মঙ্গলবার, জুলাই ১৫, ২০২৫
Logo
Asia's mother angry over acquittal

​তিন আসামির খালাসের রায়ে ক্ষুব্ধ আছিয়ার মা

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক :

প্রকাশের সময়: ১৭ মে, ২০২৫, ০৪:৩৮পিএম

​তিন আসামির খালাসের রায়ে ক্ষুব্ধ আছিয়ার মা
​তিন আসামির খালাসের রায়ে ক্ষুব্ধ আছিয়ার মা

মাগুরায় শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় প্রধান আসামি হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। শনিবার (১৭ মে) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, মাগুরার বিচারক জাহিদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলায় হিটু শেখের স্ত্রী জাহেদা বেগম এবং দুই ছেলে সজীব ও রাতুলকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তবে, তিনজনকে খালাস দেওয়ার রায়ে সন্তুষ্ট নন আছিয়ার মা। রায় ঘোষণা শেষে আদালত প্রাঙ্গণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তিনি।

আছিয়ার মা বলেন, ‘আমি খুশি না। এই মামলায় তিন আসামি খালাস পেল? ওরা তো এ কাজে সহযোগিতা করিছে। আমার বড় মেয়েরে হুমকি দেছে। তারে মারধোর করছে, মুখ আটকায় রাখছে। ওরাও দোষী, ওদেরও শাস্তি হওয়া উচিত।’

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় শিশুটির বোনের শ্বশুরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯/২ ধারায় (ধর্ষণের কারণে মৃত্যুর অপরাধ), শিশুটির বোনের স্বামী ও ভাশুরকে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার দ্বিতীয় অংশ (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এবং বোনের শাশুড়ির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্টের অভিযোগ) অভিযোগ গঠন করা হয়।

রায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মনিরুল ইসলাম মুকুল বলেন, ‘মূল আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে অন্য তিনজনকে কেন খালাস দেওয়া হয়েছে, সেটা পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর আমরা জানতে পারব। সেটা পর্যালোচনা করে উচ্চ আদালতে আপিলের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’

এদিকে রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী (লিগ্যাল এইড অফিস থেকে নিয়োগ দেওয়া) সোহেল আহম্মেদ। তিনি বলেন, ‘তিন আসামিকে যে খালাস দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা খুশি। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণ হয়নি। আর মূল আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না, তা তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ৬ মার্চ মাগুরা সদর উপজেলার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় ১১ বছরের শিশু আছিয়া। সেখানেই সে ধর্ষণের শিকার হয়। গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতাল এবং পরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ আছিয়া মারা যায়।

এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র জনরোষ সৃষ্টি হয়। বিচারের দাবিতে স্থানীয়রা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। দীর্ঘদিন ধরেই মামলাটি আলোচিত ছিল।

সবশেষে, গত মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। তার আগে, গত ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ২৩ এপ্রিল চার্জ গঠনের মাধ্যমে মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। মাত্র ২৫ কার্যদিবসের মধ্যেই রায় ঘোষণা হলো।