সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি একটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত। ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম দেওয়া হয়েছে অগ্নি-৫। সোমবার (১১ মার্চ) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর উৎক্ষেপণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সফলতার জন্য দেশটির প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন মোদী।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে জানা গেছে, অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রে এমন সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে যে কোনো সময় নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি দেশের কাছে এই মাল্টিপল ইন্ডিপেনডেন্টলি টার্গেটেবল রি-এন্ট্রি ভেহিকেল (এমআইআরভি) প্রযুক্তি আছে। এখন সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলো ভারতও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষার স্বার্থে এ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা হয়। চীনের একেবারে উত্তরের অংশ, ইউরোপের একাংশসহ প্রায় পুরো এশিয়া মহাদেশের যে কোনো টার্গেট গুঁড়িয়ে দিতে পারবে অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্র।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের তৈরি এ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ৫০ টন। পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম অগ্নি সিরিজের সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র এটি। এই ক্ষেপণাস্ত্র ৫০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পথ পাড়ি দিতে পারে। অন্যদিকে, অগ্নি-১ থেকে অগ্নি-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ছিল ৭০০ কিলোমিটার থেকে ৩৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে।
এদিকে, বঙ্গোপসাগরে নজরদারি জাহাজ প্রবেশ নিয়ে দেখা দিয়েছে চীন-ভারত উত্তেজনা পরিস্থিতি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ‘শিয়ান ইয়াং হং-১’ নামের একটি চীনা জাহাজ বিশাখাপত্তনম উপকূল থেকে ২৬০ নটিক্যাল মাইলের কম দূরত্বে দেখা গেছে। মনে করা হচ্ছে, ভারতের পূর্ব উপকূলে নজরদারি চালানোর জন্যই ওই জাহাজ পাঠাচ্ছে চীন। তবে এ বিষয়ে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
সম্প্রতি মালদ্বীপের মালে বন্দরে ‘শিয়ান ইয়াং হং-৩’ নামের আরেকটি চীনা নজরদারি জাহাজ নোঙর করেছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, চীনের বিশেষ সাবমেরিন অভিযানের আগে ‘সমীক্ষা’ চালাতেই এই জাহাজ পাঠানো হচ্ছে। তবে এপিজে আব্দুল কালাম দ্বীপে ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ও বিশাখাপত্তনমে নৌবাহিনীর ঘাঁটির কাছাকাছি চীনের নজরদারি জাহাজ চলাচল ভালোভাবে নিচ্ছে না ভারত।
মালদ্বীপের বন্দরে আশ্রয় নেওয়া ‘শিয়ান ইয়াং হং-৩’ জাহাজ সম্পর্কে চীনের দাবি ছিল, জানুয়ারি থেকে মে মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত এটি ভারত মহাসাগরে গভীর সমুদ্র সংক্রান্ত গবেষণার কাজে যুক্ত থাকবে। এর আগে শ্রীলঙ্কায় এমন জাহাজের উপস্থিতি নিয়েও তারা সমুদ্র গবেষণার কথা বলেছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক সামরিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন বলছে, শ্রীলঙ্কার বন্দরকে পোতাশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করে ভারতীয় নৌবাহিনীর গতিবিধি ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ওপর নজরদারির কাজ করে চীনের এসব জাহাজ।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া