ইন্দোনেশিয়ায় তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ সুলাওয়াসির নিকটবর্তী তাগুলানদাং দ্বীপের রুয়াং আগ্নেয় পর্বত সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গত তিন দিনে মোট সাত বার অগ্নুৎপাত ঘটেছে, পাশাপাশি দেখা দিয়েছে সুনামির শঙ্কাও।
এই অবস্থায় ওই পর্বতের পাদদেশের গ্রামগুলো থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষকে সরানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ইতোমধ্যে চার স্তরের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সক্রিয় হয়েছে ওই আগ্নেয় পর্বত। তারপর বুধবার চারবার এবং মঙ্গলবার পাঁচবার অগ্নুৎপাত ঘটিয়েছে রুয়াং পর্বত।
অগ্নুৎপাত ও সুনামি সতর্কতার কারণে ওই তাগুলানদাংয়ের বিমান বন্দর ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অগ্নুৎপাতের লাভা রুয়াং পর্বতের আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয় উদ্ধারকারী বাহিনীর সদস্য ইকরা আল উলাহ এএফপিকে টেলিফোনে বলেছেন, ‘আগ্নুৎপাতের ছাইয়ে পুরো এলাকা ঢেকে গেছে। লোকজনকে আমরা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছি। লোকজন তাদের টাকাপয়সা ও মূল্যবান সামগ্রী সঙ্গে নিয়ে যাত্রার জন্য তৈরি হচ্ছে।
তাগুলানদাং দ্বীপের স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ইতোমধ্যে দ্বীপের ১১ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। তবে এখনও সেখানে রয়ে গেছেন অন্তত ২০ হাজার মানুষ।
এদিকে এই অগ্নুৎপাতের কারণে সুনামির আশঙ্কা দেখা দেওয়াই ইতোমধ্যে সতর্কবার্তা জারি করেছে দ্বীপ প্রশাসন। সেই বার্তায় বলা হেয়ছে, ‘যারা সমুদ্রতীরের আশেপাশে আছেন, তাদেরকে জরুরি ভিত্তিতে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। কারণ আগ্নুৎপাতের কারণে সৃষ্ট ভূমিকম্প এবং রুয়াংয়ের জ্বালামুখ থেকে উদ্গত গ্যাসে সৃষ্ট উষ্ণ মেঘের কারণে এই দ্বীপে সুনামির সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।
বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার ভৌগলিক অবস্থান প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘আগ্নেয় মেখলা’ (রিং অব ফায়ারের) অঞ্চলের ওপর। টেকটোনিক প্লেটের অসামঞ্জস্যতার কারণে এই অঞ্চলে ভূমিকম্প বেশ নিয়মিত দুর্যোগ। এছাড়া রুয়াং সহ কয়েকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরিও রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়।
এর আগে ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপের মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা আনাক ক্রাকাতোয়া পর্বতে অগ্নুৎপাতের ফলে সৃষ্ট সুনামিতে ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েচিলেন, আহত হয়েছিলেন আরও ১ হাজার।
সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড