আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, সোমবার, মে ২০, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

ronaldo

চব্বিশও রাঙাতে চান ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারী, ২০২৪, ১২:২৪ পিএম

চব্বিশও রাঙাতে চান ক্রিস্টিয়ানো  রোনাল্ডো

ঊনচল্লিশ ছুঁই ছুঁই বয়স। এ বয়সেও ফুটবল দুনিয়ায় নিজেকে আলাদাভাবে মেলে ধরছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরের জার্সিতেও গত বছরটাও ঠিক স্বপ্নের মতোই কাটিয়েছেন পর্তুগীজ সুপারস্টার। ২০২৩ সালে তার মোট গোল হয়েছে ৫৪টি। এই সময়ে এত গোল করতে পারেননি আর কোনো ফুটবলার। বিদায়ী বছরে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ডটাও সিআর সেভেনের!

অথচ, ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে না পারায় অনেকেই শেষ দেখে ফেলেছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর ক্যারিয়ার। বিশেষ করে বিশ্বকাপের পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর সেই রেশ বেড়ে যায় আরও। কিন্তু রোনাল্ডো বলেই হাল ছাড়েননি। সৌদি আরবের ফুটবলে যোগ দিতেই যেন যৌবন ফিরে পেলেন পর্তুগীজ সুপারস্টার। সৌদি প্রো লিগে আল-নাসরের হয়ে দারুণ একটা বছর কাটিয়েছেন। পাশাপাশি জাতীয় দলেও তাকে দেখা গেছে চেনা ছন্দে। গত বছরের ডিসেম্বরেই অনন্য এক নজির গড়েন তিনি।

যেখানে নেই এখনকার কোনো ফুটবলারের নাম। পেশাদার ফুটবলে ১২০০ ম্যাচ খেলারে মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। সেইসঙ্গে প্রবেশ করেছেন সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা ফুটবলারদের তালিকায় পাঁচ নম্বরে।

এরপর সৌদি প্রো লিগের অন্যতম সেরা ক্লাব আল নাসরের হয়ে বছরের শেষ ম্যাচেও গোল করেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। আল তাউনের বিপক্ষে আল নাসরের ৪-১ ব্যবধানের বড় জয়ের ম্যাচে যোগ করা সময়ে দলের শেষ গোলটি করেন পর্তুগালের এই তারকা উইঙ্গার। তাতেই তার গোলসংখ্যা দাঁড়ায় ৫৪টি। অথচ, এই সময়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর সাবেক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সব ফুটবলার মিলে করেন মাত্র ৫২ গোল! বিদায়ী বছরে তার পরে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় রয়েছেন হ্যারি কেন এবং কিলিয়ান এমবাপে। উভয়েরই গোল সমান ৫২টি।

৫০ গোল করে তাদের পরে রয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড আর্লিং হালান্ড। পারফর্মেন্সের এই ধারাবাহিকতা নতুন বছরেও ধরে রাখতে চান ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। এ প্রসঙ্গে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো বলেন, ‘আমি খুব আনন্দিত। ব্যক্তিগত আর দলীয়ভাবে আমার জন্য ভালো একটি বছর ছিল এটা। আমি অনেক গোল করেছি। আল নাসর ও জাতীয় দলের জন্য অনেক অবদান রেখেছি। আমার কাছে ভালো লাগছে এবং আগামী বছরও এটা করতে চাইব আমি।’

২০০৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদে নতুন করে ঠিকানা গড়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। এর পরের গল্পটা তো সবারই জানা। তবে ২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে জুভেন্টাসে যোগ দেন তিনি। ইতালিয়ান সিরি’এ লিগের সময়টা ভালো না কাটায় ২০২১ সালে নিজেরই সাবেক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফেরেন তিনি। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপ শেষেই বড় চমক দেখিয়ে ইউরোপের ফুটবলকে বিদায় বলে সৌদি আরবের ক্লাব আল-নাসরে নতুন করে ঠিকানা গড়েন রোনাল্ডো। এরপরে বিশ্বকাপজয়ী মেসিকেও ইউরোপ ছাড়তে দেখা যায়।

