গাজীপুরের শ্রীপুরে তিন তালাকের শরিয়তের বিধান জানতে আসা এক নারীকে হিল্লা চুক্তিতে বিয়ে করে মসজিদের ভেতরেই সহবাস করেছেন ইসমত আলী আশেকী নামের এক মাদ্রাসার মুহতামিম।
জানা গেছে,বিয়ের ১০ মিনিটের মধ্যেই মসজিদটির ইমাম কফিল উদ্দিনের পাহারায় মসজিদের ভেতরেই ঐ নারীর সঙ্গে সহবাস করেন মাওলানা আশেকী। এমনকি বিয়ের এক ঘণ্টার মধ্যেই সহবাসের পর তালাক প্রদান করেন মাওলানা। ঘটনাটি জানাজানি হলে ইমাম কফিল উদ্দিনকে বরখাস্ত করে মসজিদ কমিটি।
অভিযুক্ত ইসমত আলী আশেকী প্রায় ৪ বছর যাবত টেংরা মধ্যপাড়া জামিউল উলুম কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানা'র মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তার বাড়ী ময়মনসিংহের ধোবাউরা উপজেলার কামালপুর গ্রামে এবং মসজিদের ভেতরে যৌন মিলনে সহায়তাকারী ইমামের নাম কফিল উদ্দিন। সে টেপিরবাড়ি পশ্চিম পাড়া আরফান আলী শাহী জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব।
পবিত্র আল্লার ঘরে জঘন্নতম বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং ক্ষোভে ফেটেপড়েন স্থানীয়রা , পরবর্তীতে মসজিদের ইমাম কফিল উদ্দিনকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করে মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিরা।
১৪ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে প্রত্যক্ষদর্শী ঐকাজের পাহারাদার কফিল উদ্দিন (ইমাম) ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
জানাগেছে, নোয়াখালীর এক গৃহবধূকে ঝগড়াঝাঁটির পর তার স্বামী তিন তালাক প্রদান করেন। পরে ঐ নারী তার চাচাতো ভাইকে সাথে নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে আসেন। পরে বিষয়টি নিয়ে আলেমদের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য চাচাতো ভাইকে নিয়ে মুহতামিম ইসমত আলী আশিকী হুজুরের নিকট যান। ঘটনাটি শুনে আশিকী হুজুর বলেন, এই নারীকে অন্যত্র বিয়ে দেয়া ছাড়া পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হবে না।
শরিয়তের ভয়ভীতি দেখিয়ে নারী লোভী মাওলনা আশিকী, মসজিদের ইমামের সহযোগিতায় বিয়ের নাটক করে মসজিদের ভেতরেই ঐ নারীর সাথে সহবাস করেন আশেকী। এ সমময় মসজিদের লাইট নিভিয়ে সহবাসী সহযোগিতা করেন ইমাম কফিল উদ্দিন।
শারীরিক মিলনের পর ঐ অবস্থায় ঐ নারীকে তালাক প্রদান করেন। এবং ওই নারীকে পূর্বের স্বামীর সাথে সংসার করতে পারবে বলে ফতোয়া দেন ইসমত আলী আশেকী।
অভিযুক্ত ইসমত আলী আশেকী, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমার নিকট তারা এসেছিল, পরে অনুরোধ করলে আমি ওই নারীকে আরেকজনের মাধ্যমে হিল্লা বিয়ে দিয়ে হালাল করে দিয়েছি। কার সঙ্গে হালাল করা হয়েছিল ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি একবার বলেন, পরে জানাবো, আমি এখন মাহফীলে যাচ্ছি।
ভুক্তভোগী ঐ নারীর স্বামী বলেন, বিষয়টি আলেমদের সাথে পরামর্শ করলে তারা জানায়, চুক্তিভিত্তিক হিল্লা বিয়ে শরিয়ত সম্মত নয়। এটি প্রতারণার শামিল। ওই নারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে অভিযুক্ত মুহতামিম ও ইমাম প্রতারণা করেছে।
এ বিষয়ে আরফান আলী শাহী মসজিদ কমিটির সভাপতি আলফাজ উদ্দিন স্বপন বলেন, মসজিদ পবিত্র স্থান, এটা শুধু ইবাদতের জায়গা। সেখানে সহবাস করার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি জানাজানি হলে ইমাম কফিল উদ্দিনকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে ।
এ বিষয়ে টেংরা মধ্যপাড়া জামিউল উলুম কওমি মাদ্রাসা'র ম্যানেজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সবাইকে নিয়ে মিটিং করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।