রমজান সমাগত। আসন্ন রমজানকে ঘিরে সরকারের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। একদিকে যেমন বাজারে সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা চলছে তেমনই চলছে বাজারে পণ্যের সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা। পাশাপাশি নতুন করে অন্যরূপে শুরু হয়েছে অগ্নিসন্ত্রাস। এই রকম পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য আসন্ন রমজান হয়ে উঠেছে চ্যালেঞ্জিং।
১১ জানুয়ারি টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে। আর এই সরকার গঠনের পরপরই বিএনপি-জামায়াত সহ বিরোধী দলগুলো মনে করেছিল যে, পশ্চিমা দেশগুলো হয়ত নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না। নতুন সরকার সঙ্কটে পড়বে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ প্রায় সব পশ্চিমা দেশ নতুন সরকারকে দ্রুততার সঙ্গে স্বীকৃতি দিল এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিল। এর পরপরই বিরোধী দলের আন্দোলন চুপসে গেছে। তারা হতাশার সাগরে নিমজ্জিত। কিন্তু এই অবস্থা থেকেও বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো এখন সরকারকে চাপে ফেলার জন্য নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আর এই নতুন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বাজারকে অস্থিতিশীল করার একটি নীল নকশা তৈরি হয়েছে বলেও একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
গোয়েন্দা অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বাজারে রমজান মাসে প্রয়োজন হয় এমন কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অযাচিতভাবে বাড়ানোর একটি চেষ্টা চলছে। আর এই চেষ্টার পিছনে রয়েছে বিএনপি-জামায়াত সহ কিছু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। বাজারে যে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আছে তাদের একটি বড় অংশই বিএনপি-জামায়াতপন্থি। বিশেষ করে খাতুনগঞ্জ কেন্দ্রিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বিএনপির নিয়ন্ত্রিত এবং এখান থেকেই সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য জিনিসপত্র যায়।
একাধিক মহল মনে করছে, এই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বিক্রেতাদেরকে কাজে লাগিয়ে বিএনপি এবং জামায়াত বাজারকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বিএনপির নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু, আমীর খসরু মাহমুদ সহ আরও বেশ কয়েকজন। তারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন পাইকারি বিক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করছে। বাজারে পণ্যের দাম সিন্ডিকেট করে বাড়িয়ে দেওয়া এবং পেঁয়াজ, ডাল বা ছোলা সহ রমজান মাসে ব্যবহার হয় এরকম পণ্যগুলোর সঙ্কট সৃষ্টি করার জন্য তারা চেষ্টা করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এস আলমের চিনির কারখানায় আগুনের ঘটনাটিকেও কেউ কেউ নাশকতামূলক হিসেবে দেখছে। চীনের বাজারকে অস্থিতিশীল করার জন্যই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছিল বলে অনেকের দাবি করছে। এর পেছনে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি থাকতে পারে বলেও কারও কারও ধারণা।
তবে বিষয়টি নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বোঝা যাবে আসলে প্রকৃত অবস্থা কি। দ্রব্যমূল্যের বাজারের অস্থিরতা তৈরি ছাড়াও জনজীবনে আতঙ্ক এবং অস্থিরতা সৃষ্টি জন্য নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। হঠাৎ করে দেশে ভিন্নরূপে আগুন সন্ত্রাস শুরু হয়েছে। বেইলি রোডের আগুনের পর একের পর এক বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। এই আগুনগুলো দুর্ঘটনাজনিত না এর পিছনে কোন রকম নাশকতা আছে তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন। এছাড়াও রোজার মাসে হোটেল ব্যবসায়ীদের রাস্তায় নামিয়ে এক ধরনের আন্দোলনের চেষ্টাও চলছে বলে একাধিক সূত্র মনে করছে।
রমজান মাস মুসলমানদের জন্য একটি স্পর্শকাতর মাস। আর এ রমজান মাসে দেশের পরিস্থিতিকে নাজুক করার জন্য বিএনপি-জামায়াত এখন তৎপরতা শুরু করেছে। সরকার এ ব্যাপারে যত দ্রুত সতর্ক থাকবে এবং পদক্ষেপ নিবে ততই তাদের মঙ্গল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সূত্র: বাংলা ইনসাইডার