আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, সোমবার, মে ২০, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Prime Minister

৪৮ সালেই দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নেন বঙ্গবন্ধু

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭ মার্চ, ২০২৪, ০৯:১৮ পিএম

৪৮ সালেই দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নেন বঙ্গবন্ধু
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা নিউজ

•মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে

•দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা 

১৯৪৮ সালে পাকিস্তানিরা বাঙালির মাতৃভাষার অধিকার কেড়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়ার পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, দেশের স্বাধীনতার কথা আপনি কখন থেকে চিন্তা করেন। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘১৯৪৮ সালে যখন মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার পাকিস্তানিরা কেড়ে নিয়েছিলো, সেদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ওদের সাথে আর থাকবো না’।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই কিন্তু স্বাধীনতা। একজন নেতা নিজের জীবনের সব বিসর্জন দিয়ে একটি জাতির জন্য তিনি দিনের পর দিন অধিকার বঞ্চিত-শোষিত মানুষের কথা বলতে গিয়ে বারবার কারাবরণ করেছেন। জেলজুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন। যে লক্ষ্য তিনি স্থির করেছিলেন, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে একটার পর একটা পদক্ষেপ নিয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু চুয়ান্ন সালে নির্বাচনও করেছেন, ছাপ্পান্ন সালে তিনি জাতীয় পরিষদের ছিলেন। নিয়ম মেনেই কিন্তু এগিয়ে গেছেন। একটি লক্ষ্য স্থির রেখে। যেটা কখনো তিনি মুখে উচ্চারন করেননি। কিন্তু একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা বা তাদেরকে সংগঠিত করা, ঐক্যবদ্ধ করা এটা একটি কঠিন কাজ ছিলো। সেই কঠিন কাজ তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে যান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটাই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। যে কাজটা তিনি করতে যেয়েও করতে দেওয়া হয়নি। ১৫ আগস্টে নির্মমভাবে হত্যা করে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। কাজেই এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে। 

শেখ হাসিনা বলেন, যারা জয়বাংলা স্লোগানে বিশ্বাস করে না, ৭ মার্চের ভাষণকে যারা প্রেরণা বলে মনে করে না, তার অর্থ তারা স্বাধীন বাংলাদেশই চায় না। তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। দেশের মানুষের অর্থসামাজিক উন্নতি চায় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পরে এই ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এই ভাষণ বাজাতে গিয়ে আমাদের অনেক মানুষ জীবন দিয়েছে। পৃথিবীর কোনও ভাষণ এতোদিন পর্যন্ত এভাবে মানুষকে প্রেরণা যোগায়নি। পৃথিবীর যত ভাষণই আছে, হয় লিখিত, একবারই সেই ভাষণ দেওয়া হয়েছে। 

কিন্তু ৭ মার্চের ভাষণ ১৫ আগষ্ট জাতির পিতাকে হত্যার পরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ৭ মার্চ, ২৬ মার্চ, ১৫ আগষ্ট এই ভাষণ বাজিয়েছে। এটা করতে গিয়ে অনেকে জেল খেটেছে, অনেকে জীবনটা পর্যন্ত দিয়েছে। কিন্তু তারা থেকে যায়নি। যতই এটাকে নিষিদ্ধ করুক, কিন্তু মানুষের হৃদয় গেঁথে গিয়েছিল। আমি জানি না কেউ হিসাব করতে পারবে কী-না কতদিন কত ঘন্টা এই ভাষণ বাজানো হয়েছে। কত মানুষ এটা শুনেছে। 

এটা পৃথিবীতে একটা দৃষ্টান্ত। বিশ্বের সামরিক-বেসামরিক যত নেতৃত্ব, মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্ধুদ্ধ করেছে, ৭ মার্চের ভাষণ তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। কাজেই এই ভাষণের মধ্য দিয়েই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। সেই দিবসটি আমরা পালন করছি।


শেখ হাসিনা বলেছেন, দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন, তা আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে। যারা জয় বাংলা ম্লোগানে বিশ্বাস করে না, ৭ মার্চের ভাষণকে প্রেরণা বলে মনে করে না, তার অর্থ তারা স্বাধীন বাংলাদেশই চায় না। 

বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না। বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি চায় না। তিনি আরও বলেন, তাদেরকে কেন মানুষ ভোট দেবে। সেই জন্যই তারা বারবার ইলেকশন বানচাল করে কিভাবে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে সেই চেষ্টা করে। অগ্নি-সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি এখনো এই ভাষনের আবেদন আছে। কাজেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবার জন্য, দেশকে উন্নত করবার জন্য, উন্নয়নশীল দেশের পর্যাদা পেয়েছি, সেটা কার্যকর করে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হবে। যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশ যেন গড়তে পারি তার জন্য সকলকে প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হয়, তা না হলে এগিয়ে যাওয়া যায় না। 

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমদে, সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ। 

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম। আলোচনা সভার শুরুতেই আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সম্পাদনায় রচিত ‘বঙ্গবন্ধু থেকে দেশরত্ন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পরিষদের ড. মশিউর রহমান, সালমান এফ রহমান। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড শাম্মী আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আরাফাত আলী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ প্রমুখ।

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0