বছরখানেক আগে লিভারপুল কোচ ‘আফ্রিকায় একটি ছোট টুর্নামেন্ট’ শব্দগুলো উচ্চারণ করে ব্যাপক জনরোষের সামনে পড়েছিলেন। ইতিহাসের শুরু থেকে আফ্রিকা কিছুটা আড়ালেই ছিল সব সময়। ফুটবলেও যেন খানিক অবহেলার শিকার আফ্রিকান মহাদেশীয় শ্রেষ্টত্বের লড়াই আফ্রিকান কাপ অব নেশন্স। প্রতিযোগিতামূলক এই আসর ঘিরেও মাতামাতি ইউরো বা কোপা আমেরিকার তুলনামূলক কম।
আফ্রিকান কাপ অব নেশন্স ঠিক কতটা প্রতিদ্বন্দ্বীতা এবং বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ তা এর বিজয়ীর তালিকা দেখলে বোঝা যায়। ২০১০ সালের পর থেকে সাত আসরে ৭টি আলাদা আলাদা দল চ্যাম্পিয়ন হয়ে। ৭ আসরের ফাইনালে ১৪ দলের মাঝে কেবল ঘানা এবং মিশরই একাধিকবার ফাইনালে উঠেছে। অন্য সকল সময়েই ফাইনালের দলেও ছিল ভিন্নতা।
আজ থেকে আফ্রিকান দেশ আইভরি কোস্টে আবার শুরু হচ্ছে আফ্রিকান কাপ অব নেশন্সের আসর। দ্বিতীয়বারের মতো আফ্রিকান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের আয়োজন করছে দেশটি। এর আগে ১৯৮৪ সালে প্রথমবার এই প্রতিযোগিতার আয়োজক দেশ হয়েছিল তারা। ২৪ দল নিয়ে এবারের আসরটি মাঠে গড়ানোর কথা ছিল ২০২৩ সালের জুন-জুলাইয়ে। তবে আইভরি কোস্টের প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সেটি পিছিয়ে যায়।
অংশগ্রহণকারী দেশ
এবার ২৪ দল ছয় গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। ৩০ দিন ধরে ৫২ ম্যাচের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হবে শিরোপাভাগ্য। প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল ও তৃতীয় হওয়া চারটি দল উঠবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। এরপর কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। এই দলগুলোকে মূল পর্বে উঠতে খেলতে হয়েছিল বাছাইপর্বের ম্যাচ।
গ্রুপ ‘এ’: আইভরিকোস্ট, নাইজেরিয়া, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, গিনি বিসাউ
গ্রুপ ‘বি’: মিসর, ঘানা, কেপ ভার্দে, মোজাম্বিক
গ্রুপ ‘সি’: সেনেগাল, ক্যামেরুন, গিনি, গাম্বিয়া
গ্রুপ ‘ডি’: আলজেরিয়া, বুরকিনা ফাসো, মৌরিতানিয়া, অ্যাঙ্গোলা
গ্রুপ ‘ই’: তিউনিসিয়া, মালি, দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া
গ্রুপ ‘এফ’: মরক্কো, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, জাম্বিয়া, তানজানিয়া
কে কতবার চ্যাম্পিয়ন
১৯৫৭ সালে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা ছিল আফ্রিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। এখন পর্যন্ত ৩৩ বার মাঠে গড়িয়েছে এ আয়োজন। সর্বোচ্চ সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মিসর। ৫ বার জিতেছে ক্যামেরুন, ৪ বার ঘানা আর ৩ বার নাইজেরিয়া। ২ বার করে জিতেছে আইভরিকোস্ট, আলজেরিয়া ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্র। একবার করে জিতেছে জাম্বিয়া, তিউনিসিয়া, সুদান, সেনেগাল, ইথিওপিয়া, মরক্কো, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কঙ্গো।
যাদের উপর থাকবে নজর
আফ্রিকান এই আসরে অনেকের দিকেই নজর রাখতে হচ্ছে। শিরোপা প্রত্যাশী দলের সংখ্যা নেহায়েত কম না। গতবারের দুই ফাইনালিস্ট মিশর এবং সেনেগাল এবারেও মাঠে নামবে ফেভারিটের তকমা নিয়ে। সঙ্গে বিশ্বকাপে আলো ছড়ানো মরক্কোকেও রাখতে হচ্ছে হিসেবের মাঝে। পিছিয়ে নেই ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়ন আলজেরিয়াও। ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলা উপহার দিয়েছে দেশটি।
এছাড়া নাইজেরিয়া, ঘানা, আইভরি কোস্ট, ক্যামেরুন আছে শিরোপার লড়াইয়ে।
প্রাইজমানি
২০২৪ সালে আফ্রিকান কাপ অব নেশন্সে রেকর্ড ৭০ লাখ ডলার পাবে বিজয়ী দল, যা কিনা আগের আসরের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি। আর রানার্সআপ দল পাবে ৪০ লাখ ডলার।