লেবু উপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা। দেশের বেশিরভাগ লেবু উৎপাদন হয় এই উপজেলায়। এখানকার লেবুর চাহিদা দেশজুড়ে। লেবুর মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও লেবুর রাজ্যেই দাম সবচেয়ে বেশি। খুচরায় প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। রমজানে লেবুর চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে ক্রেতাদের অভিযোগ।
আজ শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে শ্রীমঙ্গলের পুরাতন ও নতুন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে আড়তে লেবু নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। সর্বোচ্চ দরদাতারা লেবুবোঝাই গাড়ি গন্তব্যে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
পাইকারি বাজারে হালি ৪০-৬০ টাকা থাকলেও খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা দরে। যা গত বছর বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা। রমজানে লেবুর চাহিদা বেশি থাকায় বাজারে পর্যাপ্ত লেবু থাকার পরও চড়া দামে তা বিক্রি হচ্ছে বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেন।
লেবু কিনতে আসা শ্রীমঙ্গলের এক ক্রেতা জানান, ‘আমার পরিবারের সবসময় লেবু লাগে। রমজান মাসে ইফতারের সময় লেবুর শরবত খাই। দুই দিন আগে ভানুগাছ বাজার থেকে লেবু নিয়েছিলাম ৩০-৪০ টাকা হালি। এখন সেই লেবু কিনতে হচ্ছে ১০০ টাকা হালিতে। অবাক লাগে কী করে হঠাৎ এমন দাম বাড়ল।’
আরেক ক্রেতা বলেন, খুচরা বাজার থেকে মাঝারি আকারের এক হালি লেবু কিনেছি ৬০ টাকায়। দুই মাস আগেও এ লেবু পাওয়া গেছে ১০ থেকে ১২ টাকায়।
শ্রীমঙ্গল এলাকার এক লেবুচাষি বলেন, ৮০০ পিস লেবু বিক্রি করেছি আট হাজার ৬০০ টাকায়। প্রতিটার দাম পড়েছে ১০ টাকা ৭৫ পয়সা। সপ্তাহখানেক আগেও এ পরিমাণ লেবু বিক্রি করেছি তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকায়।
লেবু ব্যবসায়ী আত্তর আলী বলেন, লেবুর মৌসুম কেবল শুরু হয়েছে। ফলে বাজারে লেবু কম। রমজান শুরু হওয়ায় কাটতিও বেশি। তাই দাম বেড়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে লেবুর দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। বিভিন্ন বাগান থেকে ঢাকার কাওরান বাজার, কুমিল্লা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে লেবু সরবরাহ করছি আমরা।
মৌলভীবাজার ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, শ্রীমঙ্গলের আড়ত ঘুরে দেখেছি এখানকার লেবু ঢাকাসহ অন্য জেলায় চলে যাওয়ার কারণে এখানে দাম বাড়ছে। দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি অব্যাহত থাকবে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, লেবুর রাজ্যেই হালি ১২০ টাকা। হঠাৎ করেই দাম বেড়েছে লেবুর। শ্রীমঙ্গলে এ বছর ৮০০ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ হয়েছে।
এত লেবু চাষ হওয়ার পর কেন এত দাম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারা বছর লেবুর চাষ হলেও কৃষকরা সারা বছর লাভ করতে পারে না। প্রক্রিয়াজাত করে রাখার ব্যবস্থা থাকলে লেবুর এত দাম থাকত না। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টা অবগত করেছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এখানে প্রক্রিয়াজাতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিবিএন/১৫ মার্চ/এসডি