তিনি পাড়ি জমান মার্কিন মুলুকে। আর এই দুই মহাতারকার কারণে অখ্যাত ইন্টার মিয়ামি ও আল-নাসর রাতারাতি খ্যাতির তকমা পেয়ে যায়। দুই ক্লাবের প্রতিই ভক্তদের আগ্রহ বেড়ে যায় মুহূর্তের মধ্যে। আর সময়ের সেরা দুই ফুটবলারের যোগদানের পর গুগলে সার্চ করা সেরা ১০ ক্লাবের মধ্যে আট ও নয় নম্বরে জায়গা করে নেয় মেসি ও রোনাল্ডোর ক্লাব। আর্জেন্টাইন তারকার ক্লাব ইন্টার মিয়ামিকে মাসে প্রায় ২ কোটিবার খোঁজা হয়েছে। আর পর্তুগীজ তারকা রোনাল্ডোর ক্লাব আল-নাসরকে খোঁজা হয়েছে মাসে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ বার।

গুগল সার্চের জন্য শীর্ষে রয়েছে রোনাল্ডোরই সাবেক ক্লাব স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। লস ব্ল্যাঙ্কোসদের খোঁজা হয়েছে মাসে গড়ে ৪ কোটি ৪৫ লাখ বার। তালিকার দুইয়ে রয়েছে গ্যালাতাসারাই। ক্লাবটিকে খোঁজা হয়েছে মাসে গড়ে ৩ কোটি ২৪ লাখ বার। এরপরে রয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি (মাসে গড়ে ২ কোটি ৯৩ লাখ), পিএসজি (মাসে গড়ে ২ কোটি ৭৮ লাখ), আর্সেনাল (মাসে গড়ে ২ কোটি ৪৭ লাখ), পালমেইরাস (মাসে গড়ে ২ কোটি ৩৩ লাখ)। দশে রয়েছে চেলসি। ক্লাবটিকে খোঁজা হয়েছে মাসে গড়ে ১ কোটি ৬৪ লাখ বার।

এদিকে, দুর্দান্ত এক বছরের শেষ দিনে নিজের দেশ পর্তুগালে ছুটে গিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। কারণটা অবশ্য সিআর সেভেন ভক্ত প্রায় সকলেরই জানা। ৩১ ডিসেম্বরই যে তার মা দোলোরেস অ্যাভেইরোর জন্মদিন। ম্যাচের ব্যস্ততা না থাকলে তাই এই দিনটা পর্তুগালে গিয়ে মায়ের সঙ্গেই কাটান সিআর সেভেন। তাউনের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলেই সৌদি আরব থেকে পর্তুগালের মাদেইরাতে চলে যান রোনাল্ডো।

শুধু নিজেই যাননি, মায়ের জন্য একটা উপহারও হাজির করেন পর্তুগালের এই মহাতারকা। মায়ের ৬৯তম জন্মদিনে তাঁকে একটি পোরশে গাড়িও উপহার দিয়েছেন। এরপর মায়ের জন্মদিন ও নতুন বছর উদ্যাপনে আয়োজন করেছেন পার্টিও। মাকে রোনাল্ডোর গাড়ি উপহারের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে দেখা যায় নাতি রোনাল্ডো জুনিয়রের সঙ্গে গ্যারেজে ঢুকে গাড়ির কাছে যান দোলোরেস। একপর্যায়ে নাতিকে তিনি জড়িয়ে ধরেন। 

এ সময় তার চোখ ছলছল করছিল। পরে গিয়ে গাড়ির চালকের আসনে বসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, সেজেগুজে পার্টি প্রাঙ্গণে ঢুকছেন দোলোরেস। এ সময় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রোনাল্ডো তার মায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘কেঁদো না, তোমার মেকআপ নষ্ট হয়ে যাবে।’দোলোরেসের আনন্দময় এসব মুহূর্ত নিয়ে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেছেন কাতিয়া অ্যাভেইরো। কাতিয়া রোনাল্ডোর দুই বোনের ছোট। তিনি মায়ের জন্মদিন উদ্যাপন নিয়ে লিখেছেন, ‘তিনি যদি খুশি হয়ে থাকেন, সেটা এ কারণে নয় যে উপহারটা দামি ছিল; বরং এ কারণে যে ছেলে তাকে মনে  রেখেছে। আপনার মা-বাবাকে সম্মান করুন, আপনার দিনগুলো কল্যাণময় হবে।’


কল্পনা টুডু/বি

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0