He sold his child for treatment
অনলাইন ডেস্ক: প্রকাশিত: ২০ মে, ২০২৪, ১০:০০ এএম
আধমরা অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন আল আমিন। দুই পা অচল হয়ে গেছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পচন ধরেছে। কিছুদিন হাসপাতালে থাকলেও টাকার অভাবে ঠিকঠাক চিকিৎসা নিতে পারেননি। নিরুপায় হয়ে ৩ মাস বসয়ী সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন। স্বামীর অভাব-অনটন আর অসুস্থতায় পাশে থাকলেও দুধের শিশুকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা বেরিয়ে গেছেন বাড়ি থেকে।
আল আমিনের বাড়ি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল ইউনিয়নের বর্নী গ্রামে। আহত হয়ে বিছানায় পড়ে যাওয়ার পর থেকে মানুষের কাছে চেয়ে চেয়ে সংসার চালাচ্ছেন। অসুস্থতার মধ্যেও থাকছেন অর্ধাহারে-অনাহারে। অসহায় এ ব্যক্তির স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাপারে সমাজের বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ভালোই চলছিল ভ্যানচালক আলামিনের সংসার। একদিন বাড়ির পাশের মারামারির মধ্যে পড়ে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। এরপর অন্ধকার নেমে আসে তার জীবনে। বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকার কারণে তার শারীরিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। নিজের চিকিৎসা করাতে কিছুদিন আগে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার এক ব্যক্তির কাছে সন্তানকে বিক্রি করেন ৫০ হাজার টাকায়। কিন্তু বাবার মন তো মানে না! তাই নিজে সুস্থ হয়ে সন্তানকে ফেরত আনতে চান। ফিরতে চান স্বাভাবিক জীবনে। এ ব্যাপারে প্রশাসনও তাকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মিনহাজ উদ্দীন জানান, দেলদুয়ার উপজেলার একজন অসহায় রোগীর সম্পর্কে জানতে পেরেছি। তার দুই পা প্যারালাইজড হওয়ার কারণে পিঠে ঘা হয়ে গেছে। তার জন্য পরার্মশ হলো প্রথমত তাকে যেন জেলার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসন বরাবরই অসহায়, দুস্থ,পীড়িত মানুষকে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম অনুদান ও সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আল আমিনের সুস্থতার জন্য যা করা প্রয়োজন আমরা তা করব।
মানুষ মানুষের জন্য। সমাজের বিত্তবানরা পাশে দাঁড়ালে দীর্ঘদিন ধরে বিছানায় পড়ে থাকা আলামিনও নিশ্চয়ই উঠে দাঁড়াবেন। আবারও ধরবেন সংসারের হাল। আর ছোট্ট শিশু জান্নাতও ফিরে আসবে বাবার কোলে।