আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, রবিবার, মে ১৯, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Cultivation of crops by mulching method

জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব মালচিং পদ্ধতিতে ফসল চাষ

Bijoy Bangla

সৈকত সোবাহান, বদলগাছী, নওগাঁ

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৪:৩৬ পিএম

জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব মালচিং পদ্ধতিতে ফসল চাষ
দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব মালচিং পদ্ধতিতে ফসল চাষ। ছবি: বিজয় বাংলা নিউজ

মালচিং পদ্ধতিতে হচ্ছে নিরাপদ সবজি চাষের একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। মালচিং এসেছে মালচ শব্দ থেকে যার অর্থ হচ্ছে মাটি ঢেকে দেয়া। বর্তমানে লাভজনক এই পদ্ধতিতে নওগঁার বদলগাছীতে উচ্চমূল্যের ফসল চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। পিকেএসএফ-এর অর্থায়ন ও কারিগরি সহযোগিতায় স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী এই পদ্ধতি ব্যস্তবায়ন করছে। সরকার আরো সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এলে একদিন পরিবেশবান্ধব এই মালচিং পদ্ধতিতে নিরাপদ সবজি চাষ জেলাজুড়ে বিস্তার লাভ করবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।


দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব মালচিং পদ্ধতিতে ফসল চাষ। ছবি: বিজয় বাংলা নিউজ

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বদলগাছী উপজেলার জগন্নাথপুর, বসন্তপুর, পাহাড়পুর, দোনোইল গ্রামের মাঠে মালচিং পেপারে চাষ করা হচ্ছে ক্যাপসিকাম, টমেটো, শশা, মরিচ, ষ্ট্রবেরী, বেগুন, করলাসহ নানা সবজি। এমন পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হয়ে অন্যান্য চাষীরাও ফসল চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন। মূলত রবি মৌসুমে জমিতে পানির স্বল্পতা থাকায় এই মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে কৃষকরা অল্প পরিশ্রম, সেচ, খাদ্য ও কীটনাশক ব্যবহার করে ফসলের দ্বিগুন উৎপাদন পেয়ে লাভবান হওয়ায় বদলগাছীসহ সদর উপজেলার অনেক কৃষকরা মৌসুমীতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে মালচিং পদ্ধতিতে ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বর্তমানে মৌসুমীর তত্ত্বাবধানে ২২জন কৃষক মালচিং পদ্ধতিতে প্রায় ৩৫বিঘা জমিতে উচ্চমূল্যের ফসলসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করছেন। মালচিং পদ্ধতিতে কীটনাশক ও সারের ব্যবহার কম হওয়ায় ভোক্তারা পাচ্ছেন নিরাপদ সবজি অপরদিকে দূষনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে পরিবেশ। প্রতিনিয়তই মালচিং পদ্ধতি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ কৃষকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

 বদলগাছী উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের ক্যাপসিকাম চাষী নিলুফা ইয়াসমিন জানান, প্রথমে তিনি ইউটিউবে এই মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। এরপর স্বামীসহ মৌসুমীতে প্রশিক্ষণ নিয়ে ১২শতক জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন। বর্তমানে তিনি প্রতি কেজি ক্যাপসিকাম ২শত থেকে ২৫০টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষে খরচ অনেক কম হওয়ার কারণে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব। তাই আগামীতে তিনি আরো বেশি পরিমাণ জমিতে এই পদ্ধতিতে অন্যান্য সবজি চাষ করবেন। 


দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব মালচিং পদ্ধতিতে ফসল চাষ। ছবি: বিজয় বাংলা নিউজ

একই এলাকার আরেক চাষী ইবনে সাবিত বলেন, তিনি মালচিং পদ্ধতিতে শশা ও করলা চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছেন। এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ার কারণে ফলনও বেশি পাওয়া সম্ভব। তাই আগামী তরমুজের মৌসুমে তিনি মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে তরমুজসহ অন্যান্য ফসল চাষ করবেন বলে জানান।   

মৌসুমীর কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান (আরিফ) বলেন, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি বাণিজ্যকরণ পদ্ধতি হিসেবে মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে আসছেন। কৃষকরা যেন কম সময়ে, কম পরিশ্রমে ও অল্প খরচে দামী ফসলগুলো চাষ করে দ্বিগুন পরিমাণ নিরাপদ সবজি উৎপাদনের মাধ্যমে অধিক লাভবান হতে পারেন মূলত সরকারের সেই পদক্ষেপকে বাস্তবায়ন করতেই এমন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী। মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষের ফলাফল অনেক ভালো হওয়ার কারণে প্রতিদিনই আগ্রহী কৃষকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্রুতই এলাকাজুড়ে মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ ব্যাপক হারে বিস্তার লাভ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। 


দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব মালচিং পদ্ধতিতে ফসল চাষ। ছবি: বিজয় বাংলা নিউজ

বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাবাব ফারহান বলেন, সবজি চাষের উপজেলা হিসেবে খ্যাত বদলগাছী উপজেলার কৃষকদের কাছে এই মালচিং পদ্ধতি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। দেশের কৃষি ও কৃষকদের আধুনিকরন করতে এমন উন্নত কৃষি প্রযুক্তির কোন বিকল্প নেই। তাই সরকারের পাশাপাশি মৌসুমীর মতো অন্যান্য উন্নয়ন সংস্থাগুলো যদি দেশের কৃষিকে আধুনিকায়ন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসে তাহলে দেশের কৃষিকে অল্প সময়ে আরো অনেকদূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। 


google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0