আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

I want Bengali language state

বাংলা ভাষার রাষ্ট্র চাই

Bijoy Bangla

ওয়ালিউর রহমান বাবু

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারী, ২০২৪, ০১:১৯ এএম

বাংলা ভাষার রাষ্ট্র চাই

ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রগতিশীল আন্দোলনের নেতা জননেতা আডভোকেট মহসিন পরমানিক ভারতের পশ্চিম বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার ভগবান গোলায় জন্ম গ্রহণ করেন। সেখানে তার বেড়ে উঠা মেট্রিকুলেশনে উত্তির্ণ হয়ে পরিবারের সাথে রাজশাহী জেলা সদরে চলে আসেন। রাজশাহী কলেজে ভর্তি হন সাল টা ১৯৫১ সবার প্রিয়জন হয়ে গেলেন। সহপাঠী বন্ধুরা ছিলেন নানা গুনের অধিকারী প্রগতিশীল ছাত্রনেতা আতাউর রহমান (বঙ্গবন্ধু বাক সাল সরকারের রাজশাহী জেলা গর্ভানর) এর সাথে হৃদতা থেকে তার ছাত্র রাজনীতির প্রবেশ এর পর ১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাতে রাজশাহী সরকারী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসে ভাষা শহিদদের স্বরণে দেশের যে প্রথম শহিদ মিনার (স্মৃতিস্তম্ব) তৈরি করা হয় এতে তার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধে যাবার সময় তিনি এ শহিদ মিনারের ছবিটি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে তা সংরক্ষণ করে রাখেন। বেদনার কথা এই সব নিবেদিত ব্যক্তিত্বদের আমরা যথাযথ মর্যাদা দিতে পারিনা। ১৯৯১ সালে ১১ জানুয়ারী তিনি পরপারে চলে যান তার মৃত্যু বার্ষিকী তে তার স্মৃতি চারনটি পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হল- “১৯৫১ সালে ভারত থেকে এসে রাজশাহী কলেজ ভর্তি হলাম তখন ভাষা আন্দোলনে রাজনৈতিক অবস্থা থমথমে। ১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকার খবর পেয়ে রাজশাহী কলেজ মুসলিম হোস্টেলে স্মৃতিস্তম্ভ (শহিদ মিনার) তৈরীর সিদ্ধান্তে সারারাত ইট কাঁদা দিয়ে সেটি তৈরী করে, সকালে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর পিকেটিং এ বেরুলে পুলিশ এটি ভেঙ্গে দেয়। মালোপাড়া মৎস্য অফিসে গেলে কথা কাটাকাটি হবার পর তাদের অফিস ত্যাগ করলাম। ভূবনমোহন পার্কে থাকা পুলিশ কলেজে মিটিং করতে বললো। ২১ ফেব্রুয়ারি অনেকেই গ্রেফতার হয়েছেন এমন কথা শুনলাম, তখনো আমি গ্রেফতার হইনি। কলেজ টেনিস লনে বক্তব্য দিলাম। বাড়িতে না থাকার নির্দেশ পেলাম। ২৩ ফেব্রুয়ারি আমাকে গ্রেফতার করতে বাড়ি ঘেরাও করা হয়। কলেজ হোসটেলের সামনে ভাষা সৌনিক মমতাজ উদ্দিনের আত্মীয়র বাড়ি থেকে আমরা সন্ধ্যায় মিছিল করি। এটা আমার জীবনের প্রথম মশাল মিছিল। ১৯৫৩ সালে ভাষা আন্দোলন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবিতে হরতাল সর্মথন করায় একদিন ভোর চারটায় পুলিশ আমাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গেলে সঙ্গী পেলাম ভাষা সৌনিক ছাত্র নেতা গোলাম আরিফটিপু, আনসার আলী, আফসার আলী, সামসুদ্দিন আহমেদ, মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ওয়াজেদ আলী, গাজী মুমিন, আবু সাইদ, আব্দুল মান্নান, আব্দুর রহমান, ওবায়দুর হক দুলু, আব্দুর রহিম, সিরাজুল ইসলাম চাঁদ, মেডিকেল স্কুলের মেসবাহুল হক বাচ্চু এস এম এ গাফফার, কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমুখকে। এদের নিয়ে মন্ত্রী সভা গঠন করে আমি খাদ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব নিলাম। আমার ও এস এম এ গাফফারের বাড়ি থেকে বেশি খাবার পাঠানো হতো। এ এস এম এ গাফফারের বোন কুলসুম ও হাসিনার মাধ্যমে বিভিন্ন খবর পেতাম। গোয়েন্দারা গোলাম আরিফ টিপুকে চাপ দিয়ে নত করতে পারেনি। তার ইংরেজী কথা বার্তায় গোয়েন্দাদের শরীর থেকে ঘাম ঝড়ে। আমাকে ওরা লোভ দেখিয়ে রাজি করাতে পারেনি রাজশাহী জেলখানার বকুল তলায় (টিপু সালতান) নাটোক দেখার সময় আবুল কাসেম চৌধুরীর সাথে পরিচয়। সকাল ৭টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত সব কিছু করতে হতো। সাংসৃতিক দায়িত্ব ছিল মমতাজ উদ্দিনের উপর। ভাষার দাবিতে প্রথম রক্ত ঝরে রাজশাহী জেলা সদরে। আমরা ২১ এর দিবাগত রাতে দেশের প্রথম শহিদ মিনার তৈরি করি ১৯৫৫-৫৬ সালে ২১ ফেব্রুয়ারী পালন করার জন্য নির্যাতিত হয় কাজী জাফোর আহম্মেদ, আনোয়ার প্রমুখ চরম নির্যাতিত হন। আমাদের স্লোগান ছিল ‘বাংলা ভাষার রাষ্ট্র চাই।’ ১৯৭১ সালে সেই স্লোগান বাস্তবে রূপ নেয়।” তথ্য সুত্রঃ শিক্ষাবিদ, গবেষক ডঃ তসিকুল ইসলাস রাজা।  ভাষা সৌনিক আডভোকেট মহসিন প্রামানিক এর ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষাবিদ কবি লেখক রুহুল আমিন প্রামাণিক। গ্রন্থনায়-সমাজ ও সাংস্কৃতিক কর্মী।


google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0