বদলগাছীতে রাস্তার গাছ গোপনে বিক্রি করলেন ইউপি চেয়ারম্যান একেএম রেজাউল কবির পল্টন।
সরকারি রাস্তার গাছ জিম্মায় নিয়ে সেই গাছ গোপনে বিক্রি করে টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার ৭নং আধাইপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান একেএম রেজাউল কবির পল্টন বিরুদ্ধে।
আধাইপুর ইউপির বেগুনজোয়ার গ্রামের পাকা রাস্তার পাশের ৩টি ইউক্যালিপটাশ গাছের ১৫টি গাছের টুকরো ও ৫মন খড়ি জিম্মায় নিয়ে সরকারি কোষাগারে জমা না করে তা বিক্রি করে অর্থ আত্মসাত করেছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
গত ৪ই আগষ্ট ২০২৩ সালে বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের সেনপাড়া-বেগুনজোয়ার পাঁকা সড়কের বেগুনজোয়ার গ্রামের রাস্তা থেকে গাছ গুলো কাটা হয় বলে জানা যায়। ঐ রাস্তার পাশে বসবাসকারী নুফিয়া গাছ গুলো কেটে বিক্রি করার সময় এলাকার লোকজন জানতে পেরে স্থানীয় মেম্বারকে জানালে গাছ গুলো চেয়ারম্যান সাথে কথা বলে মেম্বারের জিম্মায় রাখেন উপজেলা বন বিভাগের মালী নূর মোহাম্মদ।
স্থানীয়রা জানান,বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের কাষ্টডোব- বেগুনজোয়ার পাকা রাস্তার পাশে থেকে বছর খানেক আগে ৩টি গাছ কাটার সময় এলাকার কিছু লোকজন বাঁধা দেয়। গাছ কাটার কথা জানার পরে অত্র এলাকার স্থানীয় মেম্বার আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসে। পরে আধাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের দুইজন গ্রামপুলিশ কমল ও কুদ্দুস ছিলো। পরে বন বিভাগের লোক এসে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে উজ্জল মেম্বারের জিম্মায় গাছ ও খড়ি দেই। এর পরে কি হইছে আমরা জানিনা।
উপজেলা বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৩সালের আগষ্ট মাসের ৪তারিখে বেগুনজোয়ার গ্রামের পাঁকা রাস্তার পাশে থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে অফিসের মালি নূর মোহাম্মদ সেখানে যান। গিয়ে
৩টি ইউক্যালিপটাশ গাছের ১৫টি কাঠের টুকরো ও আনুঃ ৫মন খড়ি স্থানীয় মোমিনুল,আতিকুর,রায়হান, মজনু রহমান এবং উজ্জল সামনে চেয়ারম্যান একেএম রেজাউল কবির পল্টনের সাথে কথা বললে চেয়ারম্যান স্থানীয় মেম্বার আমিনুল হক উজ্জল মেম্বারের নিকট গাছ গুলো জিম্মায় দিতে বলে। বন বিভাগের মালী নূর মোহাম্মদ উপস্থিত ব্যক্তিদের সামনে আমিনুল হক মেম্বারের জিম্মায় গাছ ও খড়ি দিয়ে চলে আসেন।
গাছ কাটা ব্যপারে জানতে চাইলে নুফিয়া বলেন, বাধের নিচে আমার বাপের জমি। আমি ছোট ছোট ইউক্লেটার গাছ লাগাছি। এর মধ্যে আমার বাটা মারা গেলো। আমি তখন ওখান থেকে বৈকন্ঠপুর রিফুজি পাড়ায় চলে আনু। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে টাকা পয়সার দরকার পড়ে। তখন আমি ইউএনও অফিসে যাই। ওখানে উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল সাথে কথা কনু যে গাছ গুলা কাটমু শামসুল আমাক ইউএনওর কাছেও লিয়ে গেছোলো কিন্তু কোন কাগজ দায়নি। জগন্নাথপুরের দেলোয়ারক দিয়ে গাছ গুলো কাটনু। মন্টূর বাটা খরি ব্যাচে ওই আবার মেম্বারের ডাক দিলো। ওখানে কদ্দুস ও কমল গ্রামপুলিশ ছিলো। পরে মেম্বার আসে খড়ি গুলো ভ্যান শুদ্ধা নিয়ে গেছে, অর্ধেক আছলো ওলাও লিয়ে যায়ে বিক্রি করছে।ওখান থেকে নিয়ে যায়ে বিক্রি করে আমাক কডা টাকা দিছিলো। পল্টনের কাছে তিন বার গেছি স্বীকার করেনি,মাহতাবের কাছে গেছি স্বীকার করেনি। উজ্জল মেম্বার গাছ গুলা বিক্রি করে পয়সা কে ভাগ করে খাছে কওয়া পারমো না।
এ ব্যপারে মোবাইল কথা হলে আধাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আহসান উল মাহমুদ জানান, এ ব্যপারে আমি জানিনা। যদি গাছ ইউনিয়ন পরিষদে আনতো তাহলে আমরা রেজুলেশন করতাম।
এ ব্যপারে মোবাইলে বদলগাছী উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা (অঃদাঃ) মইনউদ্দীন কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বেগুনজোয়ার বাঁধের রাস্তায় বন বিভাগ কোন গাছ লাগাইনি। তাই অন্য সব গাছের দ্বায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদ এবং ভূমি অফিসের।
এ ব্যপারে মোবাইলে আধাইপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার আমিনুল হক উজ্জল সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাকে চেয়ারম্যান জিম্মায় নিতে বলেছিলো। এরপর ঐ গাছ চেয়ারম্যান আমাক থেকে নিয়ে গেছে। কি করছে আমি জানি না।
গাছ বিক্রির ব্যপারে জানতে চাইলে আধাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম রেজাউল কবির (পল্টন)বলেন, ওটা মুলতো হচ্ছে ওই যে ফকন্নি না গরীব মানুষ বাড়িতে আডা গাছগুলো কাটছিলো, মাল গুলো মেম্বারের বাড়িতে রাখা হছিলো। সেখানে যেয়ে ইউএনও ওনারা ইয়ে জানায় তখন উপজেলাকে দিয়ে দেয় পরবর্তীতে।
গাছের কোন লিখিত আছে কিনা জানতে চাইলে, বলেন, তা বলা পারবো না। ইউএনও সার নির্দেশ দিছে মেম্বার সাহেব কে। সেটা তালে অফিস দেখতে হবে।
এ ব্যপারে বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান ছনি সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি। আমি ব্যপারটা দেখছি।
গাছ বিক্রির ব্যপারে মোবাইলে নওগাঁ জেলার উপ-পরিচালক(স্থানীয় সরকার) টি.এম.এ মুমিন কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নতুন এসছি। আপনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানান বিষয়টি।