অভিশ্রুতি নাকি বৃষ্টি খাতুন! দীর্ঘ ১২ দিন পর সেই বিতর্কের শেষ হয়েছে সিআইডির ডিএনএ পরিক্ষার ফলাফলের মাধ্যমে। অবশেষে বৃষ্টির লাশ বুঝে পেলেন বাবা সবুজ শেখ।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরের ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে বাবার কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করে সিআইডি।
সিআইডি ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, ‘গত ২৯ ফেব্রুয়ারি আগুনের ঘটনায় মৃত্যু হওয়া অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের ডিএনএ তার বাবা মায়ের সাথে মিলে যাওয়ায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার পরের দিন বার্ন ইনস্টিটিউটে এসে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ সনাক্ত করেছিল তার বাবা সবুজ শেখ। তবে রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা দাবি করেছিলেন, মৃতার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তিনি রমনা কালি মন্দিরে নিয়মিত আসা যাওয়া করতেন। এবিষয়ে তিনি রমনা থানায় লিখিত ভাবে দাবি করেন ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। এরপর বিজ্ঞ আদালতের সরানপন্ন হয়ে মর্গ থেকে মরদেহের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গতরাতে রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা আবারও লিখিত ভাবে আবেদন করেন, আমার কোন দাবি নাই, মরদেহ প্রকৃত স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হোক।
এই ঘটনায় নিহত নাজমুলের লাশ এখনও পড়ে আছে মর্গে। সে বিষয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নাজমুল নামে মরদেহটির একটি পরিবার দাবিদার। তার মরদেহ থেকে নেয়া ডিএনএ নমুনাটি খুবই জটিল হওয়ায় এখনো পুরোপুরি মিলেনি। একটু সময় লাগবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে বৃষ্টি খাতুনের বাবা সবুজ শেখ বলেন, ‘আল্লাহর কাছে লাখো লাখো শুকরিয়া যে ১১দিন পার হলেও নিজের মেয়ের মরদেহ বুঝে পেলাম। প্রশাসন, সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সঠিক তথ্য যাচাই বাছাই করে আমার সন্তান আমার কাছে ফেরত দিয়েছে।
এসময় কান্নায় ভেঙ্গে পরেন বাবা। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, ‘আজ ১২দিন ধরে ঘুরছি, আমি একটা বাবা মেয়ের লাশ নিতে পারতেছি না। এই দিনগুলা কিভাবে ঘুমাবো কিভাবে থাকবো। তার মা কান্না করতে করতে অসুস্থ হয়ে গেছে। তার বোন গুলো কান্না করতেছে। এই ভোগন্তিতে পরেছিলাম। সব তথ্য যাচাই বাছাই করে আমার সন্তানকে ফেরত পেয়েছি।
বাবা বলেন, ‘তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার খোকশা থানার বনগ্রামে। সেখানে ব্র্যাক স্কুল থেকে পাশ করে হাইস্কুলে ভর্তি হয় বৃষ্টি। গ্রাম থেকে এসএসসি, ও কুষ্টিয়া সরকারী মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে। পরে ঢাকায় ইডেন কলেজে ভর্তি হয়। মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।