আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, সোমবার, মে ২০, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

The rebels took over Myanmar

মিয়ানমারের আরেক শহরের দখল নিল বিদ্রোহীরা

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৫:৩৪ পিএম

মিয়ানমারের আরেক শহরের দখল নিল বিদ্রোহীরা

জান্তা সৈন্যদের সাথে কয়েক সপ্তাহের ভয়াবহ সংঘর্ষের পর চীন সীমান্ত লাগোয়া মিয়ানমারের অস্থিতিশীল উত্তরাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সমন্বেয়ে গঠিত জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। শুক্রবার মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের লাউক্কাই শহরের নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীরা নিয়েছে বলে দেশটির সামরিক বাহিনী ও ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স জানিয়েছে।

বিদ্রোহীদের এই জোট বলেছে, শুক্রবার লাউক্কাই শহরে অবস্থিত সামরিক বাহিনীর আঞ্চলিক সদর দপ্তরের সৈন্যরা বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। এরপর ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স লাউক্কাই শহরের দখল নিয়েছে।

২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর থেকে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে মিয়ানমারের জাতিগত বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী। গত বছরের অক্টোবরে মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএ), তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং আরাকান আর্মি (এএ) যৌথভাবে জান্তাবিরোধী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স গঠন করে। এরপর থেকে জান্তাবাহিনীর সৈন্যদের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে বিদ্রোহীদের এই জোট। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করার পর মিয়ানমারের সামরিক সরকারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হুমকি হয়ে উঠেছে ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স।

এক বিবৃতিতে বিদ্রোহীদের এই জোট বলেছে, পুরো কোকাং (লাউক্কাই) অঞ্চল এমন একটি ভূমিতে পরিণত হয়েছে; যেখানে আর মিয়ানমারের সামরিক কাউন্সিলের উপস্থিতি নেই।

শনিবার মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পপুলার নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জান্তা সরকারের মুখপাত্র জ্য মিন তুন বলেছেন, লাউক্কাইয়ে সামরিক বাহিনী মহান স্বার্থ বিবেচনায় আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মাঝে সশস্ত্র সংঘাত ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্রোহীদের সাথে জান্তাবাহিনীর সংঘাতের অবসানে প্রতিবেশী চীন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে। গত মাসে চীনের মধ্যস্থতায় জান্তাবাহিনীর সাথে বিদ্রোহীদের বৈঠক হলেও তাতে সংঘাতের অবসানে কোনও পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

গত ডিসেম্বরের মাঝের দিকে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন প্রদেশের বেশিরভাগ শহরের দখল নেয় বিদ্রোহীরা। ওই সময় আরাকান আর্মি (এএ) জানায়, তারা রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরের মধ্যে অন্তত ১৫টি এবং প্রতিবেশী চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরের দখল সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করেছে। এই দুই রাজ্যে সেনাবাহিনীর ১৪২টি সামরিক চৌকির দখলও নিয়েছে তারা।

দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির রাজনৈতিক দল এনএলডি নির্বাচনে জয়ের পর ক্ষমতায় তাদের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর ঠিক আগে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। তারপর থেকেই দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাত শুরু হয়েছে দেশটির বেসামরিক জনগণ ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর। সম্প্রতি দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জোট গড়ে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার করেছে।

দেশটির কয়েকটি ফ্রন্টে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের হামলায় লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বিদ্রোহীদের কাছে নিজেদের ঘাঁটি ও নিরাপত্তা চৌকির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা বাহিনী।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট নামের একটি জোট গঠন করে গত অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের জান্তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে হামলা শুরু করে। দেশটির উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলীয় চীন সীমান্ত লাগোয়া একাধিক শহর ও সামরিক নিরাপত্তা চৌকির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এই জোটের সদস্যরা।

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0