আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, মঙ্গলবার, মে ১৪, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Cultivation of cumin seeds

নওগাঁর জহুরুল ইসলাম ইউটিউব দেখে জিরা চাষে বাজিমাত

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক:

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০৬:৩৪ পিএম

নওগাঁর জহুরুল ইসলাম ইউটিউব দেখে জিরা চাষে বাজিমাত
নওগাঁয় পরীক্ষামূলক জিরা চাষ করেছেন জহুরুল ইসলাম।...সংগৃহীত ছবি

প্রায় সবধরনের রান্নায় মসলা হিসেবে জিরার বহুল ব্যবহার রয়েছে। তবে দেশে জিরার চাষ না হওয়ায় পুরোটাই আমদানি করতে হয়। আর এ আমদানি নির্ভরতা কমাতে এবার নওগাঁয় পরীক্ষামূলক জিরা চাষ করেছেন জহুরুল ইসলাম। তিনি জেলার রানীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের শিয়ালা গ্রামের বাসিন্দা।

কথা বলে জানা যায়, বরাবরই নতুন নতুন ফসল চাষে আগ্রহী জহুরুল ইসলাম। জিরার বাজারমূল্যের কথা চিন্তা করে তিনি মসলাজাতীয় এ ফসল চাষের চিন্তাভাবনা শুরু করেন। এরপর ইউটিউবে জিরার চাষপদ্ধতি নিয়ে ভিডিও দেখতে থাকেন। একপর্যায়ে চাষপদ্ধতি শিখে গেলেও বিপত্তি বাধে বীজ নিয়ে। কারণ, আমাদের দেশে যেসব জিরা পাওয়া যায় তা সাধারণত অনেক পুরোনো হয়ে থাকে। সেখান থেকে গাছ জন্মায় না।

ভারত থেকে বীজ আনার সিদ্ধান্ত নেন জহুরুল ইসলাম। এরপর অনলাইনে খোঁজ নিয়ে এক হাজার ১০০ টাকায় আধা কেজি বীজ সংগ্রহ করেন। প্রথমে কয়েকটি বীজ পরীক্ষা করে দেখেন যে সবগুলো থেকেই গাছ জন্মেছে। এরপর তিনি আট শতক জমি প্রস্তুত করে ওই আধা কেজি বীজ বপন করেন।

বর্তমানে জহুরুলের ক্ষেতভর্তি জিরা গাছ। কিছু গাছে ফুল এসেছে। আবার কিছু গাছে জিরার দানা দেখা যাচ্ছে। পরীক্ষামূলক জিরা চাষে তিনি সফলতা পাওয়ায় স্থানীয় অন্য কৃষকদের মধ্যেও এ অর্থকরী ফসল চাষের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

জানতে চাইলে জিরা চাষি জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন সবজি চাষ করি। জিরার দামের কথা চিন্তা করে ভাবলাম যে এটি চাষ করতে পারলে বেশ লাভবান হওয়া যাবে। বিদেশ থেকে আমদানিও কমানো যাবে। তাই ইউটিউবে জিরা চাষ বিষয়ে ভিডিও দেখা শুরু করি। একপর্যায়ে চাষপদ্ধতি শিখে ফেলি। তবে বীজ সংগ্রহ করতে গিয়ে বেশ হিমশিম খেতে হয়। অবশেষে জয়পুরহাটের এক আমদানিকারকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারত থেকে আধা কেজি বীজ সংগ্রহ করি।’

তিনি বলেন, ‘এখন ক্ষেতের দিকে তাকিয়ে নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছি। আমার ধারণার চেয়েও ভালো জিরা হয়েছে। আট শতক জমিতে অন্তত ১২-১৫ কেজি জিরা উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। প্রতিকেজি জিরার মূল্য এক হাজার টাকা ধরলেও আমি এখান থেকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা পাবো। অথচ জিরা চাষে বীজ সংগ্রহ থেকে এ পর্যন্ত আমার খরচ হয়েছে মাত্র দুই হাজার টাকা।’

একই গ্রামের কৃষক আজিজুল হক বলেন, ‘আমাদের এলাকায় এর আগে কেউ জিরা চাষ করেনি। জহুরুল ভাইয়ের জিরা চাষ দেখে মনে হয়েছে যে তার টাকাগুলো হয়তো নষ্ট হবে। কিন্তু এখন এত সুন্দর জিরা হয়েছে যে এলাকার সবাই অবাক। তিনি ভালো ফলন পেলে ভবিষ্যতে আমরাও চাষ করবো।’

রানীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা হক বলেন, জহুরুল ইসলাম ভারত থেকে বীজ সংগ্রহ করে জিরা চাষ করেছেন। তার জিরা চাষে কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক নজর রাখছে। আমরা দেখেছি তার জিরা গাছের স্বাস্থ্য বেশ ভালো রয়েছে। এখন জিরার ফুল দেখা যাচ্ছে। তিনি জিরা চাষে সফল হলে আমরা এটিকে অন্য কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।



google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0