আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, বুধবার, মে ১১০, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Farming with horses

নিয়ামতপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ

Bijoy Bangla

এস কে সরকার, নিয়ামতপুর, নওগাঁ

প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০৬:২৭ পিএম

নিয়ামতপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ
নিয়ামতপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ। ছবি: বিজয় বাংলা নিউজ

ঘোড়াটি সুন্দর আর তেজি হলেও ছিল বদমেজাজি।  চিন্তায় পড়ে গেলেন রাজা ফিলিপ। তাঁর চিন্তা দূর করলো  ছোট ছেলে আলেকজান্ডার। বশে আনলেন ঘোড়াটিকে। গড়ে তুললেন সখ্যতা  ঘোড়াটির নাম বুসিফেলাস। সেই থেকে বুসিফেলাস আলেকজান্ডারের সঙ্গী হয়ে গেলো। এই জুটি একত্রে অনেক যুদ্ধে অংশ নিয়েছে।

আর মেওয়ারের রাজা মহারাণা প্রতাপের ঘোড়া  চেতক যুদ্ধে  আহত হলেও প্রতাপকে যুদ্ধ থেকে নিরাপদে দূরে নিয়ে গিয়েছিলেন।

ইতিহাসের পাতায় রাজা-বাদশাদের সঙ্গী হিসেবে বিশেষ ভূমিকায় ছিল ঘোড়ারা। তবে সময়ের আবর্তে সেই দিন ফুরিয়েছে। যুদ্ধের ময়দান থেকে ঘোড়া এসেছে বাংলার মাঠে।  কৃষিকাজে বাড়ছে তাঁদের কদর।

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে দেখা মিলছে ঘোড়া দিয়ে চাষবাস। কৃষকেরা বলছেন, গরুর চাইতে ঘোড়ার দাম কম। গরুর মতই ঘোড়া দিয়ে  চাষ করা যায়।

গত কয়েকদিন আগে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করার দৃশ্য দেখা গেছে।

উপজেলার বরেন্দ্র বাজার মাঠে ঘোড়া দিয়ে  জমি চাষ করছিলেন ভারদন্ড গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, ১৪ হাজার টাকা দিয়ে ঘোড়াটি কিনেছেন। এক জোড়া ভালো  গরুর দাম পড়বে প্রায় ১ লাখ টাকার মত। আমার মত গরিব মানুষের অত টাকা দিয়ে গরু কেনা সম্ভব নয়। তাই দুইটা ঘোড়া কিনেছি।

একই গ্রামের কৃষক মইনুর রহমান। তিনিও ঘোড়া দিয়ে চাষ করেন। তিনি জানালেন, জামালপুর থেকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে দুইটি ঘোড়া কিনেছেন। গরুর মতই ঘোড়া দিয়ে চাষবাস করা যায়। কোনো অসুবিধা হয় না। আবার ঘোড়ার পিঠে চেপে চলাচল করা যায়।  তিনি জানালেন, এক বিঘা জমিতে মই দিতে ২০০-২৫০ টাকা নেন।

উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কৃষক  মামুন হোসেন বলেন, আমি ৫ বছর ধরে ঘোড়া দিয়ে চাষাবাদ করছি। আমি আমার এলাকা ছাড়াও সাবাইহাট, দেলুয়াবাড়ী, কেশরহাট, মোহনপুর, ছাতড়া মাঠে  চাষাবাদ করতে যাই।


নিয়ামতপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ। ছবি: বিজয় বাংলা নিউজ

শ্রীমন্তপুর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, অন্যদের দেখাদেখি আমিও একটা ঘোড়া কিনেছি। ভালোই চাষাবাদ করতে পারছে।

চাচড়াপাড়া গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, আমি কয়েক বছর ধরে এই ঘোড়া দিয়ে মই দিয়ে নিচ্ছি। গরুর হালের  মতই জমি সমান

হয়।  তিনি আরও জানালেন, এবার আমার ৮ বিঘা জমিতে ঘোড়া দিয়ে চাষ করিয়ে নিব।

নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, বর্তমানে কৃষিকাজ যান্ত্রিকীকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষকেরা এখন  আধুনিক কৃষি যন্ত্র ব্যবহার করে অল্প সময়ে বেশি  জমি চাষ করেন। বর্তমানে সনাতন পদ্ধতির কৃষিকাজ নেই বললেই চলে। তবে কেউ ঘোড়া দিয়ে চাষবাস করলে তার  নিজস্ব কারণে করতে পারে।  তবে আমরা কৃষকদের সবসময় কৃষিতে আধুনিক যন্ত্র

ব্যবহার  করার জন্য পরামর্শ  দিয়ে থাকে।

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0