আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, শনিবার, মে ১৮, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

The joy of Paradise on Friday

জুমার দিনে জান্নাতিদের আনন্দ যেমন হবে

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক:

প্রকাশিত: ০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০৯:৫০ এএম

জুমার দিনে জান্নাতিদের আনন্দ যেমন হবে
---- সংগৃহীত।

জুমার দিনের ফজিলত এবং এ দিনের শ্রেষ্ঠত্ব হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত। সপ্তাহের এই দিনটি অন্যান্য দিনগুলোর মধ্যে বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে। দিনটি পৃথিবীবাসীর জন্য যেমন বিশেষ ফজিলত ও আনন্দের তেমনি ফজিলতপূর্ণ জান্নাতবাসীদের জন্য, জান্নাতবাসীদের জন্য এ দিনটি মহা আনন্দ ও বিশেষ প্রাপ্তির দিন। 

জান্নাতে প্রতি জুমার দিন বিপুল আনন্দ ও প্রাপ্তির সমাহার ঘটবে। আল্লাহ তায়ালার বিশেষ ব্যাবস্থাপনায় নবী-রাসূল, নেককার বান্দাগণের মিলন-উৎসব হবে। সর্বোপরি জান্নাতিরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দীদার লাভে ধন্য হবে, যা জান্নাতের সর্বোচ্চ নেয়ামত। তাই ফিরিশতারা জুমার দিনকে স্মরণ করেন ‘ইয়াউমুল মাযীদ’ তথা অনন্য প্রাপ্তিদিবস নামে। 

এ বিষয়ে হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

জিবরীল আলাইহিস সালাম আমার কাছে এসেছেন শুভ্র আয়নার মত একটা জিনিস নিয়ে। আয়নাটিতে একটি কালো দাগ। আমি বললাম, এটা কী?

জিবরীল আলাইহিস সালাম বলেছেন, এটি হলো জুমার দিন। এ দিনকে আল্লাহ তায়ালা আপনার এবং আপনার উম্মতের জন্য ঈদের দিন বানিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং আপনারা ইহুদী ও নাসারা থেকে অগ্রগামী। (তাদের বিশেষ ইবাদতের দিন যথাক্রমে শনিবার ও রবিবার, যা জুমার দিনের পরে আসে।) এই দিনে একটা সময় আছে, যে সময় বান্দা আল্লাহর কাছে যে কল্যাণই প্রার্থনা করে আল্লাহ তাকে তা-ই দান করেন।

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, জুমার দিনকে কালো দাগ দিয়ে চিহ্নিত করা হল কেন?

জিবরীল আলাইহিস সালাম জবাব দিয়েছেন, এই যে কিয়ামত দিবস তা এ দিনেই সংঘঠিত হবে। আখেরাতে জুমার দিনকে আমরা ‘ইয়াউমুল মাযীদ’  নামে স্মরণ করব। 

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, ‘ইয়াউমুল মাযীদ’ কী?

জিবরীল আলাইহিস সালাম উত্তর দিয়েছেন, জান্নাতে আল্লাহ তাআলা প্রশস্ত ও সুগন্ধময় একটা উপত্যকা বানিয়েছেন এবং এতে তিনি শুভ্র মেশকের একাধিক টিলা স্থাপন করেছেন। জুমার দিন এলে আল্লাহ তাআলা এ উপত্যকায় অবতরণ করবেন। তখন সেখানে নবীগণের জন্য স্বর্ণের মিম্বরসমূহ রাখা হবে, শহীদগণের জন্য মুক্তার অনেক চেয়ার পাতা হবে এবং জান্নাতি হুরেরা আপন আপন কক্ষ থেকে অবতরণ করবে। এরপর সকলে মিলে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা ও মাহাত্ম্যের স্তুতি গাইতে থাকবে।

জিবরাঈল আলাইহিস সালাম আরও বলেন, এরপর আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করবেন, (হে ফেরেশতারা!) আমার বান্দাদের (বিশেষ পোশাক) পরিধান করাও। সে অনুযায়ী তাদের সজ্জিত করা হবে।

তখন আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দেবেন, আমার বান্দাদের জন্য (বিশেষ) খাদ্য পরিবেশন কর। আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক তাদের জন্যই বিশেষ ভোজনের ব্যবস্থা করা হবে।

এরপর আল্লাহ তায়ালা বলবেন, আমার বান্দাদের সামনে (বিশেষ) পানীয় উপস্থিত কর। সে হিসাবে তাদের সামনে পানীয় পরিবেশন করা হবে। এরপর আল্লাহ তায়ালার আদেশ, আমার বান্দাদের আতর-খোশবু লাগিয়ে দাও।  তখন তাদেরকে সুরভিত করা হবে।

এবার আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞেস করবেন,  (হে আমার বান্দারা!) তোমরা আমার কাছে কী চাও?

তারা বলবে, হে আমাদের রব! আমরা কেবল আপনার রিযা ও সন্তুষ্টি কামনা করি।

আল্লাহ তায়ালা উত্তর দেবেন, আমি তোমাদের প্রতি রাজি হয়ে গেছি। (তবারানীর বর্ণনায় আছে, অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য এমন এমন নেয়ামতের দ্বার উন্মুক্ত করবেন, যা কখনো কোনো চোখ দেখেনি এবং কোনো হৃদয় কল্পনা করেনি।)

তারপর সবাইকে নিজ নিজ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ করবেন। সকলে আপন আপন জান্নাতে চলে যাবে এবং হুরেরা ওইসব কক্ষে আরোহণ করবে, যার প্রত্যেকটিই সবুজ (মূল্যবান রত্ন) পান্না বা লাল ইয়াকুতের তৈরি। (মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদিস, ৪২২৮; মুজামে আওসাত, তবারানী ৩/৫৫, হাদিস, ২১০৫৪)

(বিবিএন/০৯ ফেব্রুয়ারি/এসডি)


google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0