জয়পুরহাট সদর উপজেলায় দিনমজুর নুরুল হক হত্যা মামলার ৯ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুইজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- জয়পুরহাট সদর উপজেলার সোটাহার ধারকী গ্রামের আ. রউফ, রুহুল আমিন, আলী হোসেন, খোকন হোসেন, বেলাল হোসেন, রোকন হোসেন, বাবু হোসেন, মিজানুর রহমান ও সিরাজুল। আর খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- ক্ষেতলাল উপজেলার তিলাবদুল গ্রামের সানোয়ার হোসেন ও সদরের সোটাহার ধারকী গ্রামের কেতাব্বর। রায় প্রদানের সময় মামলার সকল আসামি উপস্থিত ছিলেন।
আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাট সদরের হিচমী গ্রামের নুরুল হক ওই গ্রামের আমানুল্লাহর বেতনভুক্ত বাৎসরিক চুক্তিতে দিনমজুর ছিলেন। ২০১৩ সালের ১ নভেম্বর নুরুল হক অন্য দিনমজুরদের নিয়ে হিচমী মাঠে আমানুল্লাহ ও তার ভাই-বোনদের জমিতে ধান কাটতে যান। এ সময় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষরা দলবদ্ধভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা নুরুল হককে আঘাত করেন। এতে নুরুল হক গুরুতর আহত হলে প্রথমে তাকে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরুল হক মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে থানা পুলিশের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মমিনুল হক ২০১৪ সালের ৩০ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বিচারক আজ এই রায় দেন।
এই মামলা রাষ্ট্রপক্ষে পরিচালনা করেন জজকোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল, সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) গোকুল চন্দ্র মন্ডল, শামীমুল ইসলাম শামীম ও শামসুল ইসলাম বুলবুল। আর আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ছালামত আলী, হেনা কবির, শাহনুর রহমান শাহিন ও সুলতান আলম মোল্লা।