pillow made
অনলাইন ডেস্ক: প্রকাশিত: ১৭ মে, ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম
সারাদিনের ক্লান্তির পর বিছানায় শুয়ে পছন্দের বালিশে মাথা রেখে আরামের ঘুম দেন নিশ্চয়ই। ঘুমের জন্য প্রথম শর্ত বালিশটা হতে হবে আরামদায়ক। এক্ষেত্রে আবার একেকজনের একেক বালিশ পছন্দ। কেউ পছন্দ করেন শিমুল তুলার বালিশ, কেউ বা ফোমের। তবে যে বালিশেই ঘুমান না কেন তা হতে হবে আরামদায়ক।
কিন্তু জানেন কি, পৃথিবীতে প্রথম বালিশ কোথা থেকে এলো? অধুনা, যাকে এখন ইরাক নামে চেনেন সবাই, হাজার-হাজার বছর আগে এটি আবার পরিচিত ছিল মেসোপটেমিয়া নামে। ৯ হাজার বছর আগে প্রথম মানুষ সেখানে মাথার বালিশের ব্যবহার শেখে।
তবে প্রাচীন ইতিহাসে বালিশ এখনকার মতো এমন নরম ছিল না। অনেক রকম পরিবর্তন হয়ে বর্তমান আকার ধারণ করেছে বর্তমানের বালিশ। তুলা দিয়ে তৈরি হতো না এখনের মতো। সেসময় বালিশ তৈরি হতো পাথর দিয়ে। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। বিশ্বের প্রথম বালিশটি তৈরি হয়েছিল পাথর দিয়ে।
পাথরের মাঝের অংশটিকে অর্ধেক চাঁদের মতো আকার দিয়ে সেই খাঁজে মাথা রেখে শুতেন মেসোপটেমিয়ার মানুষেরা। প্রাচীন মিশরেও ঠিক এমনই বালিশের নিদর্শন পাওয়া যায়। মিশরের বাসিন্দারা মনে করেন, মানুষের মাথা হলো এক আধ্যাত্মিক অংশ। তাই শক্ত পাথরের অর্ধ চন্দ্র আকৃতির বালিশ ব্যবহার করতেন তারা। যাতে মাথা মাটিতে না ঠেকে যায়।
আবার চীনে যে বালিশ ব্যবহার শুরু হয় তা পাথর দিয়ে নয়, তৈরি হতো কাঠ দিয়ে। সেই বালিশে আবার নক্সা করা থাকত নানান কিছু। চীনারা শক্ত বালিশের ভক্ত ছিল। যদিও তারা নরম টেক্সটাইল বালিশ তৈরির জন্য যথেষ্ট কাজ করেছে। তবে তারা বিশ্বাস করত যে এই ধরনের বিলাসিতা শরীরে শক্তির সঞ্চার করবে এবং পরিবর্তে চীনামাটির বাসন, বাঁশ এবং ব্রোঞ্জ বা জেডের মতো মূল্যবান উপকরণ দিয়ে তৈরি শক্ত বালিশ জনপ্রিয় হতে তাহকে চীনে।
প্রাচীন গ্রিস ও রোমেও বালিশ ব্যবহার করা শুরু হয়েছিল কাপড়ের টুকরো দিয়ে। সেই বালিশে ভরা থাকত পালক ও খড়। তাতে তা নরম হত। তবে গ্রীস এবং রোমের পুরুষরাও বালিশ ব্যবহার করাকে দুর্বলতার লক্ষণ মনে করতেন এবং পরিবর্তে গর্ভবতী নারীদের জন্য নরম কুশন সংরক্ষণ করত। সব মিলিয়ে মাথার বালিশ কিন্তু এক বহু প্রাচীন আবিস্কার। যা সময়ের সঙ্গে বদলেছে।
রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর এবং মধ্যযুগ জুড়ে বালিশের ব্যবহার কম ছিল। কারণ একমাত্র যারা সমাজে ধনী ছিলেন তারা দামি কাপড়ের তৈরি বালিশ ব্যবহার করতেন। এমনকি বালিশকে আভিজাত্যের অংশ ধরা হতো তখন। শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে বড় পরিবর্তন আসে এর।
১৯৬০ এর দশকে যখন পলিয়েস্টার কাপড় উদ্ভাবিত হয় তখন বালিশে আরেকটি বড় পরিবর্তন হয়েছিল। এই সিন্থেটিক কাপড় ব্যবহার করা শুরু হয় বালিশ তৈরিতে। বালিশের ভেতরে দেওয়া হয় ফোম, স্টাইরোফোম পেলেট এবং কুলিং জেল। বালিশকে আরও পরিবেশ বান্ধব করতে এবং ঘুম যেন ভালো হয়, সেই সঙ্গে মাথা এবং ঘাড়ে ব্যথা দূর করতে ভেতরে ভরা হলো বাকউইট হুল এবং শুকনো ল্যাভেন্ডার পড।