আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, সোমবার, মে ২০, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

The real cause of the Bailey Road fire

জানা গেল বেইলি রোডে আগুন লাগার আসল কারণ

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক:

প্রকাশিত: ০৮ মার্চ, ২০২৪, ০৫:২৪ পিএম

জানা গেল বেইলি রোডে আগুন লাগার আসল কারণ
জানা গেছে, ‘চুমুক’ নামের চা-কফির দোকান থেকেই মূলত আগুনের সূত্রপাত।.....সংগৃহীত ছবি

বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুন লাগার আসল কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। জানা গেছে, ‘চুমুক’ নামের চা-কফির দোকান থেকেই মূলত আগুনের সূত্রপাত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, সেখানে গ্যাসের উপস্থিতি থাকায় আগুন দ্রুত পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ভবনে জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি না থাকায় মানুষ চেষ্টা করেও বের হতে পারেনি।

বেইলি রোডে গত বৃহস্পতিবারের আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ঢাকার রমনা থানায় শনিবার হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার ভবনটির ব্যবস্থাপক মুন্সি হামিমুল আলমসহ চারজনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, চুমুক নামের দোকান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে দুই দোকানমালিক আনোয়ারুল হক ও শফিকুর রহমান জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। আগুন লাগার পর তাদের দোকানের কর্মীরা ফায়ার এক্সটিংগুইসার (আগুন নেভানোর সরঞ্জাম) ব্যবহার করে নেভানোর চেষ্টা করেন।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, চুমুক নামের দোকানটির চুলা থেকে আগুন লেগেছে। তদন্ত কমিটি এখন পর্যন্ত ১০ জনের বেশি মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সংকটকালে ব্যবস্থাপনা) খুবই দুর্বল। কোনো ঘটনা ঘটলে উৎসুক জনতার ভিড়ের কারণে কাজ করা যায় না।’

এদিকে বেইলি রোডের আগুনটির সূত্রপাত ইলেকট্রিক কেতলি ও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তবে এখনো শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায়নি আসলে আগুনের সূত্রপাত কোথা থেকে হয়েছে। এজন্য সঠিক তদন্তে কাজ করছে সিআইডি।

সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, রাজধানীর বেইলি রোডে ভবনে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস যখন সব কাজ শেষ করে, আগুন নেভায়, তখন সিআইডির একাধিক টিম সেখানে কাজ করে। সিআইডির ফরেনসিক টিম, ডিএনএ টিম ও কেমিক্যাল টিম কাজ করেছে। ১৫টির বেশি আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা যা জানতে পেরেছি, গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাতের সম্ভাবনাই বেশি। কেমিক্যাল আলামতও পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেখানে বিস্ফোরক জাতীয় কিছু ছিল কি না, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আলামত পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি। প্রতিবেদন পেলেই আগুনের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

বেইলি রোডে আগুনের মামলা সিআইডিতে হস্তান্তর

রাজধানীর বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় করা মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলের ১৫টির বেশি আলামত সংগ্রহ করেছে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ। এর আগে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগ এনে গত ১ মার্চ রাতে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। এতদিন মামলাটি তদন্ত করছিল থানা পুলিশ। তদন্তের শুরুতেই পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে।

চুমুক রেস্তোরাঁয় ৪-৫ দিন আগেও দুর্ঘটনা ঘটেছিল

গ্রিন কোজি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে রেস্তোরাঁ ও ভবন মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ দায়ী উল্লেখ করে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, এখানে একদিনে এই অবস্থা তৈরি হয়নি। ওই ঘটনার ৪-৫ দিন আগেও চুমুক রেস্তোরাঁয় ছোট একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু তা রেস্তোরাঁ বা ভবন মালিকের কাউকে জানানো হয়নি। এটা হচ্ছে অবহেলাজনিত দুর্ঘটনা। আর আমি এটা স্বীকার করি।

ইমরান হোসেন বলেন, রেস্তোরাঁ শিল্পকে নিরাপদ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সরকারের একার পক্ষে এটা কখনোই সম্ভব নয়। দেখা গেছে সরকারের অথরিটিগুলো যাবে, তারা ম্যানেজ হয়ে ফিরে আসবে। অথবা এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে, যাতে আমরা লাইসেন্সই পাব না।

তিনি বলেন, এ অবস্থায় লাইসেন্স না পেলে আন্ডার টেবিল তাদের ম্যানেজের চেষ্টা করব। এতদিন সেটাই হয়ে আসছে। এত বছর ধরে দিনের পর দিন চলে আসছে, তাহলে প্রশাসন ঘুমিয়ে ছিল কেন?

রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব বলেন, আমরা প্রতিটি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরে পাঁচ শতাধিক চিঠি দিয়েছি। কিন্তু চিঠির কোনো সাড়া পাইনি। অর্থাৎ, সরকারও উদাসীন ছিল।

বিবিএন/৮মার্চ / অচ 

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0