যার নামের আগে কখনও শ্রী লাগেনি। খান তিনেক জামা, একটি ছেঁড়া রাবার চপ্পল। একটা অ-খিলানযুক্ত চশমা। ৭৩২ টাকার জমা মূলধনের মালিক। আজ পদ্মশ্রী ঘোষিত। তিনি হলেন পশ্চিম ওড়িশার বাসিন্দা হলধর নাগ।
যিনি কোসলি ভাষার বিখ্যাত কবি। বিশেষ কথা হলো- তিনি এ পর্যন্ত যতগুলো কবিতা ও ২০টি মহাকাব্য রচনা করেছেন, তার সবগুলোই তার জিহ্বার ডগায়। এবার তাঁর লেখা 'হলধর গ্রন্থাবলী-২'-এর একটি সংকলন সম্বলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিলেবাসের অংশ করা হবে।
সাদা পোশাক, সাদা ধুতি, গামছা ও গেঞ্জি পরিহিত হলধর নাগ খালি পায়েই থাকেন। উড়িশ্যার লোক-কবি হলধর নাগ একটি দরিদ্র পরিবারের মানুষ। ১০ বছর বয়সে বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর তৃতীয় শ্রেণিতেই পড়া ছেড়ে দেন তিনি। অনাথ জীবনে, তিনি বহু বছর ধাবায় বাসনপত্র পরিষ্কার করে কাটিয়েছেন।
পরে একটি স্কুলে রান্নাঘর দেখা শোনার কাজ পান তিনি। কয়েক বছর পরে ব্যাংক থেকে ১০০০ টাকা ঋণ নিয়ে পেন-পেনসিল ইত্যাদির একটি ছোট দোকান খোলেন সেই স্কুলের সামনেই। এটাই ছিল তার আর্থিক অবস্থা।
এবার আসা যাক তাঁর সাহিত্যের বিশেষত্বে। ১৯৯৫ সালের দিকে হলধর স্থানীয় ওড়িয়া ভাষায় ‘রাম-শবরী’ র মতো কিছু ধর্মীয় পর্বের উপর লেখালেখি শুরু করেন এবং মানুষকে সেগুলো আবৃত্তি করে শোনাতে শুরু করেন। আবেগে ভরপুর কবিতা লিখে মানুষের মধ্যে জোর করে উপস্থাপন করে তিনি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। কয়েক বছর আগে রাষ্ট্রপতি তাকে সাহিত্যের জন্য পদ্মশ্রী দেন।
শুধু তাই নয়, ৫ জন গবেষক এখন তার সাহিত্যে পি.এইচ.ডি করছেন। যেখানে হলধর নিজেই তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।
বিবিএন /২ এপ্রিল / এসডি