ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ক্লডিন গে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
সম্প্রতি তাকে মার্কিন কংগ্রেসে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ বেড়ে যাওয়া নিয়ে এবং হার্ভার্ড ও এমআইটিতে পরিস্থিতির মোকাবিলা কী করে করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল।
ইহুদিবিদ্বেষ ও হার্ভার্ডের কোড অব কন্ডাক্ট নিয়ে রিপাবলিকান সদস্য এলিসে স্তেফানিকের প্রশ্নের জবাব ঠিকভাবে দিতে না পারার জন্য রক্ষণশীলরা তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।
গে জানিয়েছেন, ‘ভারী হৃদয় এবং হার্ভার্ডের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে আমি জানাতে চাই, আমি প্রেসিডন্টের পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি।’তার পিএইচডি থিসিস নিয়েও প্লেজারিজমের অভিযোগ উঠেছিল।
কেন বিতর্কের মুখে পড়লেন গে?
ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের পর ক্লডিন গে-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ইহুদিদের এইভাবে হত্যার ডাক দেওয়া কি হার্ভার্ড স্কুলের কোড অব কন্ডাক্টের বিরোধী কিনা। গে জবাব দিয়েছিলেন, ‘এটা পরিপ্রেক্ষিতের ওপর নির্ভর করে। তিনি বলেন, যখন স্পিচ বা বক্তব্য আচরণকে ছাড়িয়ে যায়, তখন তা আমাদের নীতি ভঙ্গ করে।’
তার এই জবাবে রক্ষণশীলরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন। হোয়াইট হাউস এই বক্তব্যের নিন্দা করে। হামাসকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশ জঙ্গি সংগঠন বলে মনে করে।
গে পরে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি পরে বলেছিলেন, কংগ্রেস সদস্যদের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের মধ্য়ে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন। গে জানিয়েছিলেন, ‘তখন আমার উপস্থিত বুদ্ধির জোরে বলা উচিত ছিল। ইহুদিদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ডাক দেওয়ার, ইহুদি ছাত্রদের হুমকি দেওয়ার কোনও জায়গা হার্ভার্ডে নেই।’
পদত্যাগপত্রে গে লিখেছেন, ‘ঘৃণার মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে, আমার দায়বদ্ধতার ওপর সন্দেহ করা হয়েছে, আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে, বর্ণবাদী আচরণের মুখে পড়তে হয়েছে।’
হার্ভার্ডের প্রতিক্রিয়া
হার্ভার্ডের গভর্নিং বোর্ড জানিয়েছে, প্লেজারিজমের যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা নিয়ে তারা দেখেছে, কিছু ক্ষেত্রে ঠিকভাবে উদ্ধৃতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু এটাকে গবেষণার ক্ষেত্রে অনিয়ম বলা যায় না।
তাদের মতে, গে ১৯৯৭ সালে এই গবেষণাপত্র লিখেছিলেন। এখন সেটিকে আপডেট ও সংশোধন করা উচিত। হার্ভার্ডের ৭০০ জন অধ্যাপক চিঠিতে সই করে গে-র প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন। কিন্তু হার্ভার্ড অ্যালামনি, ৭০ জন কংগ্রেস সদস্য গ্রে-র পদত্যাগ দাবি করে।
কল্পনা টুডু/বি