আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, সোমবার, মে ২০, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

May Day spirit

মে দিবসের চেতনা ও দেশের অগ্রগতি

Bijoy Bangla

ওয়ালিউর রহমান বাবু

প্রকাশিত: ০২ মে, ২০২৪, ০৩:২৪ এএম

মে দিবসের চেতনা ও দেশের অগ্রগতি
প্রতিকী ছবি

ইউরোপিয়ন দাসাহসিক নাবিক কলম্বাস তার সমূদ্র অভিযানে আবিষ্কার করেন একটি বিশাল ভূখণ্ডের । তার ধারনা এটি ভারতীয় ভূখণ্ডেরই একটি অংশ তাই তিনি এর নাম দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ । তার এ অভিযানের পর এ ভুখন্ড নয়ির্ েনানা কৌতুহলের সৃষ্টি হয় । এর পর ইউরোপিয়ান আরকে দুঃসাহসিক নাবিক অ্যামেরিগো ভেসপুচি এখানে আসেন। তার মতে এই বিশাল ভূখন্ডটি ভারতীয় ভূখণ্ডের অংশ নয় এটি সম্পূর্ণ পৃথক ভূখন্ড । অবশ্য এনিয়ে ঐতিহাসিকদের নানা মত রয়ছে।ে

এই ভূখণ্ডে আসতে থাকে ব্রিটিশ, স্পেন, পর্তুগজি সহ বহু দেশের মানুষ । কালক্রমে ভূখন্ডটির উপর কর্তৃত্ব করতে থাকে ব্রিটিশ । ইউরোপিয়ান নাবিক অ্যামেরিগো ভেসপুচির নাম অনুসারে ভূখন্ডটির নামকরণ করা হয় আমেরিকা । এখানে কাজ করানোর জন্য নানা দেশ থেকে নিয়ে আসা হয় লোকজন । তারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে থাকলে এক সময় হয়ে গেল দাস । মালিক পক্ষ তাদের ইচ্ছামত ব্যবহার করতে থাকে । স্বাধীনতা বলে এদের কিছুই ছিল না । ১৮৭৬ সালে আমেেমরিকা ভুখন্ডটির উপর থেকে ব্রিটিশ কর্তৃত্বের অবসান হল। শ্রমিক শ্রণেী তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে থাকে। ক্রমে তারা আন্দোলনের দিকে এগুতে থাকে । সেই পথ ধরে আমেরিকার শিকাগো শহরে আট ঘন্টা কাজের দাবীতে শ্রমিকরা আন্দোলন করে দাবী আদায় করে নয়ে।এজন্য বহু শ্রমিক কে দিতে হয়েছে জীবন দিতে হয়েছে রক্ত ভোগ করতে হয়েছে নির্যাতন । ১৯৭১ সালের  মে দবিস ছিল আমাদরে মুক্তিযুদ্ধকে এগয়িে নতিে শ্রমকি শ্রণেীর শপথ নবোর দনি। শ্রমকি শ্রণেীর আশা ছলি স্বাধীনতার পরতাদরে  অধিকার প্রতিষ্ঠা হবেকন্তিু তা হয়নি ।পহেলা মের সেদিনের ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতি শ্রদ্ধা একাত্মতা ঘোষনা করে এ তারিখে পালিত হয় শ্রমিক সংহতি দিবস। শ্রমিক কাকে বলে ? এক কথায় বলা যায় মজুরীর বিনিময়ে যারা শ্রম দেয় তারা শ্রমিক কিন্তু সমাজ বিজ্ঞানী ও রাজনীতির ব্যাখায় শ্রমিক অর্থ একটু ভিন্ন।

একটি দেশের উন্নয়নরে অগ্রগতিতে শ্রমিক শ্রেণীর অবদান থাকে সবার আগে কিন্তু শ্রমিক শ্রণেী সব সময় অবহেলিত বঞ্চিত । এত বছর পরেও প্রশ্ন উঠে শিকাগো শহরে সেদিনের শ্রমিক আন্দোলনে কোন পক্ষ নেতৃত্ব দিয়েছিল । শ্রমিক আন্দোলন লাল ঝাণ্ডা মানেই বাম পন্থী কিংবা কমউিনিষ্ঠ এ ধারনা করা হয় । কিন্তু সে যাই হোক যারাই নেতৃত্ব দিক শিকাগো শহরের ঐতিহাসিক আন্দোলন আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ।

শ্রমিক আন্দোলনে বামপন্থীদের বিশেষ ভূমিকা থাকে বলেই এ আন্দোলনকে কমউিনিষ্ঠদরে আন্দোলন মনে করা হয়ে থাকে । অবশ্য এ চিন্তা ভাবনার পরিবর্তন এসেছে। মধ্যপন্থী কিংবা ডানপন্থী পরিচয় বহন কারীরাও শ্রমিক আন্দোলন শ্রমিক স্বার্থ নিয়ে কথা বলছেন চিন্তাভাবনা করছেন । তাদের শ্রমিক সংগঠনও আছে । পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থসমূহেও শ্রমিক অধিকার নিয়ে মূল্যবান ব্যাখ্যা থাকলেও কার্যত তা পালন করা হয় না । পহেলা মে শিকাগো শহরের শ্রমিক আন্দোলনের মধ্য দিয়েই দুনিয়ার মজদুর এক হও স্লোগানটি এসেছে । সারা বিশ্বের শ্রমিকরা এ স্লোগানটিকে তাদরে প্রধান স্লোগান হিসাবে গ্রহণ করে থাকে । তবে আমাদের দেশের শ্রমিক শ্রেণীর চেতনা, দৃষ্টি ভঙ্গি আলাদা। সামাজিক পারিপার্শ্বিক মানসিকতা রাজনৈতিক অবজ্ঞা অজ্ঞতা অর্থনৈতিক অভাবও এর কিছুটা কারণ ।

আমাদের এই উপমহাদেশের শ্রমিক সংগঠনগুলি রাজনৈতিক দলের প্রভাবে পরিচালিত হয় ফলে সেই চিন্তা ভাবনার বাইরে শ্রমিক সংগঠনগুলি নিজেরা কিছু করতে পারে না । শ্রমিক বাঁচলে কল কারখানা বাঁচবে উৎপাদন বাড়বে দেশের অগ্রগতি হবে। আবার শ্রমিক যদি না বাঁচে শ্রমিক যদি বঞ্চিত হয় অধিকার না পায় তাহলে কল কারখানা সঠিকভাবে চলবে না উৎপাদন বাধা গ্রস্ত হবে। দেশের অগ্রগতি একটি আরেকটির সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে নির্ভরশীল তাই দুটি বিষয়কেই প্রাধান্য দিতে হবে ।

শিকাগো শহরের সেদিনের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের চেতনা থেকে এ দেশের শ্রমিক শ্রেণীকে এদেশের অবস্থার মধ্যে নিজেদের অধিকার চেতনা নিয়ে ভাবতে হবে । নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ভাবনার পাশাপাশি দেশের সামাজিক অগ্রগতি নিয়েও তাদরে ভাবতে হবে।

লেখক: মুক্তি যুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক, সাংস্কৃতিক কর্মী, রাজশাহী ।

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0