রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫
Logo
The light of education

ভ্যানচালক সেলিম প্রতিবন্ধীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক:

প্রকাশের সময়: ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৯:০৬এএম

ভ্যানচালক সেলিম প্রতিবন্ধীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন
মাদারীপুরে একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন ভ্যানচালক সেলিম শরীফ

মাদারীপুরে একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন ভ্যানচালক সেলিম শরীফ। এখানে ২২৫ জন প্রতিবন্ধী পড়াশুনার পাশাপাশি নানা ধরনের কাজ শিখছেন। শিক্ষার্থীদের তৈরি নানা ধরনের জিনিসপত্র বিক্রি করে লাভের টাকা বিদ্যালয়ের কাজে ব্যয় করা হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে ৬ জন শিক্ষকসহ ১৯ জন কাজ করলেও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রাজৈর উপজেলার শাখারপাড় এলাকার ভ্যানচালক সেলিম শরীফের মেয়ে মরিয়ম। তার মেয়ে প্রতিবন্ধী। সমাজে অনেক ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়েছে সেলিমকে। তার মেয়ের কষ্ট দেখে সেলিম প্রতিবন্ধীদের সমাজের যোগ্য করে তোলার স্বপ্ন দেখেন। এরপরই তিনি একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেন।

এমন চিন্তা থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করে প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থার। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। ২০২০ সালে বিদ্যালয়ের নামে রাজৈর উপজেলার শাখারপাড়ে ২০ শতাংশ জায়গা কিনে স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। একই সঙ্গে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টিকে উন্নতি করতে ভ্যানচালক সেলিম শরীফ আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান।

এ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষা সহায়করা শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া শেখানোর পাশাপাশি নকশি কাঁথা তৈরি, ঠোঙ্গা তৈরি, মোমবাতি তৈরি, এলইডি বাল্ব তৈরি ও সেলাই প্রশিক্ষণের কাজ শেখাচ্ছেন। এখানে প্রতিবন্ধী শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের প্রতিবন্ধী আছেন। কেউ বাক প্রতিবন্ধী, কেউ শারীরিক প্রতিবন্ধী, আবার কেউ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। এছাড়াও অন্যান্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও এই প্রতিষ্ঠান থেকে সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। প্রতিবন্ধীরা যেন সমাজের বোঝা না হয়, তার জন্যই সেলিমের এমন মহৎ উদ্যোগ।

প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ভানচালক মো. সেলিম শরীফ বলেন, বিদ্যালয়টি স্বীকৃতির জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর আমি নিজেও ভ্যান চালিয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আনা নেওয়া করে থাকি। ভ্যান চালানো অর্থ ও বিত্তবানদের দেওয়া অর্থ দিয়ে কোনোরকম বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে আসছি। বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার বলেন, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে বিদ্যালয়টি স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে স্বেচ্ছাশ্রমে ৬ জন শিক্ষকসহ ১৯ জন কাজ করছেন। বিদ্যালয়টির শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

রাজৈর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উপমা ফারিসা বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিবছরই তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকি। জেলা প্রশাসন থেকে তাদের নানা প্রকার সহায়তা করা হয়। উপজেলা প্রশাসন থেকে শিক্ষা বিস্তারে যতটুকু সম্ভব, আমরা ভূমিকা রেখে চলেছি। ভবিষ্যতেও এ স্কুলে সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ে আমরা লক্ষ্য রাখবো। বিদ্যালয়টিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

কট/বি