আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Allegations of corruption against the principal

সভাপতি ও অধ‍্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ!

Bijoy Bangla

বদলগাছী(নওগাঁ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৫ মে, ২০২৪, ০১:৩৯ পিএম

সভাপতি ও অধ‍্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ!
সভাপতি ও অধ‍্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ!

নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার ধর্মপুর-গোয়ালভিটা আলিম মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুল বারেক ও অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ব‍্যপক অনিয়ম ও দূর্নীতি অভিযোগ।

মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে  সনদধারীকে দিয়ে চাকরি করানো, সরকারি বরাদ্ধের টাকা আত্মসাৎ ,প্রতিষ্ঠানের সম্পদের টাকা তছনছ,নিয়োগ ব্যানিজ্য, শিক্ষক -শিক্ষিকা মাদ্রাসায় মাসের পর মাস অনুপস্থিত থাকলে অর্থের বিনিময়ে উপস্থিতি দেখানো সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার অধ‍‍্যক্ষ‍্ মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং মাদ্রাসার সভাপতি  আব্দুল বারেকের বিরুদ্ধে। 

এসব অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে গত ১৪ই মে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন  স্থানীয় এক ব্যাক্তি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঐতিহাসিক পাহাড়পুর ইউনিয়নের ধর্মপুর-গোয়ালভিটা হোসেনিয়া আলিম  মাদ্রাসাটি দীর্ঘকাল যাবৎ সুনামের সহিত পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসলেও এর ম্যানেজিং কমিটি ও অধ্যক্ষের বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম দূর্নীতিতে মাদ্রাসাটি বর্তমানে নাজেহাল অবস্হা বিরাজ করছে।

ধর্মপুর গোয়ালভিটা আলিম মাদ্রাসার সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষিকা শাহানাজ পারভীন পরিচালনা কমিটিকে ও অধ্যক্ষকে হাত করে তাদের যোগশাজসে তার শিক্ষাজীবনের 

জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে কয়েক বছর ধরে মাদ্রাসায় চাকুরী করে সরকারি বেতন-ভাতাদি উত্তোলন করেছেন। তার নিবন্ধন সনদ যাচাই করতে চাইলে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও অধ্যক্ষ অতি সুকৌশলে তার সনদের বিষয়টি ফাঁস হওয়ার ভয়ে তাকে চাকুরী হইতে স্বেচ্ছায় অবসরে পাঠিয়েছেন এবং তার অবসর-কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা সরকারি কোষাগার হতে উত্তোলন করে আত্মসাতের পাঁয়তারা করে যাচ্ছেন। 

এবং  মাদ্রাসার আইসিটি বিষয়ের শিক্ষিকা আকলিমা খাতুন তিনিও তার (কম্পিউটার সাটিফিকেট) জাল সনদ দিয়ে এখন পর্যন্ত চাকুরীরত আছেন এবং সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ও বেতন-ভাতাদি ভোগ করে যাচ্ছেন।

এছাড়াও ওই মাদ্রাসায় সরকারের পারফরম্যান্স বেজড গ্র‍্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস স্কিমের আওতায় ৫ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান পেয়েছে। কিন্তু শিক্ষকদের অংশের টাকা বাদে সমস্ত টাকা অধ্যক্ষ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ভূয়া ভাউচার তৈরি করে বরাদ্দের সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করে। বিগত কয়েক বছরে ধর্মপুর-গোয়ালভিটা হোসেনিয়া আলিম মাদ্রাসার   ম‍্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুল বারিক ও অধ‍্যক্ষ মোঃ আনোয়ার হোসেন ও শিক্ষক- কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা করেছে। ওই মাদ্রাসায় যোগদানের পর থেকে সে নিয়োগ বাণিজ্য করে আসছেন, নিয়োগ বাণিজ্যের প্রমাণ মিলবে তাদের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব নাম্বার জমিজমার তথ‍্য  যাচাই করলে।

শুধু তাই নয়, ঐ মাদ্রাসার ধানী জমি প্রায় আঠারো বিঘা,এবং ৪৫ শতাংশের একটি জলাশয় আছে। যা  ধানী জমি থেকে বছরে তিন লক্ষ ষাট হাজার টাকা এবং জলাশয় থেকে এক লক্ষ টাকা আয় হওয়ার কথা থাকলেও মাদ্রাসার কোন উন্নয়ন চোখে পরে নি। বরং শ্রেণি কক্ষের টিন ফুটো হয়ে বৃষ্টির পানি শ্রেণি কক্ষে পরার দৃশ্য চোখে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষক বলেন, প্রকল্পের টাকা থেকে শিক্ষকদের অংশের টাকা দেওয়া হয়েছে তবে শিক্ষার্থীদের টাকা দেওয়ার বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। জাল সনদে চাকরি করা বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। অধ্যক্ষ স্যার ভালো বলতে পারবে।

জাল সনদে চাকরি করার বিষয়ে শিক্ষিকা শাহানাজ পারভীনের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি ঐ মাদ্রাসায় চাকরি করেছি বিষয়টি সত্য। অসুস্থ ছিলাম এই জন্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। মেডিকেল সনদ দাখিল করে ছুটি নিতে পারতেন, জাল সনদ ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে কি চাকরি ছেড়েছেন। অসুস্থতার অজুহাত দিয়ে ফোন টি কেটে দেয়। আরেক শিক্ষিকা আকলিমা খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি জাল সনদের কথা অস্বীকার করে বলেন, প্রতিষ্ঠান যাচাই বাছাই করেই নিয়োগ দিয়েছে। এর বাহিরে কিছু বলতে চাই না।

 অভিযোগ গুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন বলেন, এই অভিযোগ গুলো সত্য নয়। সেই শিক্ষিকাদের কাগজপত্রসহ সরকারি প্রকল্পের টাকা ব্যয়ের ভাউচার এবং মাস্টার রোল দেখতে চাইলে তারা সেগুলো দেখাতে অস্বীকার করেন। 

এ ব‍্যপারে ধর্মপুর-গোয়ালভিটা হোসেনিয়া আলিম মাদ্রাসার সভাপতি মোঃ আব্দুল বারিক বলেন, সব নিয়ম মেনেই করা হয়েছে।

অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান বলেন, ওই মাদ্রাসার অনিয়মের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0