আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Awarded the Padma

‘বড়লোকের বেটি লো’র স্রষ্টা রতন কাহার পদ্মসম্মানে ভূষিত

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৭:০২ পিএম

‘বড়লোকের বেটি লো’র স্রষ্টা রতন কাহার পদ্মসম্মানে ভূষিত
লোকশিল্পী রতন কাহার | ছবি: সংগৃহীত

ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রীতে ভূষিত হলেন ‘বড়লোকের বেটি লো’ খ্যাত লোকশিল্পী রতন কাহার। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার সিউড়ির বাসিন্দা। 

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) পদ্ম-সম্মান প্রাপকদের তালিকা প্রকাশ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।   

‘বড়লোকের বেটি লো, লম্বা লম্বা চুল’ গানটি শোনেন নি-বাংলায় এমন মানুষ পাওয়া যাবে না বললেই চলে। কিন্তু অনেকেই জানেন না—এই গানের নেপথ্যে রয়েছেন কে? মূলত, শিল্পী স্বপ্না চক্রবর্তীর কণ্ঠেই জনপ্রিয় হয় এই গান। পরে ২০২০ সালে জনপ্রিয় র‍্যাপার বাদশা এ গানের কিছু অংশ গাইলে পুনরায় আলোচনায় আসে। তবে এই গানের মূল স্রষ্টা রতন কাহার সবসময়ই প্রচারের আলোর বাইরে ছিলেন। এমন কী, এই গানের হাজার রিমেক বা রিমিক্স হলেও স্রষ্টাকে কেউ মনে রাখেনি। অবশেষে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেন রতন কাহার। ভূষিত হলেন ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে।

ভাদু গান গেয়েই পথ চলা শুরু রতন কাহারের। ১৯৭২ সালে তার গান প্রথম রেকর্ড হয় রেডিওতে। জানা যায়, পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছিলেন ৭৭ টাকা। টুসু, ঝুমুর এবং আলকাব গানে সিদ্ধহস্থ রতন কাহার এ পর্যন্ত ২৫০ গানটি লিখেছেন। প্রায় সব গানই শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে তার লেখা অন্যতম জনপ্রিয় গান ‘বড়লোকের বেটি লো’।

‘বড়লোকের বেটি লো’র স্রষ্টা রতন কাহার গানটির নেপথ্যের গল্প বলতে গিয়ে জানান, চাঁদপনা ছোট্ট মেয়েটার লম্বা চুলে লাল ফিতে দিয়ে খোঁপা বাঁধতে বাঁধতে নিজের ট্র্যাজিক জীবনের কাহিনি শোনাচ্ছিলেন এক কুমারী মা (পতিতা)। পিতৃপরিচয়হীন নিজের একরত্তি মেয়েটা সম্পর্কে কথায় কথায় বলেছিলেন, ‘এই যে এত্ত চাঁদ রূপ মেয়ের, হবে না কেনে? ই বড়লোকের বিটি আছে বটেক।’ এই গল্প থেকেই এরপর জন্ম নেয় ‘বড়লোকের বিটি লো’ গানটি। ১৯৭২ সালের সেই তরুণ শিল্পী রতন কাহার এখন অশীতিপর। 

‘বড়লোকের বিটি লো’ গানটির প্রচার-প্রসার নিয়ে রতন কাহার আরও বলেন, ‘যতদূর মনে পড়ে বড়লোকের বিটি লো গানটি আমি প্রসার ভারতীতে গেয়েছিলাম। পরে আমি গানটি আনন গোষ্ঠীর রাজকুমার সাহাকে দিয়েছিলাম। তারা সমবেতভাবে গানটি গাইতেন, সেখান থেকেই গানটি ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্বপ্না চক্রবর্তী আমার খাতা থেকে গানটি লিখে নিয়ে যান। ১৯৭৬ সালে তিনি গানটি রেকর্ডও করেন। তবে সেখানেও আমার লেখা গান ও সুরের কথা স্বীকার করা হয়নি। কোনও কৃতিত্ব দেওয়া হয়নি।

এ নিয়ে রতন কাহার অভিমানের সুরে বলেন, ‘অনেকেই আমার লেখা ও সুর করা গান নিয়ে নিজের নামে লিখেছেন। আমি গরিব, অসহায়। লোকে বেইমানি করলে আমি কী করবো! আমরা মাটির গান লিখি, তবে অনেকেই আমাদের সম্মান দেন না।

পদ্মসম্মান পাওয়ার খবরে খানিকটা আবেগতাড়িত শিল্পী। গণমাধ্যমকর্মীরা অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার খুব ভালো লাগছে। সবাই আমায় এত ফোন করছে, খুব ভালো লাগছে। এর মতো ভালো আর কী হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কিছু না দিলেও, ভারত সরকার আমায় এভাবে সম্মানিত করেছে—এর জন্য আমি খুবই গর্বিত। আমার জীবন ধন্য।

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0