আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, রবিবার, মে ১২, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

GI certificate of 3 products including Tangail sarees

টাঙ্গাইল শাড়িসহ ৩ পণ্যের জিআই সনদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০২:২৪ এএম

টাঙ্গাইল শাড়িসহ ৩ পণ্যের জিআই সনদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর
টাঙ্গাইল শাড়িসহ ৩ পণ্যের জিআই সনদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর। ছবি: ফোকাস বাংলা নিউজ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর টাঙ্গাইল শাড়ি, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, গোপালগঞ্জের রসগোল্লার জিআই সার্টিফিকেট ও টাঙ্গাইলের শাড়ি হস্তান্তর করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রী পরিষদের সভার শুরুতে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া এই তিন পণ্যের সনদ তুলে দেন শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও সচিব জাকিয়া সুলতানা।

এরপর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেজ ওসমানের কবিতার বই ‘পিতারই প্রতিচ্ছবি’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এসময় সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি ভারত টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর ঝুঁকি বেড়েছে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা, জাতীয় ফল কাঁঠালসহ নানা পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া নিয়ে। এ অবস্থায় প্রতিবেশী দেশ দুটির অভিন্ন ও সমনামের পণ্য যত দ্রুত সম্ভব জিআই সনদভুক্ত করার তাগিদ অর্থনীতিবিদ, জিআই বিশেষজ্ঞ ও অধিকারকর্মীদের। তবে এসব পণ্য জিআই করার ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর গা-ছাড়া ভাব দেখা গেছে। 

ভারতে টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানা মহলে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। পরে দ্রুততার সঙ্গে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাঙ্গাইল শাড়ির জিআইয়ের আবেদন হয় গত মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি। সেদিনই আবেদন গেজেটভুক্ত করতে বিজি প্রেসে পাঠায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি)। প্রতিষ্ঠানটি পণ্যের জিআই সনদ দেয়। 

জিআই পণ্য হিসেবে টাঙ্গাইল শাড়ির গেজেট প্রকাশিত হয়েছে ৮ ফেব্রুয়ারি। গেজেট প্রকাশের পর আইনত দুই মাস অপেক্ষার পর কোনো আপত্তি না এলে এই শাড়ি জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। 

আটটি পণ্য ভারতে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, যেগুলো বাংলাদেশেও আছে। এগুলোর মধ্যে আছে মালদা ফজলি আম, মালদা লক্ষ্মণভোগ আম, মালদা ক্ষীরশাপাতি, নকশিকাঁথা, বাংলার রসগোল্লা, উপাধা জামদানি, গরদ শাড়ি ও সুন্দরবনের মধু।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এমন অনেক পণ্য ও স্থান আছে, যেগুলোর বাংলাদেশের সঙ্গে মিল আছে। এরই মধ্যে আটটি পণ্য ভারতে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, যেগুলো বাংলাদেশেও আছে। এগুলোর মধ্যে আছে মালদা ফজলি আম, মালদা লক্ষ্মণভোগ আম, মালদা ক্ষীরশাপাতি, নকশিকাঁথা, বাংলার রসগোল্লা, উপাধা জামদানি, গরদ শাড়ি ও সুন্দরবনের মধু।

এমন আরও পণ্য আছে, যেগুলোর এখনো জিআই ভারত করেনি। কিন্তু এসব পণ্য উভয় দেশে আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা, জাতীয় ফল কাঁঠাল, সুন্দরবনের গোলপাতা, সুন্দরীগাছ, নানা ধরনের মাছ, চা, পাট, সাতকরা উল্লেখযোগ্য।

দেশে জিআই আইন পাস হয় ২০১৩ সালে। প্রথম জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পায় জামদানি। পরের ১০ বছরে স্বীকৃতি পায় ১১ পণ্য। আর ২০২৩ সালে এক বছরেই ১০ পণ্যের জিআই স্বীকৃতি পায় বাংলাদেশ।

গত বছর ১০ পণ্যের জিআই সনদের পেছনে অনলাইনভিত্তিক উদ্যোক্তাদের সংগঠন ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (ইডিসি) বড় ভূমিকা আছে। জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে সরকারের নানা দপ্তর যখন জিআইয়ের গবেষণার কাজে গাফিলতি করছিল, তখন স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এ বিষয়ে কাজ করেন ইডিসির সদস্যরা। ভারত টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই করার পরও অভিন্ন পণ্য নিয়ে সরকারের দপ্তরগুলোর ঢিলেমি রয়ে গেছে।

এমন আরও পণ্য আছে, যেগুলোর এখনো জিআই ভারত করেনি। কিন্তু এসব পণ্য উভয় দেশে আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা, জাতীয় ফল কাঁঠাল, সুন্দরবনের গোলপাতা, সুন্দরীগাছ, নানা ধরনের মাছ, চা, পাট, সাতকরা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গে উত্তর ও দিনাজপুর নামে দুটি জেলা আছে। সেখানকার লিচুও বিখ্যাত। তবে বাংলাদেশের দিনাজপুরের প্রসিদ্ধ লিচুর জিআই এখনো হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়ে ভারতের আবেদনে বড় ফাঁক হলো, সেখানে টাঙ্গাইল নামে কোনো এলাকা নেই। কিন্তু দিনাজপুরের লিচু নামে যদি ভারতে জিআই হয়ে যায়, তখন জটিলতায় পড়বে বাংলাদেশ। 

আবার বাংলাদেশ ও ভারত, উভয় দেশের মধ্যে পড়েছে সুন্দরবন। ইতিমধ্যে এ বনের মধু জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন করেছে ভারত। কিন্তু সুন্দরবনের আরও অনেক সম্পদ আছে, যেগুলো উভয় দেশেই আছে। যেমন গোলপাতা, সুন্দরীগাছ, নানা ধরনের মাছ। এসব পণ্যও জিআই করার বিষয়ে উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, বাংলাদেশ উভয় দেশের অভিন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে যৌথ মালিকানার বিষয়ে আইন করতে পারে। দ্বিতীয়ত, দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক চুক্তির আওতায় দুই দেশের সমনামের পণ্যের জিআই নিবন্ধন করা যেতে পারে। তৃতীয়ত, পণ্যের উৎস ও এর নিবন্ধন নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লিসবন চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পারে।

বাংলাদেশ ও ভারত কেউই লিসবন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। তবে যৌথ মালিকানা পণ্যের বিষয়ে চুক্তিতে যেতে হলে বাংলাদেশের বিদ্যমান জিআই আইন সংশোধন করতে হবে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0