আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, বুধবার, মে ১১০, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Garlic farmers in Baghar Char area

লোকসানের শঙ্কা কাটিয়ে খুশি বাঘার চরাঞ্চলের রসুন চাষীরা

Bijoy Bangla

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫ মার্চ, ২০২৪, ১০:১৯ পিএম

লোকসানের শঙ্কা কাটিয়ে খুশি বাঘার চরাঞ্চলের রসুন চাষীরা
লোকসানের শঙ্কা কাটিয়ে খুশি বাঘার চরাঞ্চলের কৃষকেরা

আগে ১২৫ টাকা দরে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হলেও এখন প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০শ’ টাকা দরে। রসুনের ভালো দাম পেয়ে লোকসানের শঙ্কা কাটিয়ে খুশি কৃষকেরা। হাটবাজারে বিক্রির ঝুটঝামেলা এড়াতে, খেতেই রসুন বিক্রি করছেন কৃষকরা। এতে পরিবহন খরচ ও হাটবাজারের হাসিল বেঁচে যাওয়ার পাশাপাশি ঝক্কি-ঝামেলা থেকেও রেহাই পাচ্ছেন কৃষকরা। 

শুক্রবার (১৫-০৩-২০২৪) রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলের কালিদাশখালি, পলাশিফতেপুর ও গড়গড়িসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, খেত থেকে রসুন তুলছেন কৃষক ও শ্রমিকেরা। সেসব রসুন কিনে বস্তায় ভরে খেতেই  স্তুপ করে রাখছেন ব্যবসায়ীরা। 

চরকালিদাশখালি গ্রামে খেতে কেনা রসুন বস্তায় ভরে খেতে স্তুপ করে রাখছিলেন দাদপুর গ্রামের জাহের ব্যাপারি। তিনি জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে রসুন কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করেন। প্রথমে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সেসব এলাকার রসুনের দর জেনে নেন। এরপর চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই দামের চেয়ে কিছুটা কমে খেত থেকেই রসুন কেনেন। পরে তা চাহিদামতো পাঠিয়ে দেন। এতে রসুন পরিবহনের খরচ ও লাভের টাকা উঠে যায়।

কালিদাশখালি গ্রামের কৃষক আলাউদ্দীন বয়াতি বলেন, মৌসুমের শুরুতে রসুনের দাম পড়ে যায়। এতে লোকসানের শঙ্কার মধ্যে পড়েন রসুন চাষিরা। কিন্তু এখন সেই শঙ্কা কেটে গেছে। বাজারে রসুনের দামও ভালো। তাই খেত থেকেই রসুন বিক্রি করছেন। এতে বাজারে নিয়ে যাওয়ার খরচটাও সাশ্রয় হচ্ছে।

মোঃ ইসলাম নামে অপর চাষি বলেন, লোকসানে পড়লে সেই ফসল আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় চাষিরা। এবার আমরা রসুনের লোকসানের ভয়ে ছিলাম। এখন সেই ভয় কেটে যাচ্ছে।

এসব চাষিরা বলেন, দুই বছর ধরে এভাবেই খেত থেকে রসুন বিক্রি করছেন। এবার খেতেই প্রতি কেজি রসুুন ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর আগে প্রতি মণ রসুন হাটবাজারে নিতে পরিবহন খরচ হতো কমপক্ষে ১৫-২০ টাকা। হাটবাজারের ইজারাদারদের দিতে হতো মণপ্রতি ১০ টাকা। খেতেই রসুন বিক্রি করায় পরিবহন খরচ ও বাজারের খাজনা বেঁচে যাচ্ছে। ১বিঘা রসুন আবাদে সেচ,সার,বীজ ও শ্রমিকসহ খরচ হয়েছে ১লাখের বেশি। প্রতি বিঘায় উৎপাদন হচ্ছে ৪০ মণ। পাইকারি ৪হাজার টাকা মণ হিসেবে ১বিঘার রসুন বিক্রি হচ্ছে ১লাখ ৬০ হাজার টাকা। খরচবাদে প্রতি বিঘায় লাভ হচ্ছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। গড়গড়ি গ্রামের মুকুল জানান, ৯কাঠা জমি থেকে ১৮ মণ রসুন উত্তোলন করেছেন। বিক্রি করেছেন ৭২ হাজার টাকা।

 বাঘা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মোতলেব হোসেন জানান,প্রতিকেজি রসুন বিক্রি করছেন ১৪০ টাকা কেজি দরে। পাইকারদের কাছ থেকে কেনেছেন ১২৫ টাকা কেজি দরে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বাঘা উপজেলায় গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে রসুন আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৯৩৪ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ দশমিক শুন্যে ৪ মেঃটন। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৭৮১ হেক্টর জমিতে। উৎপাদ হয়েছিল৮২৫৮ মেঃটন। ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৭৯৮ মেট্রিক টন।

কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বাজার উঠা নামার কারণে অনেক সময় কৃষকরা ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। খেত থেকেই ফসল বিক্রি হওয়ায় কৃষকেরা উপকৃত হচ্ছেন। কৃষকদের প্রোণাদনা সহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। এতে তারা কৃষিকাজে আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

বিবিএন/১৫ মার্চ/ এসডি

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0