৃহস্পতি বার গ্রেপ্তার পাঁচ জনকে জিজ্ঞাসা বাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে মূল হোতা তারেক ও হৃদয়ের চার দিন ও বাকি তিন জনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।

জিজ্ঞাসা বাদে মূল হোতা তারেক আহমেদ ওরফে তারেক হাসান ও মো.হৃদয় আলী জানায়, গত বছরের ১১ নভেম্বর সমকামিতার কথা বলে রুবেলকে তাঁর বাসায় ডেকে নিয়ে আসে। পরে গভীর রাতে তাঁকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়। তারপর গভীর রাতে রুবেলের মরদেহ বাড়ির পাশের একটি গর্তে পুতে রাখা হয়।

এ বিষয়ে নাটোর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা শারমিন নেলি বলেন, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে করা একটি অপহরণ মামলা ডিবি তদন্ত করছিল। পরে ডিএমপির দক্ষিণখানথানা-পুলিশের সহযোগিতায় ভিকটিম রুবেলের মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়।মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।সেই সঙ্গে বাকি আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।