বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁব মননশীল ও সৃষ্টিশীল কর্মের দ্বারা বিশ্বমানবতার মলিনতা ও দীনতা ঘুচিয়ে শুচিশুভ্র বিশ্ববোধ জাগ্রত করেছেন। অপর দিকে কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদ, মানবতাবাদ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি। তাঁদের বিচিত্র সাহিত্যকর্ম বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। অগ্নিবীণা সাহিত্য পরিষদ, বাংলা বিভাগের উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৫তম এবং প্রেম ও দ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫ তম জন্মদিবস উদযাপন করে। সকাল ১০.০০ মিনিটে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী-২০২৪ এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। রাজশাহী কলেজ অডিটোরিয়ামে সকাল ১০.৩০ টায় শুরু হয় রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সভায় উদ্বোধক হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাঃ আব্দুল খালেক।
উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. শিখা সরকার। সভায় সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ ইব্রাহিম আলী ও রাজশাহী কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। আরও উপস্থিত ছিলেন উক্ত অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক প্রফেসর মোহাম্মদ নাফিজ, বিভাগীয় প্রধান, ইংরেজি বিভাগ, সাহিত্য ও সাংস্কৃতি কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোসা. ইয়াসমীন আকতার সারমিন, আলোচক হিসেবে ছিলেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ ইকবাল হোসেন। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। উদ্বোধকের বক্তব্যে প্রফেসর মোহাঃ আব্দুল খালেক বলেন- বাংলা সাহিত্যের দুই মহীরুহ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলাম। বিশ্ব মানবতাবাদ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে রবীন্দ্র-নজরুল দর্শনকে কাজে লাগিয়ে তরুণ প্রজন্ম সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারে। মুখ্য আলোচক হিসেবে প্রফেসর মোহাম্মদ নাফিজ রবীন্দ্র-নজরুল সাহিত্যের সমাজ বাস্তবতার নানামাত্রিক প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেন। মোঃ ইকবাল হোসেন তাঁর বক্তব্যে রবীন্দ্র-নজরুল সাহিত্যের বিচিত্র প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি নজরুলকে শোষিত, অত্যাচারিত, অধিকারবঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত হিসেবে চিহ্নিত করেন। কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ ইব্রাহিম আলী রবীন্দ্র-নজরুল সাহিত্যের তুলনামূলক আলোচনা করেন এবং রবীন্দ্র-নজরুল সাহিত্য পাঠের প্রাসঙ্গিকতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ তাঁর বক্তব্যে বলেন- বর্তমান প্রজন্ম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের আদর্শ থেকে ছিটকে পড়ছে। বর্তমান প্রজন্মকে রক্ষা করতে রবীন্দ্র-নজরুল জীবনী ও সাহিত্য পাঠের বিকল্প নেই। সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. শিখা সরকার বলেন- বাঙালির চিন্তা চেতনাকে সমৃদ্ধ করতে রবীন্দ্র-নজরুল কাব্য ও সাহিত্য পড়া খুব জরুরি। সভাপতি তাঁর বক্তব্যে ব্যক্তি রবীন্দ্র-নজরুলের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও তাঁদের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি সমাপ্ত হয়।