নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে মারধর করে প্রবেশপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় করা মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার কমলপুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. সামিউল (১৬)। সে উপজেলার কমলপুর গ্রামের সাইফুল মিয়ার ছেলে। সামিউল মোহনগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।
গ্রেফতাররা হলেন উপজেলার কমলপুর গ্রামের শান্ত মিয়ার ছেলে অনু মিয়া (৩০), সুজন মিয়া (২৫) ও অনু মিয়ার চাচাতো ভাই রাজু মিয়া (২২)।
মামলার পাশাপাশি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও (ইউএনও) জানিয়েছে শিক্ষার্থী সামিউল। পরে ওসি ও ইউএনওর উদ্যোগে তার পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
মামলা, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মোহনগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বের হয় সামিউল। সোয়া ১টার দিকে মায়ের সঙ্গে বাড়ির দিকে রওয়ানা হয়। পথে টেংগাপাড়া এলাকায় কলেজ রোডে সামিউলের ওপর ছুরি নিয়ে হামলা চালান অনু মিয়া ও তার চাচাতো ভাই রাজু। মারধরের একপর্যায়ে প্রবেশপত্র কেড়ে নেন তারা। ওইসময় তাদের হাত থেকে ছুটে পরীক্ষা কেন্দ্রর মাঠে গিয়ে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার শুরু করে সামিউল। সেসময় ছেলের পেছন পেছন দৌড়ে মাঠে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যান তার মা।
এসময় কেন্দ্রে থাকা পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি সামাল দেন। পরে বিকেলে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করে সামিউল। এতে অনু মিয়া ও রাজুকে হামলার ঘটনায় আসামি করা হয়। এছাড়া সুজন মিয়াকে হামলার ঘটনায় হুকুমদাতা হিসেবে আসামি করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, গত ডিসেম্বরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিক্ষের বল্লমের আঘাতে নিহত হন অনু মিয়ার বড় ভাই সনু মিয়া। এ ঘটনায় প্রতিবেশী স্কুলছাত্র সামিউল, তার বাবা সাইফুল মিয়া, চাচা তরিকুল ও শফিকুলসহ তাদের পরিবারের আটজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় সামিউলের বাবা সাইফুল ও চাচা তরিকুল বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। সামিউলের বল্লমের আঘাতেই সনু মিয়ার মৃত্যু হয় বলে হামলাকারীদের ধারণা। এনিয়ে তারা সামিউলের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলেন।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, গ্রেফতার তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ওই ছাত্রের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজা জেসমিন বলেন, মারধর ও প্রবেশপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে। ওই ছাত্রের পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে কেন্দ্র সচিবকে বলা হয়েছে। এখন নিয়মিত পরীক্ষা দিচ্ছে সামিউল।