ঢাকাসোমবার , ৩১ জুলাই ২০২৩
  • অন্যান্য

Product of TCB

টিসিবির পণ্য বিক্রিতে অনিয়ম॥ মাঠে নেই ট্যাগ কর্মকর্তা

  • অনলাইন ডেস্ক

    জুলাই ৩১, ২০২৩, ৯:৪১ অপরাহ্ণ
টিসিবির পণ্য বিক্রিতে অনিয়ম

•‘প্রতিদিন বিক্রির সময় ট্যাগ অফিসারকে দুই হাজার টাকা দিতে হয়। টাকা দিতে পারিনি, তাই সে আসেনি’।

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রি ও বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কোনো প্রকার প্রচার ছাড়াই ইউনিয়ন পরিষদের ভবনে বসে বিতরণের ফলে অনেকেই পাচ্ছেন না এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আবার অনেকেই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া যোগসাজসে ও কৌশলে অনেক কার্ডধারী গ্রাহকদের কাছে পণ্য বিক্রি না করে পরবর্তী সময়ে সেই পণ্য উচ্চমূল্যে দোকানিদের কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

টিসিবি পণ্য বিক্রির দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি (ট্যাগ) অফিসারের উপস্থিতিতে পণ্য বিক্রয়ের বিধান থাকলেও রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবি পন্য বিক্রি ও বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসার উপস্থিত দেখা যায়নি। দীর্ঘদিনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কর্মী, আত্মীয়-স্বজনদের পরিবারের মধ্যে একাধিক টিসিবির কার্ড ও অনেকের মাঝে কার্ড ছাড়াই একাধিক টিসিবি পণ্য দেয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের দোতালায় হল রুমের মধ্যে চালের বস্তা গুলো খুলে একটি প্লাস্টিকের বালতি দ্বারা অনুমান করে গ্রাহকদের চাল দেয়া হচ্ছে। প্রতি গ্রাহকের মাঝে ৪৮০ টাকার বিনিময়ে ৫ কেজি চাল ২ কেজি মুশুরি ডাল ও ২ লিটার ভোজ্য তেল দেয়ার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন পাঁচ কেজি চাল পরিমাপ ছাড়া দেয়ায় অনেকেই পাচ্ছেন ৪ কেজি ৭০০ গ্রাম ৮০০ গ্রাম। ডালের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে ২ কেজি ডালের পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে ১ কেজি ৯৫০ গ্রাম আবার অনেকে পেয়েছে ১ কেজি ৯৭০ গ্রাম।

৩১ জুলাই সরেজমিনে আরো দেখা যায়, পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়ন পরিষদে আগামীকাল টিসিবি পণ্য দেয়ার জন্য পরিমাপ করে পলিথিন ব্যাগে ভরা হচ্ছে তবে পরিমাপ সঠিক নয়। উপজেলা প্রশাসনের তদারকির অভাবে নিম্ন আয়ের মানুষের সুবিধার জন্য সরকারের দেয়া টিসিবি পন্য ডিলাররা এখন কালোবাজারে বিক্রি করার সুযোগ পাচ্ছে।

রঙ্গশ্রী ও পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের টিসিবি পণ্যের নির্ধারিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার তোফায়েল হোসেন রিপন পরিমাপের কমের বিষয়টি স্বীকার করে জনকণ্ঠকে বলেন, চালের গোডাউন থেকেই বস্তায় চাল কম আসছে। এই ঘাটতি আমরা পূরণ করব কীভাবে। তাই আমরা কিছুটা কম দিচ্ছি।

ট্যাগ অফিসার কেন উপস্থিত ছিল না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিদিন বিক্রির সময় ট্যাগ অফিসারকে দুই হাজার টাকা দিতে হয়। টাকা দিতে পারিনি তাই সে আসেনি।

দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার উপজেলা একাডেমি শিক্ষা অফিসার এনামুল হক বলেন, গোডাউন থেকে চাল কম আসে। তাই ডিলাররা কিছু কম দেয়। তিনি কেন অনুপস্থিত ছিলেন সে বিষয়ে জানতে চাইলে, কথা অন্য প্রসঙ্গে ঘুরিয়ে নিয়ে যায়। এবং সঠিক কোন জবাব দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজল চন্দ্র শীল বলেন, মাইকিং করেই পিসিবি পণ্য বিক্রয়ের কথা। আর টিসিবি পণ্য পরিমাপে কম দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। টিসিবির পণ্য অন্য কোথাও বিক্রির সুযোগও নেই। যদি কেউ পরিমাপে কম দিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

সূত্র: জনকণ্ঠ