আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, সোমবার, মে ২০, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

T20

হারে দিয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক:

প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ০১:০৪ পিএম

হারে দিয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের
....সংগৃহীত ছবি

সেই পুরোনো রোগটাই যেন নতুন করে আবার দেখা গেল লাক্কাতুরায়। ম্যাচ শুরুর আগে আত্মবিশ্বাসের বুলি। আর মাঠে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার প্রতিযোগিতা। কখনো কখনো সেটি ক্যাচ ফেলে দেওয়ার প্রতিযোগিতাও। গতকাল রবিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে এভাবেই হেরেছে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটিতে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা হেরেছেন ৪৪ রানে। 

অথচ মাঠে নামার আগে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেছিলেন, ‘চেষ্টা থাকবে যেন ভালোভাবে শুরু করতে পারি।’ কিন্তু সেই ভালোভাবে শুরুটা আর হলো কোথায়! একের পর এক ক্যাচ মিস ও উইকেটে এসে থিতু হতে না পারায় হারের মাধ্যমে মাশুল দিতে হয়েছে টাইগ্রেসদের। টপ, মিডল ও লোয়ার অর্ডারের অধিকাংশ ব্যাটার দলের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলতে পারেননি।

প্রথম ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ দল যখন অনুশীলন করেছিল তখনই ক্যাচ মিসের বিষয়টি নজর কাড়ে। ক্যাচ হাতে নিতে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন টাইগ্রেসরা। ম্যাচের মধ্যেও সেটি একাধিকবার দেখা গেছে। প্রথম পাওয়ার প্লের মধ্যেই দুটি সহজ ক্যাচ ফেলে দেন ফারিহা তৃষ্ণা ও সুলতানা খাতুন। যদিও জীবন পেয়ে স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি ভার্মা ইনিংসটাকে লম্বা করতে পারেননি। তবে প্রথম সুযোগেই তালুবন্দি করতে পারলে প্রেক্ষাপট ভিন্নও হতে পারত। কিন্তু বাংলাদেশ সেগুলো কাজে লাগাতে পারেনি।

এই ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। দলের পক্ষে কেউ বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও ছোট ছোট অবদানে রান গিয়ে দাঁড়ায় ১৪৫ এ। ২২ বলে ৩১ রান করেন ওপেনার শেফালি, ২৯ বলে ৩৬ করেন যস্তিকা ভাটিয়া, ২২ বলে ৩০ রান করেন অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর ও ১৭ বলে ২৩ রান করেন রিকা ঘোষ। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন রাবেয়া খান। 

১৪৬ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে বাউন্ডারি দিয়ে রানের খাতা খোলেন ওপেনার দিলারা আক্তার। আভাস দেন ভালো কিছুর। তবে এরপরে আর কোনো রান যোগ না করেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। তার পথ অনুসরণ করেন সোবহানা মোস্তারি, মুর্শিদা খাতুন, ফাহিমা খাতুনরা। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন নিগার সুলতানা জ্যোতি। দুই দল মিলিয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস খেললেও বাংলাদেশের অধিনায়ককে কেউ যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। ৪৮ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় গড়া ৫১ রানের জ্যোতির জ্যোতির্ময় ইনিংস কেবল স্বস্তি হয়েই এসেছে। 

সিলেটের উইকেটে যে রান তোলা সম্ভব সেটি তিনি চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন। যেমনটি বলেছিলেন মাঠে নামার আগে, ‘সিলেটের উইকেট বরাবরই খুব ভালো। স্পোর্টিং উইকেট। বড় স্কোর হয়। আর টি-টোয়েন্টিতে সবাই চায় যেন স্কোর হোক। এই দিক থেকে সিলেট একটি আদর্শ জায়গা টি-টোয়েন্টি খেলার জন্য।’ দলের নেতা সেই কথার প্রতিদানও দিয়েছেন ব্যাট হাতে। এ দিকে বাংলাদেশের ইনিংস ধসানোর পেছনে মূল দায়িত্ব পালন করেন রেনুকা সিং ও পূজা বস্ত্রকার। দুজনে মিলে নেন ৫টি উইকেট। এর মধ্যে ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন রেনুকা।

প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ হয়ে রেনুকা বলেছেন, ‘অনেকদিন পর ৩ উইকেট নিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। স্ট্যাম্প টু স্ট্যাম্প বল করার চেষ্টা করেছি। আর দ্বিতীয় ইনিংসে বল করা কিছুটা সহজ ছিল, সেই সুযোগটিই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। আমরা এসেছি কন্ডিশন বোঝার জন্য। এখানেই টুর্নামেন্টটি হবে। কীভাবে বোলিং ও ব্যাটিং করতে হবে, কীভাবে দলকে জেতাতে হবে, সেই প্রস্তুতিই নিয়ে রাখছি।’ বাংলাদেশের অলরাউন্ডার রাবেয়া নিয়েছেন ৩ উইকেট। তবে দল না জেতায় সেটি যেন ঢাকা পড়ে গেছে পর্দার আড়ালে। ৩ উইকেট পাওয়া নিয়ে এই লেগব্রেক বোলার বলেছেন, ‘ভালো লেগেছে। কিন্তু অনেক গরম। উইকেটটা খুব ভালো। ৩ উইকেট পেয়ে ভালো লাগছে, আরো ২টি পেলে আরো ভালো লাগত।’

হার নিয়ে নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেছেন, ‘পাওয়ার প্লেতে যেভাবে ব্যাটিং দরকার ছিল, সেটি আমরা করতে পারিনি। যখন ১৪০ রানের বেশি তুলতে হবে তখন পাওয়ার প্লেতে রান করাটা জরুরি। আর  সেখানে আমাদের টপ অর্ডাররা রান তুলতে পারেননি। আমাদের বোলাররা শেষ দিকে খুব ভালো করেছে। আমরা চেষ্টা করব পরের ম্যাচেও সেটি ধরে রাখতে। আমি জানি আমাদের খুব ভালো ব্যাটিং ইউনিট রয়েছে। কিন্তু তারা নিজেদের প্রমাণ করতে পারেননি। আমাদের আরো আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। আশা করছি, পরের ম্যাচে ইতিবাচকভাবে আমরা খেলতে পারব।’ 

জয় দিয়ে শুরু করার পরে হারমানপ্রীত বলেছেন, ‘আমাদের বোলাররা আজ দুর্দান্ত খেলেছেন। যখন প্রতিপক্ষ রান করছিল তখন আমাদের বোলাররা দায়িত্ব নিয়ে সেটি থামিয়েছে এবং জয় তুলে নিয়েছে। ব্যাটিংয়েও সকলে ভালো করেছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলেছি আমরা। ম্যাচ শুরু হওয়ার তিন দিন আগে থেকেই আমরা সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেছি। কীভাবে শট খেলতে হবে এবং উইকেট কেমন হতে পারে, সেটি নিয়ে কাজ করেছি। আর সেটি আমাদের খুব সহায়তা করেছে। যখন আমরা বল করেছি তখন প্রতিপক্ষের ওপরে চাপ তৈরি করার সুযোগ খুঁজেছি এবং যখনই পেয়েছি সেগুলো কাজে লাগিয়েছি।’ সিরিজের পরের ম্যাচটি আগামীকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় মাঠে গড়াবে।


google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0