আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Ruhul Kabir Rizvi

রিজভীর ওপর এখন বিএনপির শীর্ষ নেতারাই বিরক্ত?

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৬ মার্চ, ২০২৪, ১১:৫২ পিএম

রিজভীর ওপর এখন বিএনপির শীর্ষ নেতারাই বিরক্ত?
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। সংগৃহীত ছবি

রুহুল কবির রিজভী বিএনপির আপসহীন নেতা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু রিজভীর ওপর এখন বিএনপির শীর্ষ নেতারাই বিরক্ত। রিজভীর বাড়াবাড়িতে অতিষ্ঠ বিএনপির নেতারা। বিএনপির চেয়েও তিনি বড় বিএনপি। বিএনপি খালেদা জিয়ার চেয়েও বড় আপসহীন—এরকম একটি মনোভাব দেখাচ্ছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। আর এ কারণেই বিএনপির নেতারা তার ওপর বিরক্ত, ক্ষুব্ধ।

বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা বলছেন, রুহুল কবির রিজভী দলের কোন নীতি, আদর্শ ইত্যাদি মানছেন না। দলের কৌশল সম্পর্কে তার কোন ধারণা নেই। তিনি যা মনে করছেন সেটাই করছেন। যেমন, ধরা যাক ভারতীয় পণ্য বর্জনের বিষয়টি বা ভারতীয় পণ্য আগুন লাগিয়ে দেওয়ার বিষয়টি। রুহুল কবির রিজভীর এই পদক্ষেপ দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল না। একটি শাল বর্জন করতে পারেন একজন রাজনৈতিক নেতা। কিন্তু তিনি সেটি আগুনে পুড়িয়ে দিতে পারেন না। এটি একেবারেই গহিত একটি অপরাধ বলে মনে করছেন বিএনপির বহু শীর্ষনেতা। 

বিএনপির একজন নেতা প্রশ্ন করেছেন যে, দলের কোনো পর্যায়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, বিএনপি ভারতীয় পণ্য পুড়িয়ে ফেলবে। আর এই সিদ্ধান্ত যদি না হয় তাহলে রুহুল কবির রিজভী যদি এটা করেন, তাহলে এটি তার জন্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শুধু তাই নয়, এই শাল পোড়ানোর পরের দিন তিনি বলেছেন যে, বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে সমাদৃত স্লোগান হল ভারতীয় পণ্য বর্জন। 

এ ধরনের বক্তব্য বিএনপির দলীয় অবস্থান কিনা জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, কোনোভাবে এটি দলীয় অবস্থান নয়। বিশেষ করে দলগত ভাবে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ব্যাপারে তারা কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। 

বিএনপির একজন নেতা বলেছেন যে, হ্যাঁ, আমরা ভারতের বাড়াবাড়ি হস্তক্ষেপ এবং আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের পক্ষপাতের সমালোচনা করি। আমরা মনে করি যে, এর ফলে বাংলাদেশের জনগণের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। কিন্তু তাই বলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের মতো কোন সিদ্ধান্ত আমরা গ্রহণ করেনি। 

রুহুল কবির রিজভী শুধু এবারই প্রথম নয়, বিভিন্ন সময়ে তিনি দলের ফোরামের বাইরে গিয়ে নিজে আগ বাড়িয়ে অনেক সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন, যেটি বিএনপির সিদ্ধান্ত নেয়। উদাহরণ হিসাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপিতে কোন পর্যায়ে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি এবং উপজেলা নির্বাচনের কৌশলগত অবস্থান নিয়ে বিএনপিতে আলোচনা হয়েছে এবং বিএনপির বহু উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, যেহেতু আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না, সেজন্য এই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ করা উচিত। এ ব্যাপারে দল এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। কিন্তু রুহুল কবির রিজভী জানিয়ে দিয়েছেন যে, উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে। 

ওই নেতা প্রশ্ন করেন যে, রিজভী কোত্থেকে কী ভাবে এই তথ্য পেলেন? কোন ফোরামে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? এ রকম বহু ঘটনাই ঘটছে যেখানে রিজভী দলের সিদ্ধান্ত বা নীতির তোয়াকা করছেন না। তার যেটি মনে হচ্ছে তিনি সেটি করছেন।

একজন রাজনৈতিক নেতা যতই ত্যাগী হোন না কেন তাকে দলের শৃঙ্খলা মানতে হবে এবং দলের নীতি আর্দশ অনুসরণ করে চলতে হবে। দলের অবস্থান সম্পর্কে তার স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। কিন্তু রুহুল কবির রিজভী বিএনপিতে স্বেচ্ছাচারী স্বাধীন হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছেন। এমনকি দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তিনি বিভিন্ন রকম কাজ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০১৮ নির্বাচনে দল সিদ্ধান্ত নিলেও রিজভী সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। বিএনপির অনেক নেতাই এখন রিজভীর বাড়াবাড়িতে বিরক্ত। রিজভী কি বিকল্প বিএনপি কিনা কিংবা রিজভী খালেদা জিয়া, তারেক জিয়ার চেয়ে বড় নেতা কিনা সেই প্রস্তাব এখন বিএনপির মধ্যেই উঠেছে।

সূত্র: বাংলা ইনসাইডার

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0